ঝাড়ফুঁক
' তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
এর কোন প্রয়োগ, সাফল্য (ব্যতিক্রম ভুতে ধরা র ঘটনা টা) আমি দেখিনি। সব ই লোকের মুখে মুখে, আমি ভেবেছি যদি গুনে ঝাড় ফুঁকে চোর, অপরাধী ধরা যায় তা হলে এতো খরচ করে থানা পুলিশ দরকার কি? আর সত্যি যদি গণনায় সব বলে দেওয়া যায় তাহলে এতো কেস সমাধান না হয়ে আছে কেনো?।যাই হোক ব্যাপারটা আমার ব্যক্তিগত চিন্তা , কারো বিশ্বাস অবিশ্বাসের বিতর্কে যাচ্ছিনা। এই প্রসঙ্গে আমার কোনো মতামত ও নেই । আমি নিছক একটা ঘটনার উল্লেখ কোরছি যাতে এই বিষয়ের সত্যতা কি অ সত্যতা স্পষ্ট ভাবে প্রমানিত হয় না।আমি তখন মেদিনীপুর জেলার দীঘার কাছে কাঁথি মহকুমার ,রামনগর থানার রামনগরে ই থাকি। আমি ,আমার স্ত্রী,৬বছরের ছেলে, ১বছরের মেয়ে ১৯ ৮৩ সাল।রামনগরে বাজারের কাছেই একটি দোতালা বাড়ির উপর তলায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকি।আমার বাড়িতে একটি স্থানীয় বৌ ঘরের কাজ,বাসনমাজা, ঘরমোছা ,কাপড় কাচা এই সব কাজ করে ভীষন ভালো বিশ্বাসী। আমার বাড়ির লোকের মতই। ওর একটা বছর ৬ এর মেয়ে ছিলো। বেশী ভাগ সময় আমাদের বাসাতেই থাকত।
একদিন দুপুরে আমার স্ত্রী হঠাৎ দেখে গলায় তার সোনার প্রায় আড়াই ভরির হারটা নেই।আমাকে অফিস থেকে ডেকে বাসায় আনলো কাছেই অফিস তাই তক্ষুনী চলে এলাম,সব শুনে জানতে চাইলাম শেষ কখন হারটা গলায় ছিলো? কখন খুলেছে? কখন প্রথম জানতে পারলো হারটা গলায় নেই? ইত্যাদি। যা জানলাম কাল রাতে গলায় ছিলো মনে আছে সকালে ছিলো কিনা মনে নেই, সারা ঘর তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয়েছে , আমার স্ত্রীর ভীষন মন খারাপ। বাইরের লোক যে কজন এসেছে তারা সবাই বিশেষ কাছের লোক তাই চুরি যাওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু উপরে জল এনে যেখানে স্নান করা হয় সেখানে অ খেয়ালে খুলে রাখলে বা গলা থেকে পড়ে গেলে জলের সাথে নর্দমা দিয়ে বেড়িয়ে গেলে পাওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই। কাজের বৌটি ওএসে সব খুঁজেছে, ও কাঁদছে ওকে না চোর ভাবি।হার চুরির কথাটা চার পাশে রাষ্ট্র হয়ে গেলো। অনেকে থানায় ডায়েরী কোরতে বলল। আমি বললাম দু দিন দেখি।
কাজের বৌ টি আর অফিসের কয়েকজন কর্মী আমাকে নাছোড় বান্দা কাছেই একজন মস্ত গুণীন আছেন কাল ভোর বেলা সূর্য্য উদয়ের সাথে সাথে তার কাছে পৌঁছতে হবে তিনি গুনে ব লে দেবেন হার কোথায় আছে কে নিয়েছে গলিয়ে ফেলেছে কিনা ইত্যাদি। আমি যাবনা কিন্তু কাজের বৌ টি আমার হাতে পায়ে ধরতে লাগলো, আমার অফিসের যারা সারাক্ষন আমার কাছে থাকে তারাও পই পই করে আমাকে অতিষ্ঠ করে তোলায় আমি রাজী হলাম।
পর দিন শেষ রাতে বেড়িয়ে সূর্য্য ওঠার আগেই গণৎকার এর বাড়িতে হাজির পরিচয় পেয়ে সাদর আমন্ত্রন বারান্দায় মাদুরে বসলাম আমি আর আমার সাথে অফিসের এক কর্মী । গণক ঠাকুর সবাই বলে আমি কি বলব ভাবছি উনি জিজ্ঞাসা করলেন কিছু হারিয়েছে নিশ্চয়? আমি বোল্লাম হ্যাঁ সেই জন্য ই তো এই সময় আসা। উনি মাটিতে খড়ি দিয়ে ছক আঁকলেন। অনেক সংখ্যা লিখলেন, আমি দেখলাম বুঝলাম না কিছুই উনি কিছু ক্ষণ চোখ বুঝে ধ্যান করার মতন থেকে চোখ খুলে বললেন যে জিনিস টা হারিয়েছে সেটি গোলাকার ? আমি বললাম হ্যাঁ, উনি ব ল্লেন দামী বস্তু মনে মনে বললাম নইলে ভোর রাত্তিরে এতোটা পথ ঠেঙিয়ে এখানে আসবো কেনো?মুখে বললাম হ্যাঁ অনেক দাম।উনি এইবার বললেন ওটা এখনো অক্ষত আছে তবে ঘর থেকে জলের সাথেবেড়িয়ে গেছে। মন খারাপ গণক ঠাকুর টাকা পয়সা নিতে চাননি আমি জোর করে কিছু টাকা দিয়ে চলে এলাম বাড়িতে শুনলে মন খারাপ করবে। আমি গণনা বিশ্বাস করিনা কিন্তু আর সবাই শুনে ভেঙে পড়বে।
বাড়ি ফিরতেই আমার স্ত্রী, কাজের বৌটি এসে উতলা কন্ঠে জানতে চাইলো হারের সন্ধান পেয়েছি কিনা? বোললাম না ঠিক জানতে পারিনি তবে মনে হয় পর হস্তগত হয়ে গেছে বাইরের কেঊ পেয়েছে এতোক্ষণে। কাজের বৌ টির কি কান্না, ওর কাজের কোন বাড়িতে এমন কখন ও ঘটেনি এখানেই ঘটলো। আসলে এই বৌ টি আমাদের বেশী নিজের ভাবতো বেশী কোরতো কারণ ও অনেক ব্যাপারে কৃতজ্ঞ ছিলো ওর থাকার জমি বাস্তু ঘর সব আমি এক রকম লড়াই করে পাইয়ে দিয়ে ছিলাম। ওর
খুউব কষ্ট ছিলো বাপের বাড়িতে ভাইদের সংসারে ছোট মেয়েকে নিয়ে পড়ে ছিলো, স্বামী ভিখারী অন্যত্র দূরে থাকে খোঁজ খবর রাখেনা ও লোকের বাড়ি কাজ করে সময় পেলে খালে ডোবায় ছোট মাছ ধরে কোন দিন পায় কোন দিন পায় না। মেয়েটি খুউব ভালো। তাই আমার মন বেশী খারাপ লাগছিলো। এদিকে হার পাবার জন্য আমার স্ত্রী ঠাকুরের কাছে মানত করেছে আমাদের পাড়ার বিখ্যাত মা মহীষাসুরমর্দ্দিনীর কাছে। আমি চুপচাপ মন খারাপ।
কিছুক্ষণ বাদে কাজের বৌ টি আবার আমার স্ত্রীকে ডাকলো দিদি এসো আবার একটু খুঁজে দেখি, ঘর থেকে যাবে কোথায় তুমি রাত্রে দেখেছিলে অথচ পরদিন সকালে নেই এমন কেঊই আসেনি যে নিয়ে পালাবে এসো দুজনে আবার মাথা ঠাণ্ডা করে খুঁজি হয়তো চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে। আমার স্ত্রীর মন ভালো নয় ও হতাশ বোললো আর কি দেখবো সব ই দেখা হয়ে গেছে। আমি বোললাম বিছানাটা একবার ভালও করে খুঁজে দেখো, বালিশের মধ্যে ঢুকে গেছে কিনা অনেক সময় এমন হয়, মনের অখেয়ালে
বালিশে ঘুমের ঘোরে দুল হার খুলে পুরে রাখে। অনিচ্ছা সত্বেও বিছানা খুঁজতে আমরা তিনজনাই গেলাম, খাটের তিন দিকে তিন জন, মাথার দিকে ঐ কাজেরবৌটি, পায়ের দিকে আমার স্ত্রী, আমি মাঝের এক পাশে।চাদর তুলে ঝাড়া হোলো, বালিশ গুলোর ওয়ার খুলে ঝেড়ে বালিশ পরীক্ষা করে আবার ওয়ার পড়িয়ে সব মেঝেতে রাখা হোলো,তোষক তুলে ওটাও ঝাড়া হোলো,তলায় নামানো হোলো , এবার খাটের গদী ধরা ধরি করে উঠিয়ে, খাটটার দিকে তাকাতেই কাজের বৌ টার চিৎকার, দাদা , বৌদি ঐ দেখো ওর হাত আর দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখি খাটের মাথার দিকের প্যানেলে মাঝে যে আড়াআড়ি সাপোর্ট দেওয়ার লম্বা কাঠের বাতাটা থাকে খাটের ছত্রি বা চালি টা যার উপরে থাকে সেই বাতা আটকানোর গ্রুপের খাঁজে হারটা আটকে ঝুলছে।সবাই তখন আনন্দে আত্মহারা, কাজের বৌটির কি কান্না আমার স্ত্রীও কেঁদে ফেলেছে, আমার মন থেকে একটা ভার নামলো, যাক বৌটি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ওর মুখে সেই স্বাভাবিক ভাব ফিরে এলো। আমি বোললাম গণনার কি হোলো? জলের সাথে বাড়ির থেকে বেড়িয়ে গিয়ে আবার খাটে ফিরে এলো? এইবার আমার স্ত্রী বোললো ও এইবার ম্নে হচ্ছে কাল রাতে শুয়ে হারটা গলাতে অস্বস্তি হচ্ছিলো তাই ঘুমের ঘোরে খুলে ছিলাম কোথায় রেখাছুলাম বালিশের পাশে রাখতে গিয়ে হয়তো পেছনে তোষ্কের ফাঁকে রেখেছিলাম ফাঁক গলে গদীর নীচে পড়েযেতে খাটের ডাঁশায় আটকে ছিলো এতো নীচে তো খুঁজিনি আমাদের সম্ভব ও ছিলোনা এই ভাবে খুঁজে দেখার। ভাগ্য থানায় ডায়েরী করোনি লজ্জার ব্যাপার।আমি বোললাম আমরা জানি বিশ্বাস করি তাই ঐ লক্ষ্মী কে (কাজের বৌ এরনাম) হার নিয়েছে বোলে ভাবিইনি অন্য বাড়ি বা ও নতুন হলে ওকেই সন্দেহ কোরতো , ডায়েরী করলে ওকে নিয়ে গিয়ে জেরা করে অতিষ্ঠ করে ছাড়ত। আমি লক্ষ্মী কে বোললাম ভাগ্যি হারটা পেলে নইলে ভাবতে গণক ঠাকুরের গণনাই নির্ভুল,হার স্নান কোরতে গিয়ে জলের সাথে বেড়িয়ে গেছে ।আজ না খুজলে পরে খাট থেকে পড়ে হারিয়ে যেতো তখন হয়তো চুরিও হোতো, গণনা বিশ্বাস করে হাল ছেড়ে দিলে পাওয়া যেতো না।
এর কোন প্রয়োগ, সাফল্য (ব্যতিক্রম ভুতে ধরা র ঘটনা টা) আমি দেখিনি। সব ই লোকের মুখে মুখে, আমি ভেবেছি যদি গুনে ঝাড় ফুঁকে চোর, অপরাধী ধরা যায় তা হলে এতো খরচ করে থানা পুলিশ দরকার কি? আর সত্যি যদি গণনায় সব বলে দেওয়া যায় তাহলে এতো কেস সমাধান না হয়ে আছে কেনো?।যাই হোক ব্যাপারটা আমার ব্যক্তিগত চিন্তা , কারো বিশ্বাস অবিশ্বাসের বিতর্কে যাচ্ছিনা। এই প্রসঙ্গে আমার কোনো মতামত ও নেই । আমি নিছক একটা ঘটনার উল্লেখ কোরছি যাতে এই বিষয়ের সত্যতা কি অ সত্যতা স্পষ্ট ভাবে প্রমানিত হয় না।আমি তখন মেদিনীপুর জেলার দীঘার কাছে কাঁথি মহকুমার ,রামনগর থানার রামনগরে ই থাকি। আমি ,আমার স্ত্রী,৬বছরের ছেলে, ১বছরের মেয়ে ১৯ ৮৩ সাল।রামনগরে বাজারের কাছেই একটি দোতালা বাড়ির উপর তলায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকি।আমার বাড়িতে একটি স্থানীয় বৌ ঘরের কাজ,বাসনমাজা, ঘরমোছা ,কাপড় কাচা এই সব কাজ করে ভীষন ভালো বিশ্বাসী। আমার বাড়ির লোকের মতই। ওর একটা বছর ৬ এর মেয়ে ছিলো। বেশী ভাগ সময় আমাদের বাসাতেই থাকত।
একদিন দুপুরে আমার স্ত্রী হঠাৎ দেখে গলায় তার সোনার প্রায় আড়াই ভরির হারটা নেই।আমাকে অফিস থেকে ডেকে বাসায় আনলো কাছেই অফিস তাই তক্ষুনী চলে এলাম,সব শুনে জানতে চাইলাম শেষ কখন হারটা গলায় ছিলো? কখন খুলেছে? কখন প্রথম জানতে পারলো হারটা গলায় নেই? ইত্যাদি। যা জানলাম কাল রাতে গলায় ছিলো মনে আছে সকালে ছিলো কিনা মনে নেই, সারা ঘর তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয়েছে , আমার স্ত্রীর ভীষন মন খারাপ। বাইরের লোক যে কজন এসেছে তারা সবাই বিশেষ কাছের লোক তাই চুরি যাওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু উপরে জল এনে যেখানে স্নান করা হয় সেখানে অ খেয়ালে খুলে রাখলে বা গলা থেকে পড়ে গেলে জলের সাথে নর্দমা দিয়ে বেড়িয়ে গেলে পাওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই। কাজের বৌটি ওএসে সব খুঁজেছে, ও কাঁদছে ওকে না চোর ভাবি।হার চুরির কথাটা চার পাশে রাষ্ট্র হয়ে গেলো। অনেকে থানায় ডায়েরী কোরতে বলল। আমি বললাম দু দিন দেখি।
কাজের বৌ টি আর অফিসের কয়েকজন কর্মী আমাকে নাছোড় বান্দা কাছেই একজন মস্ত গুণীন আছেন কাল ভোর বেলা সূর্য্য উদয়ের সাথে সাথে তার কাছে পৌঁছতে হবে তিনি গুনে ব লে দেবেন হার কোথায় আছে কে নিয়েছে গলিয়ে ফেলেছে কিনা ইত্যাদি। আমি যাবনা কিন্তু কাজের বৌ টি আমার হাতে পায়ে ধরতে লাগলো, আমার অফিসের যারা সারাক্ষন আমার কাছে থাকে তারাও পই পই করে আমাকে অতিষ্ঠ করে তোলায় আমি রাজী হলাম।
পর দিন শেষ রাতে বেড়িয়ে সূর্য্য ওঠার আগেই গণৎকার এর বাড়িতে হাজির পরিচয় পেয়ে সাদর আমন্ত্রন বারান্দায় মাদুরে বসলাম আমি আর আমার সাথে অফিসের এক কর্মী । গণক ঠাকুর সবাই বলে আমি কি বলব ভাবছি উনি জিজ্ঞাসা করলেন কিছু হারিয়েছে নিশ্চয়? আমি বোল্লাম হ্যাঁ সেই জন্য ই তো এই সময় আসা। উনি মাটিতে খড়ি দিয়ে ছক আঁকলেন। অনেক সংখ্যা লিখলেন, আমি দেখলাম বুঝলাম না কিছুই উনি কিছু ক্ষণ চোখ বুঝে ধ্যান করার মতন থেকে চোখ খুলে বললেন যে জিনিস টা হারিয়েছে সেটি গোলাকার ? আমি বললাম হ্যাঁ, উনি ব ল্লেন দামী বস্তু মনে মনে বললাম নইলে ভোর রাত্তিরে এতোটা পথ ঠেঙিয়ে এখানে আসবো কেনো?মুখে বললাম হ্যাঁ অনেক দাম।উনি এইবার বললেন ওটা এখনো অক্ষত আছে তবে ঘর থেকে জলের সাথেবেড়িয়ে গেছে। মন খারাপ গণক ঠাকুর টাকা পয়সা নিতে চাননি আমি জোর করে কিছু টাকা দিয়ে চলে এলাম বাড়িতে শুনলে মন খারাপ করবে। আমি গণনা বিশ্বাস করিনা কিন্তু আর সবাই শুনে ভেঙে পড়বে।
বাড়ি ফিরতেই আমার স্ত্রী, কাজের বৌটি এসে উতলা কন্ঠে জানতে চাইলো হারের সন্ধান পেয়েছি কিনা? বোললাম না ঠিক জানতে পারিনি তবে মনে হয় পর হস্তগত হয়ে গেছে বাইরের কেঊ পেয়েছে এতোক্ষণে। কাজের বৌ টির কি কান্না, ওর কাজের কোন বাড়িতে এমন কখন ও ঘটেনি এখানেই ঘটলো। আসলে এই বৌ টি আমাদের বেশী নিজের ভাবতো বেশী কোরতো কারণ ও অনেক ব্যাপারে কৃতজ্ঞ ছিলো ওর থাকার জমি বাস্তু ঘর সব আমি এক রকম লড়াই করে পাইয়ে দিয়ে ছিলাম। ওর
খুউব কষ্ট ছিলো বাপের বাড়িতে ভাইদের সংসারে ছোট মেয়েকে নিয়ে পড়ে ছিলো, স্বামী ভিখারী অন্যত্র দূরে থাকে খোঁজ খবর রাখেনা ও লোকের বাড়ি কাজ করে সময় পেলে খালে ডোবায় ছোট মাছ ধরে কোন দিন পায় কোন দিন পায় না। মেয়েটি খুউব ভালো। তাই আমার মন বেশী খারাপ লাগছিলো। এদিকে হার পাবার জন্য আমার স্ত্রী ঠাকুরের কাছে মানত করেছে আমাদের পাড়ার বিখ্যাত মা মহীষাসুরমর্দ্দিনীর কাছে। আমি চুপচাপ মন খারাপ।
কিছুক্ষণ বাদে কাজের বৌ টি আবার আমার স্ত্রীকে ডাকলো দিদি এসো আবার একটু খুঁজে দেখি, ঘর থেকে যাবে কোথায় তুমি রাত্রে দেখেছিলে অথচ পরদিন সকালে নেই এমন কেঊই আসেনি যে নিয়ে পালাবে এসো দুজনে আবার মাথা ঠাণ্ডা করে খুঁজি হয়তো চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে। আমার স্ত্রীর মন ভালো নয় ও হতাশ বোললো আর কি দেখবো সব ই দেখা হয়ে গেছে। আমি বোললাম বিছানাটা একবার ভালও করে খুঁজে দেখো, বালিশের মধ্যে ঢুকে গেছে কিনা অনেক সময় এমন হয়, মনের অখেয়ালে
বালিশে ঘুমের ঘোরে দুল হার খুলে পুরে রাখে। অনিচ্ছা সত্বেও বিছানা খুঁজতে আমরা তিনজনাই গেলাম, খাটের তিন দিকে তিন জন, মাথার দিকে ঐ কাজেরবৌটি, পায়ের দিকে আমার স্ত্রী, আমি মাঝের এক পাশে।চাদর তুলে ঝাড়া হোলো, বালিশ গুলোর ওয়ার খুলে ঝেড়ে বালিশ পরীক্ষা করে আবার ওয়ার পড়িয়ে সব মেঝেতে রাখা হোলো,তোষক তুলে ওটাও ঝাড়া হোলো,তলায় নামানো হোলো , এবার খাটের গদী ধরা ধরি করে উঠিয়ে, খাটটার দিকে তাকাতেই কাজের বৌ টার চিৎকার, দাদা , বৌদি ঐ দেখো ওর হাত আর দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখি খাটের মাথার দিকের প্যানেলে মাঝে যে আড়াআড়ি সাপোর্ট দেওয়ার লম্বা কাঠের বাতাটা থাকে খাটের ছত্রি বা চালি টা যার উপরে থাকে সেই বাতা আটকানোর গ্রুপের খাঁজে হারটা আটকে ঝুলছে।সবাই তখন আনন্দে আত্মহারা, কাজের বৌটির কি কান্না আমার স্ত্রীও কেঁদে ফেলেছে, আমার মন থেকে একটা ভার নামলো, যাক বৌটি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ওর মুখে সেই স্বাভাবিক ভাব ফিরে এলো। আমি বোললাম গণনার কি হোলো? জলের সাথে বাড়ির থেকে বেড়িয়ে গিয়ে আবার খাটে ফিরে এলো? এইবার আমার স্ত্রী বোললো ও এইবার ম্নে হচ্ছে কাল রাতে শুয়ে হারটা গলাতে অস্বস্তি হচ্ছিলো তাই ঘুমের ঘোরে খুলে ছিলাম কোথায় রেখাছুলাম বালিশের পাশে রাখতে গিয়ে হয়তো পেছনে তোষ্কের ফাঁকে রেখেছিলাম ফাঁক গলে গদীর নীচে পড়েযেতে খাটের ডাঁশায় আটকে ছিলো এতো নীচে তো খুঁজিনি আমাদের সম্ভব ও ছিলোনা এই ভাবে খুঁজে দেখার। ভাগ্য থানায় ডায়েরী করোনি লজ্জার ব্যাপার।আমি বোললাম আমরা জানি বিশ্বাস করি তাই ঐ লক্ষ্মী কে (কাজের বৌ এরনাম) হার নিয়েছে বোলে ভাবিইনি অন্য বাড়ি বা ও নতুন হলে ওকেই সন্দেহ কোরতো , ডায়েরী করলে ওকে নিয়ে গিয়ে জেরা করে অতিষ্ঠ করে ছাড়ত। আমি লক্ষ্মী কে বোললাম ভাগ্যি হারটা পেলে নইলে ভাবতে গণক ঠাকুরের গণনাই নির্ভুল,হার স্নান কোরতে গিয়ে জলের সাথে বেড়িয়ে গেছে ।আজ না খুজলে পরে খাট থেকে পড়ে হারিয়ে যেতো তখন হয়তো চুরিও হোতো, গণনা বিশ্বাস করে হাল ছেড়ে দিলে পাওয়া যেতো না।
No comments:
Post a Comment