Wednesday 5 August 2015

কল্প বিজ্ঞানের গল্প ঃ এনাপেন্থাস্কোণ্ডা

ডাক্তার উকিলের ডায়েরীথেকে এই কাহিনী টি উদ্ধৃত, এক বারে পুরোটা পোস্ট করা হোলো কারন কিস্তিতে প্রকাশ কোরলে ভালো না লাগতে পারে  তাই, লেখাটা একটু বড় হওয়ার জন্য দুঃখিত
এনাপেন্থাসকোণ্ডা  ' তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
১৫ই জুলাই ঃ-  কালকের ডাকে সুদুর দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলের ব্রাশিলিয়াথেকে আমার অত্যন্ত প্রিয় উদ্ভিদ বিজ্ঞানী প্রফেসর ডঃ সিবালির  চিঠিটা পাবার পর থেকেই মন টা চঞ্চল  হয়ে উঠেছিলো
, আমি জানতাম ও বিপদজনক মাংসাসী উদ্ভিদ নিয়ে আমাজনের বর্ষাবনাঞ্চল (Rain Forest Area) উপত্যাকায় বেশ কিছুকাল গবেষণার জন্য নিযুক্ত আছেন এবং বেশ কিছু নতুন প্রজাতির মাংসাসী উদ্ভিদ(Carnivorous Plants)চিহ্নিত কোরতে সক্ষম হয়েছেন যার মধ্যে আশ্চর্য্য কিছু বৈশিষ্ট বা লক্ষণ পাওয়া গেছে যেগুলি প্রাণী দেহে একমাত্র দেখা যায়, উদ্ভদের দেহে আজ অবধি দেখা যায়নিসম্প্রতি এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যাতে ডঃ সিবালি ভীষন রকম উত্তেজিত ও ভীত স্নত্রস্ত হয়ে আমাকে অবিলম্বে তাঁর গবেষণা গারে একটি বার যাবার জন্য অনুরোধ সাথেওরওখানে  পৌঁছানোর সমস্ত ব্যবস্থা পত্র যেমন প্লেনের টিকিট, ভিসা,বিশেষ সুরক্ষার বন্দোবস্ত বিমান বন্দর থেকে ওর বাংলোতে যাবার বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা সব কিছু কাতর একান্ত অনুরোধ উপেক্ষা করা  সম্ভব নয়,তাই যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম
৪ঠাআগস্ট ঃ-গত পরশু মানে ২রা আগস্ট সন্ধ্যায় দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলের কেন্দ্রে মুলশহর বা রাজধানী ব্রাশিলিয়া শহরে  সুন্দর সাজানো প্রাচীরঘেরা মাঝারি বাংলো প্যাটার্ণের বাড়ি
Peace Resort  এসেছি, এটা হোলো  বিখ্যাত উদ্ভিদ বিজ্ঞানী প্রফেসর ডঃ সিবালির মুল বাসস্থান কিন্তু তাঁর  কর্মস্থল ও গবেষণার ক্ষেত্র আমাজনাস (Amazonas) রাজ্যের রাজধানী  মানাঊস(Manaus), আগে University of Brasiliaতে অধ্যাপনা কোরতেন কিন্তু আজ বছর ৫ হোলো মাংসাসী উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণার জন্য আমাজননদীর অববাহিকা অঞ্চলে, আমাজোনাস রাজ্যের রাজধানী মানাউস এ একটি গবেষণাগার ও সাময়িক থাকার আবাস বানিয়েছেন এবংFedaral University of Amazonas এ অধ্যাপনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন
গত কাল ডঃ সিবালি যা বোল্লেন  সংক্ষেপে লিখে রাখছি
আজথেকে ৬/৭ বছর আগে ডঃ সিবালি মাংসাসী উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তিনি জান্তেন নির্দিষ্ট পরিবেশে খাপ খাইয়েবেঁচে থাকা আর বৃদ্ধির জন্য এ ধরনের উদ্ভিদ মাংসাসী হয়ে যায়এরা জন্মায় ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে নিচু জলা ভুমিতে, আদ্র ভুমিতে নাইট্রোজেন কম থাকায় মাংসাসী উদ্ভিদরা অন্য পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে থাকে তাদের ফাঁদেপড়া প্রাণী মারা গেলে তার দেহ থেকে খনিজ দ্রব্য নিয়ে এই চাহিদা পুরন করেএই প্রানী ধরার জন্য দু রকম ফাঁদ দেখাযায় (১) নড়াচড়ায় সক্ষম প্রত্যক্ষফাঁদ(Active- Trap) (২) আর নড়াচড়া করতে অক্ষম পরোক্ষ ফাঁদ (passive-Trap)
প্রত্যক্ষ ফাঁদের ২টি প্রজাতি ভেনাস ফ্লাই ট্র্যাপ আর ওয়াটার হুইল, পরোক্ষ ফাঁদের উদাহরন সুর্য্যশিশির, কলস উদ্ভিদ
ডঃসিবালি এর মধ্যে বিখ্যাত দক্ষিণ আমেরিকার কলস উদ্ভিদ টিকেই প্রাধান্য দিয়ে কাজ শুরু করেন আকর্ষী থেকেপাতার মতোন কলস ফাঁদ সৃষ্টি হয় ২" থেকে ২ফুট এই পরিবর্তিত পাতার ফাঁদেপোকা মাকড়ের নরম অংশ শোষিত হয়,বড় আকারের কলস উদ্ভিদ ছোট ব্যাঙ,ইঁদুর শিকার করে নিজেরা নড়া চড়া না করেই
দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদীর অববাহিকা অঞ্চলে যেপৃথিবীর বৃহত্তম  বর্ষাবনাঞ্চল আছে সেখানে দক্ষিণ আমেরিকান কলস উদ্ভিদ নেপেন্থাসি(
Nepenthes)পাওয়াযায়কিন্তু এই অঞ্চলের আতঙ্ক বিশ্বের বৃহত্তম সাপ এনাকোণ্ডা গবেষণার জন্য আমাজোনাস রাজ্যের রাজধানী মানাউস (MANAUS ,Capital ofAmazonas State) থেকে কাজ শুরু করেন সেইসাথে Fedral University of Amazonas এ অধ্যাপনার কাজ নেন উনি লক্ষ্য করেছিলেন আমাজনের এই বর্ষাবনাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছু অদ্ভুত প্রভাব দেখা যায় প্রথমত বিশাল আকৃতির সরীসৃপ যেমন এনাকোণ্ডা সাপ,বৈদ্যুতিক ঈল,বড় মাংসাসী পিরানহা মাছ, বিশাক্ত লতানে আকর্ষ গাছ(Climbing plant) অদ্ভুত পোকা মাকড় সব ই দেখতে পাওয়া যায় জলে জঙ্গলে
একদিন এই অঞ্চলে কলস উদ্ভিদের বীজ
, চারা  সংগ্রহের জন্য  অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখেন যে দক্ষিণ আমেরিকান  কলস উদ্ভিদ নেপেন্থাসি(Nepenthes) ঝোঁপের ঠিক মাঝে হলদেটে সবুজ গায়ে ছোপ ছোপ কালচে নীল মোটাসোটা লম্বা প্রায় ৭০/৭৫ ফুট লতানেউদ্ভিদ না প্রাণী বোঝা  যাচ্ছেনা দূর থেকে কাছে যেতেও সাহস হচ্ছেনা কারন ওটা এনাকোণ্ডা হওয়ার সম্ভাবনা
চোখে বাইনাকুলার লাগিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে বুঝলাম ওটা স্থির
, ওটার লেজের দিকটা মাটিতে পোঁতা  মাথার দিকটা বড় কলস আকৃতির যার ঢাকনা তে দুটো বড় গোল গোল চোখের মতন,
কলসের মুখের চারপাসে ভেনাস ফ্লাই ট্র্যাপের মতন সরু সরু অসংখ্য শুঁড়
কলস মুখটার যা আয়তন তাতে বড় হনুমান, হরিণ, বুনো শুয়োর  অনায়াসে ঢুকে যাবেসাথে দুজন স্থানীয়আদিবাসী  পথ নির্দেশক আর মালপত্র বাহক, তাদের একজনের চোখে ওটা পড়া মাত্র ভীষন ভয় পেয়ে  আর সামনে এগুতে বারণ কোরলো ওরা দুজনেই যা বোল্লো তাতে ওটা ভীষণ ভয়াবহ জিনিষ,ওটা পুরোপুরি উদ্ভিদ ও নয় প্রাণী ও নয় যখন তখন যে কোনোটায় বদলে যায়, প্রাণী বলতে এনাকোণ্ডা সাপ হয়ে আক্রমন করে, আর উদ্ভিদ হলে এক জায়গায় থেকে কলস উদ্ভিদের মতন, কিন্তু বড় বড় প্রাণী ধরে গিলে খায়মানুষ ভুল করে কাছে গেলে পেঁচিয়ে ধরে মেরে দেয় গিলে খায়এদের কথা লোকের মুখে মুখ্‌ কিন্তু কেঊ দেখেনি, কোনো প্রমান ও নেই ওরা আরো বোলেছে এরা নাকি এক জায়গায় থাকেনা যখন তখন অদৃশ্য হয়ে যায় বিশেষ করে মানুষের উপস্থিতি বুঝতে পারলেই সেদিন ঠিক তৈরী না থাকায় দূর থেকে দেখে চলে আস্তে বাধ্য হয়পরদিন আগ্নেয় অস্ত্র নিয়ে অন্য মোটবাহ্ক পথ নির্দেশক সাথে নিয়ে ঐ জঙ্গলে গিয়ে তন্য তন্য করে খুঁজেও আর ঐ বস্তুটির সন্ধান পাওয়া যায়না কিন্তু ঐ যেখানে দেখা গেছিলো সেখানে পড়ে থাকা গাছের পাতার মধ্যে  টেনিস বলের সাইজে চকচকে বড় কালো কালো ফলের মতন জিনিস দেখে আনতে গেলে এই আদিবাসীরাও বাধা দেয় বলে ওগুলো ভয়ঙ্কর এগুলো যেখনে থাকে চারপাশে পশু পাখী সব শেষ হয়ে যায় কিছু দিনের মধ্যেওদের কথা নাশুনে দুইটা লুকিয়ে সাথে নিয়ে এসেছিলেন এনে লুকিয়ে পরীক্ষা গারে রেখে ছিলেন, তারপরই ঘটে অদ্ভুত ভয়ঙ্কর কাণ্ড,যার জন্যই ডাক্তার উকিলের শরণাপন্ন তিনি     ডঃসিবালি বোলতে থাকেন যে ঘটনাটা তা নিন্মরুপ
আজ থেকে মাস খানেক আগে আমাজনের বর্ষাবনাঞ্চল থেকেআনা ঐ ফলের মতন দেখতে জিনিস দুটি পরীক্ষাগারে একধারে একটিকে একটা মুখ বন্ধ কৌটায় অপরটিকে একটি মাঝারি ফুলের টবে সামান্য মাটি ছিলো তাতে রেখেছিলেন
তারপর দিন সাতেক বাইরের কাজে ব্যস্ত থাকায় পরীক্ষা গারে তালা বন্ধ ছিলো, যাওয়া হয়নি বাইরে বাইরেই থাকতে হয়েছে বাড়ি ফিরেই দেখেন পোষা কুকুরটা পাগলের মতন অস্থির আচরন কোরছে তাঁকে টেনে পরীক্ষাগারের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে বাইরে থেকে আসার পোষাক ও ছাড়ার সময় হয়নি কুকুরটার আচরণে বাধ্য হয়েই প রীক্ষা গারের চাবি নিয়ে হাতে জোরালো আলোর টর্চ নিয়ে এগিয়ে যান, সন্ধ্যা হতে দেরী নেই বাইরে আলো কমে এসেছেপরীক্ষাগারের চাবি খোলা মাত্র ঝড়ের গতিতে আমার কুকুরটা ঘরে ঢুকে পড়ল পরক্ষণেই বিকট আর্তনাদ, আমি ভিতরে টর্চের আলো ফেলে ভয়ে শিঊরে উঠলাম, দেখি আমার কুকুরটাকে কুণ্ডলী পাকিয়ে জাপ্টে ধরেছে বিশাল বড় আর মোটা হলদেটে সবুজ গায়ে  নীলচে কালো ছোপ ছোপ সেই জঙ্গলে দেখা অদ্ভুত জীব লম্বায় ২৫/৩০ ফুট মোটা বেড় ২ফুট ব্যাসের মতো, প্রথমে এনাকোণ্ডা ভেবে ছিলাম পরে মুখটা দেখলাম বড় কলস ঢাকনিতে দুটো বড়গোল চোখ, মুহুর্তে শরীরে বিদ্যুতের শক লাগার মতন, কুকুরটাকে পিষে মেরে ফেলেছে, আমি মুহুর্তে দিক বিদিক হারিয়ে কোমরের হোলস্টারে আটকানো পাওয়ারফুল ৬ঘড়ার রিভলবার বার করে ৬টা গুলি পর পর চালিয়ে দিলাম আশ্চর্য্য দেখি মুহুর্তে ঐ এনাকোণ্ডার মতো শরীরটা একটা বড় বেলুনের মতন আকার নিয়ে ঘরের ছাদের দিকে উঠে গিয়ে সব লণ্ডভণ্ড করতে শুরু করে দিয়েছে শেলফ থেকে শিশি বোতল ফেলে কাঁচের যন্ত্রপাতি ভাঙতে শুরু করেছে, তখন বাধ্য হয়ে চাবির রিং এ রিমোটের সাহার্য্যে পরীক্ষাগারে স্কাই লাইটের নীচে লাগানো রিভলবিং অপ্টো-ইলেক্ট্রো থার্মাল গান চালু করে ওই বেলুনের গায়ে তাক কোরলাম ,এতে কাজ হোলো বোম ফাটার মত শব্দ হোলো ,ফিনকি দিয়ে কালো কালির মতন বেরুলো, তারপর ঐ কালি সহ জিনিস টা অদৃশ্য হয়ে গেলো, কোনো চিহ্ন রইল না, এমনকি কুকুরের দেহটা কি হোলো  বুঝতে পারলাম না এই পর্য্যন্ত কোনো রকমে বোলে ডঃসিবালি হাঁফাতে লাগলেন ঠাণ্ডাতে ঘামতে শুরু কোরেছেন উনি একটু দম নিলে আমি জিজ্ঞাসা কোরলাম ,আচ্ছা অপর যে কালো  ফলের মতন জিনিসটার কি হোলো? উত্তরে ডঃ সিবালি জানালেন ওটা প্রায় ঠিক ই আছে সামান্য রঙের পরিবর্তন ঘটেছে  দেখেছি আমি ভয়ে আপনার শরণাপন্ন হয়েছি জানি আপনি এই রহস্যের সমাধান কোরতে পারবেন, নইলে আর কেঊ পারবেনা উল্টে আমার গবেষণার ক্ষতি হয়ে যাবে
 ৫ই আগস্ট ঃ-কাল বিকালে মানাউসে  এসেছি ডঃসিবালির সাথে
, রাতে আর বিশেষ কিছু আলোচনা হয়নি , সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ গাঢ় নীল নেগ্রো নদী (Negro River)তীরে শহর, এখানে গাঢ় এই নেগ্রো নদীর পাশা পাশি বাদামী কর্দমাক্ত আমাজন স্থানীয় নাম সলিমোএস (Solimoes) প্রবাহিত হয়ে একস্থানে এসে মিশে গেছে ব্রাজিলের উত্তরাংশে এসেএই মানাউসে
আমাজনের চারপাশে ঘন বর্ষাবনাঞ্চল
, সবুজ প্রকৃতির দেশ এইরাজ্য আমাজোনাস যার রাজধানী মানাউস এটাও ব্রাজিলের প্রসিদ্ধ শহরআমার আগে এখানে আসা হয়নি সময় হলে দেশে ফেরার আগে ঘুরে দেখে নেবো   আজ সকালেই ডঃ সিবালির পরীক্ষাগারে গিয়ে থেকে যাওয়া অদ্ভুত ফলের মতন জিনিস টা পরীক্ষা করে দেখে আর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছু কিনারা হয় কিনা দেখা যাবে সকাল ৯টা নাগাদ ব্রেকফাস্ট খেয়ে আমরা দুজনা পরীক্ষাগারে গেলাম পরীক্ষাগারের চাবি খুলে দরজা খুলতে একটা তীব্র ঝাঁজালো গন্ধ নাকে এলো সাথে একটা হাল্কা মিস্টি এস্টারের সুবাস,ভাবলাম কোনো রিএজেন্টের বোতল খোলা আছে বা ভেঙ্গেছে বন্ধ ঘরে গন্ধ রয়ে গেছে দেখি এই গন্ধে ডঃ সিবালি ও চমকে গেছেন তিনি বোল্লেন ল্যাবে এমন কোনো কেমিক্যাল বর্তমানে রাখা নেই কারন এখন বেশ কিছুদিন তিনি ল্যাবে কাজ বন্ধ রেখে বাইরে পর্য্যবেক্ষণ ও তথ্যানুসন্ধানের কাজে ব্যস্ত ছিলেন তাই এখানে পরীক্ষা নিরিক্ষার কাজের সময় হয়না ল্যাবরেটরী প্রায় ফাঁকা পরিচ্ছন্ন, কিছু আধুনিক পরীক্ষার যন্ত্রপাতি আছে ইতঃস্তত বিক্ষিপ্ত অবস্থায়ডঃ সিবালি বোল্লেন এগুলি ওই ভয়াঙ্কর প্রাণীটার কাজ সেই সব ওলট পালট লণ্ডভণ্ড করেছে এবার ঐ কৌটোটার দিকে এগিয়েই থমকে দাঁড়িয়ে গেলেন ডঃসিবালি বিস্ফারিত চোখে কৌটোটার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে ঊঠলেন ওই দেখুন ডাক্তার উকিল কৌটার ভিতর ওটা কি?
আমি ডঃসিবালি র দৃস্টি অনুসরণ করে দেখি কৌটার মধ্যে একটি ফুট খানেক ২"মোটা হলদেটে সবুজ গায়ে গাঢ় নীলচে কালো ছোপছোপ সাপের মত কি একটা কুণ্ডলী পাকিয়ে রয়েছে মুখটা নীচের দিকে তাই দেখা যাচ্ছেনা বোঝাও যাচ্ছেনা কেমন দেখতে
ডঃসিবাল ঝট করে রিভলবার উঁচিয়ে ধরতে আমি হাত দিয়ে  উদ্ধত রিভালবার নামিয়ে নিতে বোললাম, বোল্লাম আমার কাছে ভালো উন্নত জোরালো আত্মরক্ষার অস্ত্র আছে প্রয়োজনে ব্যবহার করাযাবে এখন দরকার নেই আপাতত ওই বস্তুটি ঠিক কি বুঝতে হবে? ওদিকে আমি এগুতেই ডঃসিবালি আমাকে বারণ কোরলেন আমি ওনাকে নিশ্চিন্ত কোরলাম ,পকেট থেকে এক্রিলোফরমালিডিহাইডিক,রেসিনোসিলিকেট স্প্রেয়ারটা বার কোরলাম এটা প্রায় ২০ মিটার বা৬০ফুট দুরের বস্তুর উপর স্প্রে করা যায় তাতে ওই বস্তুটির উপর স্বচ্ছ কাঁচের মতোন আস্তরণপরে যেটা ভঙ্গুর নয় অথচ পুরু আবরণ বস্তুটি আবরণ ভেদ করে কিছুই কোরতে সক্ষম হয়না সে যত শক্তিশালী প্রাণী ই হোকনা কেনো, আরো এই আবরণের বৈশিষ্ট হোলো এটা অতি সুক্ষ্ম ছিদ্র যুক্ত তাই এর দ্বারা আবৃত প্রাণী বা উদ্ভিদ যাই হোক না কেন বেঁচে থাকবে শ্বাস প্রশ্বাসে অসুবিধা হবেনা
একটা ২০০মিলি লিটার /১২৫গ্রাম স্প্রেয়ার ৪টা প্রমান সাইজের হাতীকে ঢেকে ফেলতে পারে
আমি সাথে দুটো স্প্রেয়ার নিয়ে এসেছি যদি প্রয়োজন হয় এই ভেবে এটা আমার নুতন উদ্ভাবন আমরা বাক্সটার ১৫ গজের মধ্যে আস্তেই একটা হুই সেলের মতন শব্দ  করে ঐ সাপের মতন জিনিসটা কুণ্ডলী ছেড়ে সোজা গাছের মতন দাঁড়িয়ে পড়লো, এবার মুখটা দেখতে পেলাম বড় ঘটের মতোন মাথায় সরার মতন ঢাকনা তাতে দুটো নীলচে কালো গোল গোল চোখ জ্বলজ্বল কোরছেআমি আমার চোখ থেকে চশমা খুলে চট করে আমার ক্লিয়ার বাইনো মাইক্রো অপ্টোভিশন স্পেক্টাক্যালসটা পরে নিলাম এতে আমি একাধারে বহুদুরের অস্পষ্ট জিনিস ও একদন পরিস্কার চোখের সামনে দেখতে পাই সেইসাথে ইলেকট্রণিক মাইক্রোস্কোপিক ফেসিলিটি থাকায় বাটন টিপলে এটা শক্তিশালী অনুবীক্ষণ যন্ত্রের কাজ করেদুরের বস্তুকে চোখের সামনে অনুবীক্ষন যন্ত্রে পরীক্ষার জন্য ই এটা আমার আবিস্কারএটার ইনফ্রারেড ও থার্মাল ভিশন ব্যবস্থাও করা আছে,তাই দিনে রাতে অন্ধকারেও সমান কার্য্যকর
আমি দেখলাম সত্যি এটা উদ্ভিদ আর প্রাণীর মিলিত স্বত্তা মাংসাসী উদ্ভিদের মতনই শরীরে কোনো শ্বাস প্রশ্বাস চালা নোর
, রক্ত সংবহন, ব্যবস্থা নেই,হাঁটা চলা করার ক্ষমতা নেই এমন কি শরীরে কোনো উন্নত তন্ত্র, নাই, আবার এর দেহের কোষ গুলি উদ্ভিদ কোষের মতন ও নয় একটি কোষ যার কোষ প্রাচীর বলে কোনো কোষাবরণ নাই নিঊক্লিয়াস ,প্রোটোপ্লাজম,প্লাস্টিডস সবই অদ্ভুত দেখতে কোষে ভ্যকুয়ল গুলোর মধ্যে কোনো গ্যাস জন্মাচ্ছে বুদবুদ সৃষ্টি হচ্ছে ভ্যাকুয়ল্টা দ্রুত বড় হয়ে যাচ্ছে একই ভাবে নিঊক্লিয়াসটাও বড় হতে শুরু করেছে, একটি কোষ আয়তনে দ্রুত বাড়ছে কিন্তু বিভাজন হচ্ছেনাঐ অদ্ভুত জিনিস টা লম্বা আর মোটা হতে শুরু করেছে পাম্প দেওয়া বেলুনের মতোন দ্রুত বৃদ্ধি হচ্ছে.৪ফুট মতন হতেই আমি স্প্রে করে দিলাম নইলে নিয়ন্ত্রন কোরতে পারবোনা বৃদ্ধি আটকাতেই হবেবেশ ভালো মতোন স্প্রে কোরে দিলাম এবার ঘটতে শুরু কোরলো স ব অদ্ভুত প রিবর্তনএই মাংসাসী বস্তুটি হঠাৎ প্রথমে কেন্নোর মতন গোল কুণ্ডলী পাকিয়ে গেলো তারপর একটা গোল বড় বেলুনের মতন হয়ে গেলোশরীরটা গ্যাস বেলুনের মতোন হাল্কা হয়ে ভাসতে লাগলো,কিন্তু বাইরে
এক্রিলো ফরমাইল রেসিনো সিলিকেট রেজিনের আবরণ থাকায় আয়তনটা আর বাড়তে সক্ষম হচ্ছেনা
,আর উপরেও উঠতে পারছেনা ওখানেই একজায়গায় বাঁই বাঁই করে পাক খাচ্ছে
এখন দুটো চোখের পরিবর্তে আনারসের মতোন সারা গায়ে চোখ বেরিয়েছেতারপর দেখি গোলকটার আয়তন দ্রুত
কমতে শুরু করছে
কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেই টেনীস বলের সাইজে পরিনত হয়ে গেলো সেইসাথে রঙটাও বদলে নীলচেকালো  চকচকে হয়ে গেছেডাক্তার সিবালি চেঁচিয়ে বলে উঠলেন এই তো এটাই
আমি জঙ্গল থেকে এনেছিলাম
আমি বোল্লাম হ্যাঁ আপনি ঠিক ই বলেছেন এটাই ঐ আসল প্রাণীটার ডিম ঐ বলের মতন ডিমটার আকার ছোট হওয়ার সাথে সাথে ওটা ভারী হয়ে নীচে নেমে এসে টেবিলের উপর পড়ে পড়েই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো ছোট ছোট গোল গোল কাঁচের গুলির মতোন হয়ে যায়, তারপর মুহুর্তে সব গুলো চুম্বকের টানের মতোন অদৃশ্য টানে একজায়গায় জড়ো হয় চোখের সামনেই সব গুলি গুলো গলে প্রথমে কালো কালির মতন কিছুটা তরলে পরিনত হয় তারপর হাওয়া
কোথাও কিছুর চিহ্ন নাই শুধু একটা তীব্র ঝাঁজালো এনিলিনের মতোন গন্ধ সাথে একটা এস্টারের সুবাস
যেমনটা ঘরে ঢোকার সময় পাচ্ছিলাম
বুঝলাম এটা ওই প্রানীর দেহ নিসৃত কোন উৎসেচকের গন্ধ
আমরা দুজনাই প্রচণ্ড হতাশ হয়ে গেলাম এখন  কি নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা চালাবো
? আবার আমাজনের অব বাহিকায় বর্ষাবনাঞ্চলে যদি এই জীবের অস্তিত্ব চোখে পড়ে কিছু পাওয়া যায়  সেটা সময় সাপেক্ষ ও
ভাগ্যের ব্যাপার আজ অব্ধি কেউ চাক্ষুস দেখেছে কোনো উল্লেখ বা প্রমান নেই রোজ শত শত বিজ্ঞানী
, পর্য্যটক এই অঞ্চল চষে বেড়াচ্ছেন কেঊ দেখেনি,কোনো বৈজ্ঞাণিক তথ্য প্রমান উল্লেখ ও নাই কোথাও তাই আশা কম আবার দেখা মেলার বা সাক্ষাত পাওয়ার
দুজনের মন খুউব খারাপ কথা দিলাম 
কদিন  পরে আবার আসবো সময় করে তখন ঐ বর্ষাবনাঞ্চলে গিয়ে খুঁজে নিয়ে আসবো আবার

৯ই আগস্ট ঃ-আজ সকাল ১১টা নাগাদ ঝাড়্গ্রামে আমার নিজের বাংলো উন্মেষে ফিরে এসেছি
ডঃসিবালি কে কোনো রকম তথ্য দিয়ে সাহার্য্য করতে পারলামনা মন খারাপ, দেখি আমার সংগ্রহে যে বই পত্র নোটস রয়েছে খুঁজে দেখি কিছু হদিশ পাই কিনা তাই দুপুরেই আমি আমার বই নথীপত্রের সংগ্রহের ঘরে খুঁজতে বোসলাম সব নিয়েআমি ডঃসিবালির মুখে শোনা আর আমার চোখে দেখা ঘটনার সারাংশ আমার তথ্য অনুসন্ধান যন্ত্রে লিপিবদ্ধ করে দিতেই যন্ত্র থেকে টাইপ করা প্রতি বেদন বেড়িয়ে এলো  তাতে লেখা-------------
এটি একটি বিরল প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদ-প্রাণীর শঙ্কর জীব
  প্রাচীন সিংহল এর হেনা কাণ্ডায়া (Hena kandaya ; Hena -lighting/large;.Kanda-Stream/Trunk) বা তামিল ভাষায়  anai-kondra, meaning Elephant Killer এরথেকে এসেছে Anaconda, Eunectus Group এর বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বিষ সাপ দক্ষিণ আমেরিকার আমাজনের বেসিন এলাকায় বর্ষাবনাঞ্চলে  পাওয়া যায়,১৬৮৪ সালে বর্ণনানুসারেবড় সাপ জড়িয়ে কুণ্ডলী করে বড় পশুদের হাড়গুড়িয়ে দেয় এর সাথে
মাংসাসী উদ্ভিদ দক্ষিণ আমেরিকারন নেপেন্থাস(
Nepenthes) কলস উদ্ভিদ,ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ একত্রে এই শংকর প্রাণী টির সৃষ্টি হয়েছিলো  বলে অনুমান ক রা হয়,স্থানীয় আদিবাসীদের বিশ্বাস এই প্রাণীর দেখা পাওয়া অমঙ্গল প্রকৃতিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত আবহাওয়ার বিবর্তনেই এর সৃষ্টি হয়বহু কাল্পনিক গল্প প্রচলিত আছে আদিবাসীদের মধ্যে এই প্রাণীকে ঘিরে
আমি সব তথ্য ঘেঁটে প্রাণীটির উল্লেখ পেলেও নাম না পাওয়ায় আমি নাম রাখলাম 'এনাপেন্থাসকোণ্ডা'
মানে বৃহৎকাণ্ডবিশিষ্ট মাংসাসী কলস উদ্ভিদ
আমি ডঃসিবালি কে এই তথ্য সহ নামটা জানালাম


ক ল্প বিজ্ঞাণের গল্প ঃ আকাশ যানের বিপদ


Daktar Ukil jethur diary theke
Updated about a week ago
আকাশ যানে বিপদ' তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
আজ যে কাহিনীটির উল্লেখ করছি এটি ডাক্তার উকিল জেঠুর কাছ থেকে পাওয়া ডায়েরী থেকেই উদ্ধৃত ডায়েরীতে লেখাটি অত্যন্ত তথ্য বহুল আর ইতিহাসের মতন সন তারিখসহ উচ্চ কারিগরী পদার্থ বিদ্যার আলোচনা,হিসাব,অংকন, সংকেতেই ভর্তি, যথা সম্ভব সেগুলি বাদ দিয়ে ,আর যেমন যেমন লেখা ছিলো ঠিক সেই মত ই উদ্ধৃত করলাম কারন ঐ শিক্ষা মুলক আলোচনা গল্প হিসাবে সুখ পাঠ্য নয় তাই বাদ দিলাম ,এই লেখাটা অনেকের কাছে তত্ত্বের কচ কচি মনে হতে পারে আমায় ক্ষমা করবেন
আজ তিন মাস যাবৎ অক্লান্ত পরিশ্রম করার পর অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁচেছি ত্রিমাধ্যমে ( জল,স্থল,অন্তরীক্ষ) বিচরণক্ষম যান প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছিআমার কাঙ্খিত এই যানটি বানানোর জন্য আমি দিবারাত্র ব্যস্ত ছিলাম, এটাই আমার ধ্যান জ্ঞানএখন এটা জলে,স্থলে,অন্তরীক্ষে সমান ভাবে স্বছন্দে বিচরণ করতে পারবে অথচ এটা অদৃশ্য থাকবে লোকচক্ষুতে যা কোনভাবেই কোন যন্ত্র পরীক্ষক, তরঙ্গ,শক্তি দ্বারা চিহ্নিত করা সম্ভবপর হবেনা ইতি মধ্যে আমি ছোট খাটো এই রকম অদৃশ্যপ্রায় বা কোন নির্ণয়ক যন্ত্রে ধরা পড়েনাএমন বহু যন্ত্র প্রস্তুত করেছি আসলে আমি এক ধরনের রঙ আর পদার্থ বানিয়েছি যা সমস্ত শক্তি-তরঙ্গকে প্রাথমিক ভাবে শোষন করে তারপর অপর পৃষ্ঠ বা তল দিয়ে নির্গত করে দেয় ফলে ঐ পদার্থের মোড়কে কিছু থাকলে তা কোন ভাবেই কোন রশ্মি বা তরঙ্গ নির্ণয়ক দ্বারা চিহ্নিত করা যায়না, ধরা পড়েনা এখনে সৌর শক্তিকে বেশী মাত্রায় সম্পূর্ণ ভাবে ব্যবহার করে এমন একটা ছোট মহাকাশ যান বানানো বেশ পরিশ্রম ছিলো, যাক কাজ হয়ে গেছেআমি সৌর শক্তিকে বিপুল ভাবে শক্তির ভাণ্ডার হিসাবে ব্যবহার করতে চাইতাম,সব কিছুই চলবে সৌর শক্তিতে-তাই উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সৌর শক্তির সংগ্রাহক ,সঞ্চয় ব্যবস্থা আর শক্তির রুপান্তর ঘটানোর যান্ত্রিক ব্যবস্থাগুলি তৈরী করতে, গবেষণায় ব্যস্ত ছিলাম কিভাবে করা যায় ?ছিলো এক মাত্র চিন্তা
১৯০৪ সালে আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র বোস প্রাকৃতিক গ্যালেনা (Galena) ও অন্য পদার্থ রেডিও প্রস্তুতে ব্যবহার করেন (Cats-whisker detector),১৯০৬ সালে LED (Light Emiting Diode) আবিষ্কার আমাকে পথ দেখায় আর মহামান্য আইনস্টাইনের আলোক তড়িৎ ক্রিয়া ১৯০৫ সালে যে নুতন দিগন্তের সন্ধান দেখায়, তার ভিত্তিতে ১৯৫১ সালে প্রথম সৌরশক্তি ব্যবহৃত হয় কৃত্রিম উপগ্রহ ভ্যানগার্ড -১ উৎক্ষেপনেইতিমধ্যে ১৮২১ সালে বার্লিনের বৈজ্ঞানিকের পেলশিয়ার সিবেক ক্রিয়া থেকে Thermo electric effect, Auto thermo electric Generator(ATGs), polymerise chain reaction(pelter effect) Radio isotopes , Hyper physics(semiconductor cocepts) জন্ম নেয়
আমি সৌর বিদ্যুৎ কোষ,আলোক বিভব ক্রিয়া (photo Voltaic Effect) ব্য্যবহারের জন্য আমি সম্প্রতি যে কয়েকটা বিশেষ ধাতু সংকর প্রস্তুত করেছি, তার মধ্যে ১)ফস্পো গ্যলিনিয়াম জারমিনেট ২)সিলিকো সেলিনিয়াম আরসিনেট ৩)কিউপ্রো ফেরাম জিঙ্কেট ৪)ম্যাগ্নেসিয়াম কন্সট্যানটাইন বোরেট বিশেষ উপযোগী হয়েছে
আমি এখানে একটা বিশেষ জিনিষ লক্ষ্য করলাম, আমার তৈরী এই বিশেষ ধাতু সংকর মধ্যে যে কোন দুটির মধ্যে Thermal Energy Conversion / Thermo ElectricPower ক্ষমতা অনেক বেশী যেটা আগে অন্যনেকটাই অল্প ছিলো এই ধাতু সংকর মধ্যে যকোন দুটিকে একত্রিত করে তার এক পৃষ্ঠ কে উত্তপ্ত করলে অপর ধাতু সংকরের পৃষ্ঠটি তত ঠাণ্ডা হয়ে যায়, ফলে একাধারে এটিকে কোন বস্তুকে ঠাণ্ডা করার কাজে যেমন ব্যবহৃত হবে সেই সাথে তড়িৎ উৎপন্ন হবেসুর্য্যের আলো আর তাপ শক্তি থেকে প্রভুত অন্য শক্তি যেমন তড়িৎশক্তি ,যান্ত্রিক শক্তি পাওয়া যাবে
আমি ডোপায়নের মাধ্যমে বেশ কিছু অর্ধপরিবাহীর ক্ষমতা,বৈশিষ্ট অভাবনীয় ভাবে বদলে দিতে সক্ষম হয়েছি কিছুদিনের মধ্যেই বানানো এই যানটি নিয়ে পরীক্ষামুলক সফরে বেরুবো
আজ আমার তৈরী যানে করে পাড়ি জমালাম মহাকাশে ,তবে গতি নিয়ন্ত্রিত করা আছে যাতে যান টি পৃথিবীর অভিকর্ষজ আকর্ষণ ছাড়িয়ে মুক্তি বেগ না পেয়ে যায়, তাহলে ফেরা মুস্কিল হয়ে যাবেমুহুর্তের মধ্যে মহাশূণ্যে পৌঁছে গেলো আমার এই নভঃযান এবার গতি নিয়ন্ত্রন করে আবর্তন শুরু করলাম ,পৃথিবীর চারপাশেআমি সবার কাছে অদৃশ্য থাকলেও আমার কাছে সব ই দৃশ্যমানআমার পথ নির্দেশক যন্ত্রে আমি আমার অবস্থান জানতে পারছি, মহাকাশে আতঙ্ক কৃষ্ণ গহ্বর (Black Hole) আমার কাছে পুরো তথ্য নেই শুধু জানি বাড়মুডা ত্রিভুজের অন্তর্গত মহাকাশে এমন অনেক কৃষ্ণ গহ্বর (Black Hole) আছেআমি সতর্ক দু চক্কর মেরে নেমে যাবো আমার উৎক্ষেপন কেন্দ্র ঝাড়্গ্রামে
কিন্তু একি বিপদ পুরো এক চক্কর এখনো হয়নি সামনে একটা প্রকাণ্ড অগ্নিগোলক বিপুল গতিতে এসে ধাক্কা মারলো আমার মাহাকশের যানে, বিকট শব্দ, তারপর দেখি আমার এই যানে ডিসপ্লেসিস্টেমে গণ্ডগোল, কোথায় আছি? পৃথিবী থেকে কতোটা উপরে তাও জানিনা, কিছুই বুঝতে পারছিনাবাইরেটাও অন্ধকারহঠাৎ গোঁও করে সামান্য একটু ঝাঁকুনি দিয়ে যান টা উল্টো দিকে যেতে শুরু করলো কিছুটা গিয়ে নীচের দিকে, আমি আতঙ্কিত, এভাবে চললে আকাশে কোন বিমানের অন্য মহাকাশ যানের সাথে ধাক্কা লাগাও অসম্ভব নয়এখনি মাটিতে নামা দরকার কিন্তু কি ভাবে নামবো কোথায় নামবো?যানের ভিতরে আলো জ্বলছেনা কেবল মাত্র আপৎকালীন জরুরি ব্যবস্থা ,ইঞ্জিন রুমে আলো জ্বলছে আমার সাথে সুপার পাওয়ার টর্চ/স্পট ল্যাম্প আছে বটম ভিউ ফাইণ্ডার উইন্ডো দিয়ে টর্চ জ্বালিয়ে নীচের দিকে চেয়ে আতঙ্কে বুক শুকিয়ে গেলো অনেক নীচে নীল সমুদ্র মতন দেখা যাচ্ছেকিন্তু কোন সমুদ্র ? কিছুই বোঝার উপায় নেই, চারপাশেই জল আর জল, বুঝলাম এখানে রাত নেমেছে, আবার যান টা বেশ গতিতে নীচে নামছে এক্ষুণি সমুদ্রে আছড়ে পড়বেতার পর কি ঘটবে?যান টা কি আছড়ে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে? এটা যদিও বিশেষ ভাবে প্রস্তুত আঘাত ঘর্ষণ সইতে পারার কথাকিন্তু আজ এটা যে অদ্ভুত ব্যবহার করছে আমি তাতে ভীত আস্থা হারিয়ে যেতে বসেছে তারপর? -------------
একটা প্রচণ্ড আওয়াজ সাথে ঝাঁকুনি বুঝলাম সমুদ্রে আছড়ে পড়েছে, আমি ইঞ্জিন রুমে ইমারজেন্সী ব্রেক ধরেই ছিলাম ছিটকে পড়লাম যান টা ডুবতে শুরু করেছে আমি কোনো রকমে উঠে লিভার ঠেলে মহাকাশ যান অপশন থেকে ডুবো জাহাজ অপশনে নিয়ে গেলাম ওমা দেখি যান টা এবার ঠিক চলতে শুরু করলো জলের তলায় দেখার সব ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলো আপনা আপনি অক্সিজেন জেনারেটর সমুদ্রের জল থেকেই অক্সিজেন তৈরী করে যানের অভ্যন্তরে শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যবস্থা রক্ষা করতে লাগলো কিন্তু জলের মধ্যে আমি কি দেখছি? এটা কোথায়?

আমার সামনে ঘন নীল জল তার মধ্যে বিশালাকায় সব জন্তু একটারও নাম পরিচয় জানিনা কখনো কোথাও ছবি,তথ্য পাইনি পৃথিবীতে কেঊ জানে বলেও মনে হয়না এ সব অজানা,সমুদ্রের নীচে এক অজানা জগৎ সামনে প্রকাণ্ড তিমি মাছের মত জন্তু চারটে পা কচ্ছপের মতন মুখটা গণ্ডারের মত ওপাশে একটা সিহর্স আর স্টার ফিসের মিলিত পেল্লায় জন্তু জলজ উদ্ভিদ গুলো অস্বাভাবিক, খুউব সুন্দর রঙ বেরঙের ফুল জানিনা এগুলো জলজ উদ্ভিদ না প্রাণী কারন জলের নীচে এমন সুন্দর সুন্দর দেখতে ফুলের মতন প্রাণীও হয় তারা আবার ভয়ঙ্কর বিষাক্ত হয় এমন কি হিংস্র মাংসাসীও হয় এই জন্য ই স্কুবা ড্রাইভিং করার সময় সতর্ক করে দেওয়া হয় যাতে ফুল দেখে আকৃষ্ট হয়ে কেউ বিপদে না পড়েআমি যানের গতি খুউব কমিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে সব খুঁটিয়ে দেখতে লাগলাম জলের নীচেও দেখি বিশাল বিশাল পাহাড়, গাছপালা রয়েছে বড় বড় পাখনা ওয়ালা সাপ দেখলাম আমি যখন এই সব দেখতে বিভোর আবার প্রচণ্ড ধাক্কা বুঝে উঠলাম না কিসের সাথে চারপাশে কোন পাহাড় গাছপালা ছিলোনা তাহলে কোন জলজ প্রানী অতিকায় কোন জন্তুর সাথে হবেএই ধাক্কায় আবার বিভ্রাট ডুবোজাহাজ দিকবিদিক শূন্য ঊর্ধ গতিতে ছুটে চলতে শুরু করলো কোন দিকে জানিনা কত ক্ষন কত ঘণ্টা কিছুই জানিনা আমি জ্ঞান হারিয়েছিলামআমার যানের কি হোলো? আমাকে অচৈতন্য অবস্থায় আটলাণ্টিক মহাসাগরের এক অখ্যাত দ্বীপের উপকুলে পড়ে থাকতে দেখে একটি বাণিজ্যিক পণ্যবাহী জাহাজ উদ্ধার করেসাতদিন বাদে জ্ঞান ফেরে ,তখন আমি আফ্রিকামহাদেশের নামিবিয়ার উইণ্ডহক (Windhock) এর শহরের হাসপাতালে শয্যাশায়ী চিকিৎসা চলছে যমে মানুষে টানাটানি, আমি বেঘোরে ভুলবকেছি অনর্গল মহাশূণ্যে অগ্ন্যুপাত-জলের তলায় ডাইনোসর আমি চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে প্রায় মাস খানেক বাদে ঝাড়্গ্রামে আমার বাড়ি ঊন্মেষে ফিরেছি বাড়ি ফিরে দুদিন বাদে ডায়েরী লিখতে বসলাম