Wednesday, 25 November 2015

হাসি গল্প -২-" মুখ ফসকে"

মুখ ফস কে' তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
আজ যে ছোট্ট গল্পটি লিখছি এই রকম অভিজ্ঞতা প্রায় সবার ই আছে
,তবে বিষয় টা মজার আবার সমস্যাও হয়, তাই লিখছি অনেকের অভিজ্ঞতাও জানতে পারবো আমাদের পাড়ায় আমাদের বাড়ির সামনা সামনি,বোস কাকিমা থাকেন আমাদের বাড়ির   সাথে খুউব মেলামেশা একদম একই বাড়ির লোক হয়ে গেছেনভালো মানুষ সহজ সরল, পেটে কোন কথাই থাকেনা তার উপর কোন কথা কোথায় বলা উচিত নয় এসব জানেন না মনে এলে বলে দেন কিছু উদাহরণ দিই
আমার ছোট কাকা দেশ থেকে বিশেষ প্রয়োজনে বাবার সাথে দেখা কোরবেন বেলা ১১টা নাগাদ আমাদের বাড়িতে এসেছেন
দুপুরে  খেয়ে একটু বিশ্রাম করে বিকাল ৩টা নাগাদ ফিরে যাবেন,বেশী দূরে নয় মাইল ৩০ হবে, ট্রেণে , বাসে যাওয়া যায় মা কাকাকে সরবত খাবে নাকি জিজ্ঞাসা করাতে কাকা সরবত খেতে রাজী হয়ে গেলেন মা রান্না ঘরে এসে দেখেন চিনির কৌটা ফাঁকা রান্নার মাসী বলেও যাননি, তবে দোকানের ফর্দ্দ দেওয়া আছে বাবা যখন দুপুরে বাসায় আসবেন সেই একটা নাগাদ তখন ওই রিক্সাতেই মাল আসবেএখন কি করা যায় ? মা সেজদাকে পাঠালো কাকীমার বাড়ি একটু চিনি আর একটা পাতি লেবু আনার জন্য সেজদা তক্ষুনি গিয়ে বোস কাকিমার কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে এলো মা গ্লাসে করে সরবত বানিয়ে  ছোট কাকাকে দিতে ছোট কাকা হাতে নিয়ে সবে খেতে শুরু করেছেন বোস কাকিমা এসে হাজির কাকাকে দেখে এক গাল হেসে কি দীজু দা (আমার কাকার নাম দীজেন্দ্র নাথ ) ভাল আছেন? আপনি এসেছেন জানলুম এই বৌদি (আমার মাকে বৌদি ব লেন)  সানুকে (আমার সেজদার দাক নাম) আমার বাড়িতে আপনি সরবত খাবেন, বাড়িতে চিনি আর লেবু ছিলোন্‌ তাই চেয়ে পাঠিয়ে ছিলেন তখন ই জানলুম আপনি এসেছেন মায়ের মুখ লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো, কোন রকমে অন্য কথায় গিয়ে ব্যাপারটা থামালেন
এবার বোস কাকিমার আর এক কান্ড বাড়িতে আমার দাদার বিয়ে সব আত্মীয় স্বজন এসেছেন, বাড়ি বোঝাই লোকজন হৈ হৈ ব্যাপার, পিসিরা, মাসীরা ,কাকিমা, জেঠিমা সবার ছেলে মেয়ে  সে এলাহী ব্যাপার বিয়ের দিন দুপুরে পাড়ার অনেকে খাওয়া দাওয়া করেন থাকেন,দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর একটা বড় হলে বাড়ির প্রায় সব মেয়ে বৌ রা ঢালাও বিছানা পেতে শুয়ে বসে পান খেতে খেতে গল্প কোরছেন, হঠাত বোস কাকিমা আমার ছোট কাকিমাকে সোজা  জিজ্ঞাসা করে বোসলেন এই যে অণিমা দি (আমার কাকিমার নাম) আপনাদের বাড়ির গণ্ডগোল টা মিটেছে? সবাই অবাক! কাকিমা জানতে চাইলেন কোন গণ্ডগোল ? কেন আপনি যে কি শাশুড়ির মারা যাবার সময় ভারী গলার ৪ ভরির সোনার হার খুলে নিয়েছেন বলে আপনার বড় জায়ের সাথে প্রায় মারামারি হয়েছিলো ভুলে গেছেন? আপনাকে শুভা দি (আমার জেঠিমার নাম) চোর বলেছিলো,তাছাড়া এই বৌদি (আমার মা)
তিনিও তো বলেছেন কথাটা নাকি সত্যি
আপনি শাশুড়ির মৃত দেহের উপর কান্নার আছিলায় হার খুলে নিয়েছেন
ব্যাস সব হাসি ঠাট্টা বন্ধ গম্ভীর পরিবেশ, মা তখন বোস কাকিমাকে একটু রাগত ভাবেই বোললেন আপনি থামুন কার নামে কোথায় কিশুনতে কি শুনেছেন? এখানেওসব           আলোচনার জায়গা নয়
মা বোস কাকিমাকে নিয়ে এক আশ্রমে অনুষ্ঠানে গেছেন ওই আশ্রমের সাধু বাবা বিশেষ করে এই অনুষ্ঠানে আমাদের সবাইকে নিয়ে যেতে বলেছিলেন, বাবা একটু বেশী টাকার অনুদান দেন এই আশ্রমে তাই একটু বেশী প্রাধান্য থাকাটাই স্বাভাবিকমা আশ্রমে গিয়ে সাধুবাবাকে প্রণাম করতেই সাধুবাবা মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করে বললেন খুউব খুশী হলাম তোমরা আসায় জানি তোমরা অতি ভক্তিমতী  পুজা অনুষ্ঠানে তোমাদের উপস্থিতি থাকবেই ও মা বোস কাকিমা ফস করে বলে উঠলেন হ্যাঁ এখনেতো আসবেন আমাকে  আগেই বলেইছিলেন কারণ এখানে বিশেষ খাতির পাওয়া যাবে স্পেশাল প্রসাদ এসব তো আর সব জায়গায় জোটেনা,দাদা এখানে অনেক টাকা চাঁদা দেন,ব্যপারটাই আলাদা, নইলে এই ধ্যাধ্যারে গোবিন্দপুরে বৌদি কখন ই  আসতো না, কি বলো বৌদি? মায়ের লজ্জায় মাথা হেঁট, সাধু বাবা আর কি বলবেন! তিনি বললেন সেতো ঠিক কথাই , অর্থের একটা মর্য্যাদা আলাদা করে থাকে তবে ধর্ম ক্ষেত্রে সেটাইপ্রধান নয় মা লজ্জা পেয়ে কথাটা অন্য ভাবে ব্যাখ্যা করে বললেন যে আমি বলেছিলাম এখানে আসলে আপনারা যা খাতির করেন তাতে লজ্জা করে সবাই ভাববে স্বামী বেশী চাঁদা দেয় তাই বেশী খাতির আসলে আপনারা আমাকে যে স্নেহ করেন এটা সকলের সহ্য হয় না নানা কথা বলে তাই ওনাকে বলেছিলাম সাথে চলুন নিজে চোখে দেখে আসবেন সাধু বাবা কত স্নেহ করে এতো লোকের মাঝেও আলাদা করে খবর নেন, প্রসাদ ঠিক মতন পেলাম কিনা নিজে খোঁজ নেন এই সব 

No comments:

Post a Comment