৩)বিশ্বের বিস্ময় ডাক্তার উকিল
আমি অবাক হয়ে ভাবলাম উনি আমার মনের কথাগুলো
টের পেয়ে যাচ্ছেন কি করে?আমার মনে জাগা প্রশ্নের
উত্তর ও পেলাম এমনি অবাক করে দিয়ে-"আমি মনের কথা বুঝতে পারি-তুমি যতই চুপচাপ থেকে
মুখের ভাব বদলে রাখার চেষ্টা কর।এটাী ইলেকট্রো টেলিপ্যাথি বুঝলে?
সাধু,যোগী ঋষিগন পুরাকালে যোগবলে এই ক্ষমতা অর্জন
করতেন। থটরিডিং-আমি
অর্জন করেছি অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রনিক্সের প্রয়োগ কৌশলে।মানুষ যা কিছু চিন্তা করুকনা কেন
?তার মস্তিষ্ক থেকে একপ্রকার তরঙ্গ নির্গত হয়,এই
চিন্তাটাও শব্দ সৃষ্টি করেনা কিন্তু ঐ তরঙ্গ /কম্পন সৃষ্টি করে আর সেই কম্পন ধরা পরে আমার টেলিপ্যথোডিকোডারে।আমার চশমার ডাঁটিতে এই ব্যবস্থা লাগানো
আছে।এটাকে
ইচ্ছামতন শক্তিশালী করে এর দুরত্ব বা রেঞ্জ বাড়ানো কমানো যায়। আগেকারদিনে যোগী ঋষিরা
অনেক বড় বৈজ্ঞানিক ছিলেন,তাঁরা যোগাসনে শরীরের নানাতন্ত্রকেএই
রকম অতি শক্তিশালী কার্য্যক্ষম করে তুলতে পারতেন।
আমরা
একে অলৌকিক বা অতিপ্রাকৃতিকবলে ব্যাখ্যা করি। আজকে আমরা যাকিছুই আবিষ্কার করিনা কেন-এগুলো অতীতে ছিলো,
মাঝে বিলুপ্ত হয়েছ্। কত জিনিষ আবার বিলুপ্ত হতে চলেছে-তার হিসাব
রাখে কেউ?আমার মূল গবেষণামুলক কাজ শুরু হয়েছিলো-ভারতীয় ভেষজদ্রব্যের গুনাগুন আর তার
প্রয়োগ নিয়ে।পরে
এর সাথে রসায়ন, পদার্থবিদ্যার গবেষণা যুক্ত হয়।সর্বশেষ ইলেক্ট্রণিক্সের মাধ্যমে সবের
মধ্য একটা নিগুঢ় সমন্বয় সাধন করতে সক্ষম হই, তাই আমার
উদ্ভাবিত জিনিষ গুলোর মধ্যে এগুলি ওতপ্রোতঃভাবে মিলে মিশে আছে।কাল যখন আসবে তখন বিষয়টা বুঝিয়ে দেব।তোমার মনে এখন অনেক কৌতুহল
,জিজ্ঞাসা দানা বাঁধতে শুরু করেছে।আরো দানা বাঁধবে কালকে যখন চাক্ষুষ
এইগুলির সাথে পরিচয় ঘটবে।তখন
যতটা পারি বুঝিয়েদেব বাদবাকীটা কিছুটা আমার লেখা থেকে আর কিছুটা নিজস্ব অনুসন্ধান দিয়ে
বুঝে নিতে হবে।আমি
প রিপুর্ণভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে হাতে তুলে দেবনা,এতে যাকে
দেওয়া হবে তার মস্তিষ্কের কাজ কমে যাবে,অলস পরমুখাপেক্ষী হয়ে
পড়বে,স্বাধীন চিন্তাকরার ক্ষমতা হারাবেতাইআমি অনেকটা হাতে সার্কিট, কম্পোনেনটস
নিয়ে, প্রয়োজন মতন কার্য্যকারিতা বুঝে অদল বদল করে প্রয়োজনীয়
জিনিস টা নিজে বানিয়ে নেওয়ার মতন।" আমি বললাম
"বেশ এটাই ভালো ।
আমি মুগ্ধ।আজ হাতে সময় কম,বাইরে অন্ধকার নেমেছে।দীনবন্ধু
কাকার কেয়ার টেকার বেশী রাত করতে বারন করে দিয়েছে। পথে সাপ খোপ,
নানা জন্তু জানোয়ার থাকতে পারে, তাছাড়া জায়গাটা
আমার কাছে নতুন অচেনা,।" আমি
টর্চ আনতে ভুলে গেছি,শালবনের পথটা বেশ অন্ধকার
,আজ চলি বলেএগিয়ে গিয়ে ডাক্তারউকিলের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম। আমি যখন বারান্দাথেকে
বাইরে বেরুতে যাচ্ছি,উনি ডাকলেন 'অণির্বান- একটু দাঁড়াও' দেওয়ালের দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ
করলেন। দু
মিনিটের মধ্যেই ফিরে এলেন হাতে একটা চশমাতে রোদ আটকানোর জন্য যে এটাচি লাগানো হয় ঐরকম
একটা এটাচি।ঐ
এটাচির কাঁচ দুটো একটা মোটা স্টীলের পাত দিয়ে
আটকানো।ডাক্তারউকিল
ঐ টা আমাকে দিয়ে বললেন তোমার চোখে চশমা আছে তাই ফ্রেমটা আনলামনা এটা চশমার উপর এটাচির
মতন লাগিয়ে নাও।আমি
রাত্রি বেলা রোদ আটকানো এটাচি কেন লাগাব বুঝতে পারলাম না। ডাক্তারউকিল মনের কথা
বোঝেন হেসে বললেন -এটা চশমায় লাগিয়া নাও টর্চলাগবেনা,সাপখোপ,পোকামাড়, জন্তু জানোয়ার
তাড়ানোর লাঠি,অস্ত্র লাগবেনা, কেউ তোমার
৩০ গজের মধ্যে আসবেনা।
আমি এটাচিটা
চশমার উপর লাগিয়ে নিলাম।ভারি আশ্চর্য্য ব্যপার বাইরে বেড়িয়ে
দেখি কোথায় অন্ধকার?আমি পরিষ্কার দিন দুপুরে যেমন চারপাশ দেখতে
পাই তেমন সব পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি।আমি আস্তে
আস্তে 'উন্মেষ' থেকে বেড়িয়ে শাল বনের পথ ধরলাম।একটা মজার
জিনিষ দেখলাম রাস্তার দুপাশে যেপোকামাকড় ছিলো সব আমি এগুনোর সাথেসাথে উর্দ্ধশ্বাসে
পালাচ্ছে।আমি ২০ মিনিটের মধ্যেই অবসরে ফিরে
এলাম।ঘরে আলো জ্বলছে,আমার মনে হোলো দিনের
বেলা অযথা আলোজ্বলছে কোথাও অন্ধকার নেই।ঘরে এসে
এটাচিটা খুলে রাখলাম কালকে ডাক্তার উকিল যাকে আমি জেঠু বলে ডাকতে শুরু করে দিয়েছি তাকে
ফিরিয়ে দেব।
ক্রমশ-৪ আগামী
কিস্তিতেই সমাপ্য 

No comments:
Post a Comment