'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
বিশ্ব সাহিত্যের কিছু অমুল্য রচনা অবলম্বনে রচিত 'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
ঠাকুমার ঝুলি,পঞ্চতন্ত্রের গল্প,নীতিকথা,ইশপের গল্প,উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী ,রুপ কথা, শিশু সাহিত্যের অমুল্য ভাণ্ডার থেকে কিছু নির্বাচিত গল্প 'কথায় আর ছড়ায় ' নিবেদন করছি,ভালো লাগলে স্বার্থক হবে আমার প্রয়াস।
উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী অবলম্বনে লেখাঃ
১) পান্তাবুড়ির কথা
গাঁয়ে এক বুড়ি ছিলো সবে ডাকে পান্তা বুড়ি,
খেতে সে বাসত ভালো পান্তাভাত ভারি।
এক চোর প্রতি রাতে পান্তা খেয়ে যায়,
ধরতে চোর চেষ্টা করেও হার মানে তায়।
চোর না ধরতে পেরে বুড়ির দুঃখ হত ভারি,
নালিশ করতে তাই একদিন চলে রাজার বাড়ি।
ঠক ঠকিয়ে লাঠি নিয়ে যখন বুড়ি যায়,
পুকুর পাড়ে শিঙ্গি মাছ তাকে দেখতে পায়।
শিঙ্গি শুধায় ,চললে কোথায় ওগো পান্তা বুড়ি?
বুড়ি বলে নালিশ জানাতে যাচ্ছি রাজার বাড়ি।
রোজ রাতে চোর এসে পান্তা খেয়ে যায়,
ধরিতে না পারি তাকে আমি এমনি অসহায়।
শিঙ্গি ব লে ফেরার সময় আমায় নিও সাথে,
উপকার পাবে তুমি দেখে নিও আজ রাতে।
আচ্ছা বলে বুড়ি রাজার বাড়ির দিকে চলে,
বেলতলায় বুড়ি পাকা বেলের দেখা পেলে,
বেল তাকে শুধায় কোথায় যাচ্ছ পান্তা বুড়ি?
চোরে রোজ পান্তা খায় তার নালিশ জানাতে,
চলেছি আমি তাই আজ রাজার বাড়িতে।
বেল বলে ফেরার পথে আমায় নিও সাথে ,
উপকার পাবে তুমি দেখতে পাবে রাতে।
আচ্ছা বলে আবার বুড়ি রাজার বাড়ি চলে,
খানিক দূরে কিছুটা গোবর দেখতে পেলে।
গোবর শুধায় চললে কোথায় ওগো পান্তা বুড়ি?
চোরে করে পান্তা চুরি, নালিশ জানাতে রাজার বাড়ি।
গোবর বলে ফেরার সময় আমায় নিও সাথে,
চোর ধরতে হবে উপকার দেখবে তুমি রাতে।
আচ্ছা বলে পান্তা বুড়ি রাজার বাড়ির পানে যায়,
যাওয়ার পথের ধারে একটা ক্ষুর দেখতে পায়।
গোবর শুধায় চললে কোথায় ওগো পান্তা বুড়ি?
ক্ষুর শুধায় চললে কোথায় ওগো পান্তা বুড়ি?
চোরে খায় পান্তা রোজ নালিশ জানাতে রাজার বাড়ি।
ক্ষুর বলে ফেরার সময় আমায় নিও সাথে,
ধরতে চোর ধরতে সহায় হব দেখো তুমি রাতে।
রাজা মশায় ছিলোনা বাড়ি তাই দেখা নাহি হয়,
ভগ্ন মনে পান্তাবুড়ি যখন ঘরে ফেরে,
মনে করে সবাইকে থলের মধ্যে ভরে।
বুড়িপৌঁছালো যখন তার ঘরের প্রাঙ্গনে,
বলে ক্ষুর রাখ মোরে ঘাসের মাঝখানে।
গোবর বলিল রাখ মোরে পিড়ির উপর,
শিঙ্গি মাছ থাকে পান্তা হাঁড়ির ভিতর
বেল তাকে উনানে রাখিতে বলিলো,
বুড়ি করিলো তাই যেযেমন ব লেছিলো।
রাত হলে বুড়ি খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়ে,
মাঝ রাতে পান্তা খেতে চোর ঢোকে ঘরে।
চোর যেই দেয় হাত পান্তার হাঁড়িতে,
শিঙ্গি মাছ কাঁটা মারে তার আঙুলেতে।
হাত সেঁকতে চোর উনানেতে গেলো,
ফটাশ শব্দে বেল তখনি ফাটিলো।
ভয়ে ব্যাথায় চোর পালাতে যায়,
পিঁড়ির গোবরে সে আছাড় খায়,
চোর ঘাসেতে গোবর লাগা পা মুছতেযায়,
হল সে ক্ষত বিক্ষত ক্ষুরে যা ছিলো সেথায়।
চোর চেঁচায় বাবারে মারে বাঁচাও আমারে,
শুনে লোকে পেটায় তাকেচোর ধরা পড়ে।
'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
বিশ্ব সাহিত্যের কিছু অমুল্য রচনা অবলম্বনে রচিত 'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
ঠাকুমার ঝুলি,পঞ্চতন্ত্রের গল্প,নীতিকথা,ইশপের গল্প,উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী ,রুপ কথা, শিশু সাহিত্যের অমুল্য ভাণ্ডার থেকে কিছু নির্বাচিত গল্প 'কথায় আর ছড়ায় ' নিবেদন করছি,ভালো লাগলে স্বার্থক হবে আমার প্রয়াস।
উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী অবলম্বনে লেখাঃ
২) টুনটুনি আর বিড়ালের কথা
গৃহস্থের ঘরের পিছনে বেগুন গাছে পাতা সেলাই করে টুনটুনির বাসা তাতে তার তিনটি ছানা। ওগুলো খুউব বাচ্চা না পারে উড়িতে,
শুধু পারে গলা দিয়ে চিঁ চিঁ ডাক ডাকতে।
গৃহস্থের বিড়াল ভারি দুষ্টু ,এই ছানা গুলি খাবার তালখোঁজে,টুনটুনিকে দেখে বিড়াল এসে বলে,
ঘরে বসে এখন তুই কি করছিস লা টুনটুনি?
বিড়াল করিয়া মাথা হেঁট বলে প্রণাম মহারানী!
বিড়ালনী খুশী প্রণাম পেয়ে সে যায় দুরে চলে,
রোজ টুনটুনি তাই বিড়ালকে এভাবে কথা বলে।
ক দিনে ছানা গুলি একটু বড় হয়ে যায়,
ডানা শক্ত চোখে দেখে তাই ভরসা পায়।
টুনটুনি ছানাদের জিজ্ঞাসা করে,
চেষ্টা করিলে কি উড়িতে পারে?
হ্যাঁ পারবো জানাতে টুনটুনি বলে,
যা তো উড়ে দেখি ঐ সামনের ডালে।
ঐ ডালেতে গিয়ে তখন ছানারা উড়ে বসে ,
দুষ্টু বিড়াল করবেটা কি এখন যদি আসে?
একটু বাদেই দুষ্টু বিড়াল সেই খানেতে এলো,
কি করছিস লা টুনটুনি? হেসে সে জিজ্ঞাসিলো।
দূর হয়ে যা লক্ষ্মী ছাড়ি বিড়ালনী কে বলে,
এই সাথে লাথি দেখায় টুনটুনি পা তুলে,
দাঁত খিঁচিয়ে বিড়াল যেই জোরসে লাফায়,
ফুড়ুত করে তখন উড়ে টুনটুনিরা পালায়।
টুনটুনির ছানা খেতে আর পারলোনা বিড়াল,
বেগুনগাছের কাঁটার খোঁচায় হলো সে নাকাল।
বিশ্ব সাহিত্যের কিছু অমুল্য রচনা অবলম্বনে রচিত 'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
ঠাকুমার ঝুলি,পঞ্চতন্ত্রের গল্প,নীতিকথা,ইশপের গল্প,উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী ,রুপ কথা, শিশু সাহিত্যের অমুল্য ভাণ্ডার থেকে কিছু নির্বাচিত গল্প 'কথায় আর ছড়ায় ' নিবেদন করছি,ভালো লাগলে স্বার্থক হবে আমার প্রয়াস।
উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী অবলম্বনে লেখাঃ
২) টুনটুনি আর বিড়ালের কথা
গৃহস্থের ঘরের পিছনে বেগুন গাছে পাতা সেলাই করে টুনটুনির বাসা তাতে তার তিনটি ছানা। ওগুলো খুউব বাচ্চা না পারে উড়িতে,
শুধু পারে গলা দিয়ে চিঁ চিঁ ডাক ডাকতে।
গৃহস্থের বিড়াল ভারি দুষ্টু ,এই ছানা গুলি খাবার তালখোঁজে,টুনটুনিকে দেখে বিড়াল এসে বলে,
ঘরে বসে এখন তুই কি করছিস লা টুনটুনি?
বিড়াল করিয়া মাথা হেঁট বলে প্রণাম মহারানী!
বিড়ালনী খুশী প্রণাম পেয়ে সে যায় দুরে চলে,
রোজ টুনটুনি তাই বিড়ালকে এভাবে কথা বলে।
ক দিনে ছানা গুলি একটু বড় হয়ে যায়,
ডানা শক্ত চোখে দেখে তাই ভরসা পায়।
টুনটুনি ছানাদের জিজ্ঞাসা করে,
চেষ্টা করিলে কি উড়িতে পারে?
হ্যাঁ পারবো জানাতে টুনটুনি বলে,
যা তো উড়ে দেখি ঐ সামনের ডালে।
ঐ ডালেতে গিয়ে তখন ছানারা উড়ে বসে ,
দুষ্টু বিড়াল করবেটা কি এখন যদি আসে?
একটু বাদেই দুষ্টু বিড়াল সেই খানেতে এলো,
কি করছিস লা টুনটুনি? হেসে সে জিজ্ঞাসিলো।
দূর হয়ে যা লক্ষ্মী ছাড়ি বিড়ালনী কে বলে,
এই সাথে লাথি দেখায় টুনটুনি পা তুলে,
দাঁত খিঁচিয়ে বিড়াল যেই জোরসে লাফায়,
ফুড়ুত করে তখন উড়ে টুনটুনিরা পালায়।
টুনটুনির ছানা খেতে আর পারলোনা বিড়াল,
বেগুনগাছের কাঁটার খোঁচায় হলো সে নাকাল।
'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
বিশ্ব সাহিত্যের কিছু অমুল্য রচনা অবলম্বনে রচিত 'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
ঠাকুমার ঝুলি,পঞ্চতন্ত্রের গল্প,নীতিকথা,ইশপের গল্প,উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী ,রুপ কথা, শিশু সাহিত্যের অমুল্য ভাণ্ডার থেকে কিছু নির্বাচিত গল্প 'কথায় আর ছড়ায় ' নিবেদন করছি,ভালো লাগলে স্বার্থক হবে আমার প্রয়াস।
উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী অবলম্বনে লেখাঃ
৩) টুনটুনি আর নাপিতের কথা
টুনটুনি গিয়েছিলো বেগুন পাতায় নাচতে,
পায়ে হোলো বড় ফোড়া কাঁটার খোঁচাতে।
ফোড়াটা সারবে কিসে জিজ্ঞাসা করিলে ?
নাপিত দিয়ে কাটিয়ে নাও বলে সকলে ।
টুনটুনি গিয়ে বলে ওগো নাপিত দাদা ভাই,
পায়ের ফোড়া দাওনা কেটে বড্ড কষ্ট পাই।
ব্যঙ্গ ভরে নাপিত বলে ঈস ফোড়া কাটবো কেন?
আমি যে এখন রাজাকে কামাই?জানিস না যেন ?
টুনটুনি বলে দেখবো ফোড়া আসো কিনা কাটতে ?
এই বলে রাজার কাছে গেলো নালিশ করতে।
শুনে রাজা হেসেই মরে ,
টুন টুনিকে উপহাস করে।
নাপিত কে রাজা যখন কিছুই নাহি বলে,
রাগে টুনটুনি তখন ইঁদুরের কাছে চলে।
টুনটুনি ডাকে
ও ইঁদুর ভাই,ইঁদুর ভাই আছো নাকি ঘরে ?
ইঁদুরবলে বলে
ঘরে এসো, খাটে বস্ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
খেতে পারি তুমি যদি মোর কাজটি দাও করে,
রাজার পেট করবে ফুটো যখন থাকে ঘুমের ঘোরে।
ইঁদুর জিভ কাটে 'একাজ আমি করতে নারি',
রেগে টুনটুনি তখন যায় বিড়ালের বাড়ি।
টুনটুনি ডাকে
ও বিড়াল ভাই,বিড়াল ভাই্আছো নাকি ঘরে ?
বিড়াল বলে
ঘরে এসো, খাটে বসো্ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
খেতে পারি, তুমি যদি ইঁদুরকে দাও মেরে,
বিড়াল বলে মারবোনা ইঁদুর বড্ড ঘুম পায় ,
শুনে রেগে টুনটুনি তখন লাঠির কাছে যায়।
টুনটুনি ডাকে
ও , লাঠিভাই, লাঠিভাই,আছো নাকি ঘরে ?
লাঠিবল,
ঘরে এসো, খাটে বসো,ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে ,
খেতে পারি, তুমি যদি পেটাও দুষ্ট বিড়াল টিকে,
লাঠি বলে ,
কি করেছে বিড়াল আমার? পিটবো কেনো ওকে?
ওকে পেটাতে যাবো আমার কি এমন দায়?
শুনে রেগে টুনটুনি তখন আগুনের কাছে যায়।
টুনটুনি ডাকে
ও আগুন ভাই, আগুন ভাই, আছো নাকি ঘরে ?
আগুন বলে
ঘরে এসো খাটে বসো ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
খেতে পারি তুমি যদি লাঠিকে পোড়াও,
আগুন বলে
ঢের পুড়িয়েছি আজকে আমি,আর পোড়াবোনা যাও ।
টুনটুনি রেগে লাঠিকে ভৎসনা করে,
গেলো সে তখন সাগরের দ্বারে।
টুনটুনি ডাকে
ও সাগর ভাই ,সাগর ভাই, আছো নাকি ঘরে ?
সাগর বলে
ঘরে এসো খাটে বসো ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
তুমি আগুন নিভালে তবে আমিখেতে পারি
সাগর পারবেনা জানালে যায় হাতির বাড়ি।
টুনটুনি ডাকে
ও হাতি ভাই , হাতি ভাই , আছো নাকি ঘরে ?
হাতি বলে
ঘরে এসো , খাটে বসো, ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
তুমি নিলে সাগর শুষে আমিখেতে পারি
পারবেনা শুনে শেষে যায় মশার বাড়ি।
টুনটুনি ডাকে
ও মশা ভাই ,মশা ভাই , আছো নাকি ঘরে ?
মশা বলে
ঘরে এসো , খাটে বসো, ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
তুমি হাতিকে কামড়ালে আমিখেতে পারি,
মশা বলে
এই সামান্য কাজ আমি এখুনি দিচ্ছি করি।
কত মোটা চামড়া হাতির নিচ্ছি মোরা দেখে!
দেশের সকল মশাকে তখনি নেয় ডেকে।
পীন পীন পাখার শব্দে ঝড় জানি বয়,
হাতিকে কামড়াতে যায় দেখে ভয় হয়।
হাতি বলে , সাগর শুষি যাই,
সাগর বলে,আগুন নেবাই
আগুন বলে লাঠি পোড়াই,
লাঠি বলে , বিড়াল ঠেঙাই,
বিড়াল বলে, তাড়াতড়ি,
এবার আমি ইঁদুর মারি,
ইঁদুর বলে, রাজার ভুঁড়ি কাটি।
রাজা বলে, নাপতে ব্যাটার মাথা কাটি।
নাপিত তখন কর জোড়ে,
টুনটুনির কাছে যায় যেরে,
রক্ষে কর' বলে ফোড়া কাটে তার,
টুনি ভালো হয়ে নাচ করে আবার ।
বিশ্ব সাহিত্যের কিছু অমুল্য রচনা অবলম্বনে রচিত 'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
ঠাকুমার ঝুলি,পঞ্চতন্ত্রের গল্প,নীতিকথা,ইশপের গল্প,উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী ,রুপ কথা, শিশু সাহিত্যের অমুল্য ভাণ্ডার থেকে কিছু নির্বাচিত গল্প 'কথায় আর ছড়ায় ' নিবেদন করছি,ভালো লাগলে স্বার্থক হবে আমার প্রয়াস।
উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী অবলম্বনে লেখাঃ
৩) টুনটুনি আর নাপিতের কথা
টুনটুনি গিয়েছিলো বেগুন পাতায় নাচতে,
পায়ে হোলো বড় ফোড়া কাঁটার খোঁচাতে।
ফোড়াটা সারবে কিসে জিজ্ঞাসা করিলে ?
নাপিত দিয়ে কাটিয়ে নাও বলে সকলে ।
টুনটুনি গিয়ে বলে ওগো নাপিত দাদা ভাই,
পায়ের ফোড়া দাওনা কেটে বড্ড কষ্ট পাই।
ব্যঙ্গ ভরে নাপিত বলে ঈস ফোড়া কাটবো কেন?
আমি যে এখন রাজাকে কামাই?জানিস না যেন ?
টুনটুনি বলে দেখবো ফোড়া আসো কিনা কাটতে ?
এই বলে রাজার কাছে গেলো নালিশ করতে।
শুনে রাজা হেসেই মরে ,
টুন টুনিকে উপহাস করে।
নাপিত কে রাজা যখন কিছুই নাহি বলে,
রাগে টুনটুনি তখন ইঁদুরের কাছে চলে।
টুনটুনি ডাকে
ও ইঁদুর ভাই,ইঁদুর ভাই আছো নাকি ঘরে ?
ইঁদুরবলে বলে
ঘরে এসো, খাটে বস্ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
খেতে পারি তুমি যদি মোর কাজটি দাও করে,
রাজার পেট করবে ফুটো যখন থাকে ঘুমের ঘোরে।
ইঁদুর জিভ কাটে 'একাজ আমি করতে নারি',
রেগে টুনটুনি তখন যায় বিড়ালের বাড়ি।
টুনটুনি ডাকে
ও বিড়াল ভাই,বিড়াল ভাই্আছো নাকি ঘরে ?
বিড়াল বলে
ঘরে এসো, খাটে বসো্ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
খেতে পারি, তুমি যদি ইঁদুরকে দাও মেরে,
বিড়াল বলে মারবোনা ইঁদুর বড্ড ঘুম পায় ,
শুনে রেগে টুনটুনি তখন লাঠির কাছে যায়।
টুনটুনি ডাকে
ও , লাঠিভাই, লাঠিভাই,আছো নাকি ঘরে ?
লাঠিবল,
ঘরে এসো, খাটে বসো,ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে ,
খেতে পারি, তুমি যদি পেটাও দুষ্ট বিড়াল টিকে,
লাঠি বলে ,
কি করেছে বিড়াল আমার? পিটবো কেনো ওকে?
ওকে পেটাতে যাবো আমার কি এমন দায়?
শুনে রেগে টুনটুনি তখন আগুনের কাছে যায়।
টুনটুনি ডাকে
ও আগুন ভাই, আগুন ভাই, আছো নাকি ঘরে ?
আগুন বলে
ঘরে এসো খাটে বসো ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
খেতে পারি তুমি যদি লাঠিকে পোড়াও,
আগুন বলে
ঢের পুড়িয়েছি আজকে আমি,আর পোড়াবোনা যাও ।
টুনটুনি রেগে লাঠিকে ভৎসনা করে,
গেলো সে তখন সাগরের দ্বারে।
টুনটুনি ডাকে
ও সাগর ভাই ,সাগর ভাই, আছো নাকি ঘরে ?
সাগর বলে
ঘরে এসো খাটে বসো ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
তুমি আগুন নিভালে তবে আমিখেতে পারি
সাগর পারবেনা জানালে যায় হাতির বাড়ি।
টুনটুনি ডাকে
ও হাতি ভাই , হাতি ভাই , আছো নাকি ঘরে ?
হাতি বলে
ঘরে এসো , খাটে বসো, ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
তুমি নিলে সাগর শুষে আমিখেতে পারি
পারবেনা শুনে শেষে যায় মশার বাড়ি।
টুনটুনি ডাকে
ও মশা ভাই ,মশা ভাই , আছো নাকি ঘরে ?
মশা বলে
ঘরে এসো , খাটে বসো, ভাত দিই বেড়ে?
টুনটুনি বলে
তুমি হাতিকে কামড়ালে আমিখেতে পারি,
মশা বলে
এই সামান্য কাজ আমি এখুনি দিচ্ছি করি।
কত মোটা চামড়া হাতির নিচ্ছি মোরা দেখে!
দেশের সকল মশাকে তখনি নেয় ডেকে।
পীন পীন পাখার শব্দে ঝড় জানি বয়,
হাতিকে কামড়াতে যায় দেখে ভয় হয়।
হাতি বলে , সাগর শুষি যাই,
সাগর বলে,আগুন নেবাই
আগুন বলে লাঠি পোড়াই,
লাঠি বলে , বিড়াল ঠেঙাই,
বিড়াল বলে, তাড়াতড়ি,
এবার আমি ইঁদুর মারি,
ইঁদুর বলে, রাজার ভুঁড়ি কাটি।
রাজা বলে, নাপতে ব্যাটার মাথা কাটি।
নাপিত তখন কর জোড়ে,
টুনটুনির কাছে যায় যেরে,
রক্ষে কর' বলে ফোড়া কাটে তার,
টুনি ভালো হয়ে নাচ করে আবার ।
'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
বিশ্ব সাহিত্যের কিছু অমুল্য রচনা অবলম্বনে রচিত 'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
ঠাকুমার ঝুলি,পঞ্চতন্ত্রের গল্প,নীতিকথা,ইশপের গল্প,উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী ,রুপ কথা, শিশু সাহিত্যের অমুল্য ভাণ্ডার থেকে কিছু নির্বাচিত গল্প 'কথায় আর ছড়ায় ' নিবেদন করছি,ভালো লাগলে স্বার্থক হবে আমার প্রয়াস।
উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী অবলম্বনে লেখাঃ
৪) বুদ্ধুর বাপ
একদেশে এক বৃদ্ধ চাষী ছিলো সবাই তাকে বুদ্ধুর বাপ বলেই জানে,তার ক্ষেতের সব পাকা ধান বাবুই পাখী খেয়ে যায় , ঠক ঠকির শব্দে ভয় পায়না খায় ধান আপন মনে। বুদ্ধুর বাপ রগে মেগে বলে এবার ইঁড়ি-মিঁড়ি-কিঁড়ি বাধন দেখাবো এক বার ধরতে পেলে।ওই ক্ষেতে এক মস্ত বাঘ রাতে এসে ঘুমিয়ে ছিলো সে এটা শুনতে পায়।
ইঁড়ি-মিঁড়ি-কিঁড়ি বাধন শুনে বাঘের ধরে ভয়,
শোনেনি কোথায় কভু এমন কিছু যে হয়।
ভয়ে ভয়ে বাঘ এসে জিজ্ঞাসিলো তারে,
প্রবল ইচ্ছা তার এটা একবার দেখিবারে ।
পেলেও ভীষন ভয় সামলে বুদ্ধুরবাপ বলে,
অনেক কিছুর প্রয়োজন এটা দেখতে হলে।
বাঘ বলে ভাবনানেই কি কি লাগবে বলো?
আমি এখনি দেবো এনে ঐ জিনিস গুলো।
বুদ্ধুর বাপ বলে লাগবে একটা প্রকাণ্ড বড় মজবুত থলে,এক গাছা মোটা লম্বা দড়ি,আর বেশ বড় মুগুর। বাঘ বলে এই সব আমি দিচ্ছি এনে তুমি একটু কর সবুর।সেদিন হাটবার পথের ধারে
ঝোপে বাঘ লুকিয়ে ছিলো, খৈওয়ালারা যে খৈ নিয়ে যায় সেগুলো বড় থলে।
দেখে বাঘ খই ওয়ালারা পালায় খইএর থলি ফেলে,
বাঘ বুদ্ধুর বাপকে দেয় এনে সেই খই সুদ্ধ থলে।
এবার বাঘ দড়ি আনতে পাশের মাঠে।
যেখানে ছিলো বাঁধা গরু মোটা দড়িতে,
বাঘ দেখে দড়ি ছিঁড়ে লাগলো সব পালাতে।
বুদ্ধুর বাপকে বাঘ সেই দড়ি এনে দিলো।
এরপর বাঘ মুগুর আনতে আখড়া তে গেলো,
পালোয়ানরা সেথায় সবে মুগুর ভাঁজ ছিলো ।
বাঘ দেখে ফেলে সব যে যেদিকে পালালো,
বড় মুগুর টা বাঘ বুদ্ধুর বাপকে এনে দিলো।
এবার বাঘ বুদ্ধুর বাপকে বলল ঐটা দেখাও। বুদ্ধুর বাপ বলল বাঘটাকে থ লের মধ্যে ঢুকতে, যেইনা বাঘ থলেতে ঢুকেছে অমনি থলের মুখ দড়ি দিয়ে ভালো করে বেঁধে মুগুর দিয়ে আচ্ছাসে পিটতে লাগে।
বাঘ চেঁচায় বলে এটা তুমি কি করছ?
বুদ্ধুর বাপ বলে,
ইঁড়ি-মিঁড়ি-কিঁড়ি বাধন এটা তুমি ভয় পাচ্ছ?
চেঁচালে পাছে নিন্দা হয় বাঘ চুপ করে থাকে ,
বুদ্ধুর বাপ তবুও পেটায় খুউব করে তাকে ।
বাঘের গোঙ্গানী, সাড়া শব্দ যখন থেমে গেলো,
ভাবলো মরেছে বাঘ থলে খুলে ক্ষেতে ফেলে এলো ।
কিন্তু বাঘ মরেনি চার পাঁচ ঘন্টা মরার মত পড়ে থাকে তার পর উঠে বসে। রাগে সে বলে ,
বুদ্ধুর বাপ হতভাগা, পাজী,লক্ষ্মীছাড়া,
তোকেএকবার পাই মজা দেখাচ্ছি দাঁড়া!
এই শুনে বুদ্ধুর বাপ বেজায় ভয় পেলো,
ভয়েতে তার মুখ চোখ শুকিয়ে গেলো।
বুদ্ধুর বাপ ঘরে খিল এঁটে বসে রইলো, বাঘ ঘরের চার পাশে ঘোরে আর গালি দেয়।
তারপর দরজার কাছে বাঘ এসে বলে,
তামাক খেতে পারি একটু আগুন পেলে।
বুদ্ধুর বাপের খটকা লাগে ভাবে কথাগুলো মানুষের মতন হলেও গলাটা জানি বাঘের মত ?
দরজা খোলার আগে তাই,
একটু পরখ করে দেখতে চাই।
দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে,
দেখে বাঘ সেই ঘরের দোরে।
কোঁকাতে কোঁকাতে বলে খুউব জ্বর তাই,
দরজাটা আমি খুলতে পারছিনা ভাই।
তুমি যদি দরজার নীচ দিয়ে তোমার লাঠি গাছা ঢোকাও টাটা আমি আগুন বেঁধে দিতে পারি।
বাঘ কোথায় পাবে লাঠি ?দেয় লেজ ঢুকিয়ে,
কেটে নেয় বাঘের লেজ ধারালো বঁটি দিয়ে ।
ঘেঁয়াও বলে বাঘ সজোরে লাফালো,
কাটা লেজ নিয়ে বাঘ তখন পালালো।
বুদ্ধুর বাপ সারাক্ষন ভয়ে ভয়ে ভাবে,
সব বাঘ মিলে তাকে মারতে আসবে কবে?
পরদিন তার আশঙ্কা সত্যি হোলো,দলবেঁধে কুড়ি পঁচিশটা বাঘ মারতে এলো।
দুরথেকে দেখেই বুদ্ধুর বাপ ঘরের পিছনে উঁচু তেঁতুল গাছের আগায় উঠে একটা হাঁড়ির আড়াল থেকে সব দেখে।কিন্তু বাঘেরা তাকে দেখেতো ফেলেছে,বুদ্ধুর বাপ গাছে হাঁড়ি ধরে বসে আছে। তাকে ধরার জন্য বাঘেরা ফন্দি আঁটিলো, একজনের ঘাড়ে অন্য বাঘ উঠিলো ।
সবচেয়ে বড় বাঘ মাটিতে বসে গুঁড়িমেরে,পর্য্যায়ক্রমে বড় থেকে ছোট পর পর চড়ে।
সব থেকে বড়বাঘটার ই ছিলো লেজ কাটা তারসেই ঘা শুকায়নি তাই মাটিতে লেজ লাগিয়ে বসা সম্ভব ছিলোনা একটা গর্তে লেজ ঢুকিয়ে সে বসে।
এই ভাবে বাঘেরপীঠে বাঘ পরস্পর চড়ে,
বুদ্ধুর বাপকে প্রায় ফেলে ছিলো ধরে।
বাঘের মাথায় ভাঙবে হাঁড়ি ঠিক করে ছিলো,
এইজন্য হাঁড়িটি দু হাতেতে নিয়েই বসিলো।
এমন সময় এক মজার কাণ্ড ঘটে গেলো,
লেজ কাটা বাঘের লেজে কাঁকড়া কামড়ালো,
লেজ ঢোকানো গর্তটাতে একটা কাঁকড়া ছিলো,
কাটা লেজের রক্তের গন্ধ সে ঠিক পেয়েছিলো।
ঊপরেও বুদ্ধুর বাপ নীচেও বুদ্ধুর বাপ বলে বাঘ মারে লাফ,
উপর থেকে নীচ অবধি সব বাঘ তখন পড়ে ধুপ ধাপ।
লেজকাটা বাঘের পীঠে হাঁড়ি আছড়ে ফেলে,
উর্ধশ্বাসে পালালো বাঘ আর আসেনি কোনকালে।
বিশ্ব সাহিত্যের কিছু অমুল্য রচনা অবলম্বনে রচিত 'কথায় ও ছড়ায় শিশু কাহিনী'
ঠাকুমার ঝুলি,পঞ্চতন্ত্রের গল্প,নীতিকথা,ইশপের গল্প,উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী ,রুপ কথা, শিশু সাহিত্যের অমুল্য ভাণ্ডার থেকে কিছু নির্বাচিত গল্প 'কথায় আর ছড়ায় ' নিবেদন করছি,ভালো লাগলে স্বার্থক হবে আমার প্রয়াস।
উপেন্দ্র কিশোরের কাহিনী অবলম্বনে লেখাঃ
৪) বুদ্ধুর বাপ
একদেশে এক বৃদ্ধ চাষী ছিলো সবাই তাকে বুদ্ধুর বাপ বলেই জানে,তার ক্ষেতের সব পাকা ধান বাবুই পাখী খেয়ে যায় , ঠক ঠকির শব্দে ভয় পায়না খায় ধান আপন মনে। বুদ্ধুর বাপ রগে মেগে বলে এবার ইঁড়ি-মিঁড়ি-কিঁড়ি বাধন দেখাবো এক বার ধরতে পেলে।ওই ক্ষেতে এক মস্ত বাঘ রাতে এসে ঘুমিয়ে ছিলো সে এটা শুনতে পায়।
ইঁড়ি-মিঁড়ি-কিঁড়ি বাধন শুনে বাঘের ধরে ভয়,
শোনেনি কোথায় কভু এমন কিছু যে হয়।
ভয়ে ভয়ে বাঘ এসে জিজ্ঞাসিলো তারে,
প্রবল ইচ্ছা তার এটা একবার দেখিবারে ।
পেলেও ভীষন ভয় সামলে বুদ্ধুরবাপ বলে,
অনেক কিছুর প্রয়োজন এটা দেখতে হলে।
বাঘ বলে ভাবনানেই কি কি লাগবে বলো?
আমি এখনি দেবো এনে ঐ জিনিস গুলো।
বুদ্ধুর বাপ বলে লাগবে একটা প্রকাণ্ড বড় মজবুত থলে,এক গাছা মোটা লম্বা দড়ি,আর বেশ বড় মুগুর। বাঘ বলে এই সব আমি দিচ্ছি এনে তুমি একটু কর সবুর।সেদিন হাটবার পথের ধারে
ঝোপে বাঘ লুকিয়ে ছিলো, খৈওয়ালারা যে খৈ নিয়ে যায় সেগুলো বড় থলে।
দেখে বাঘ খই ওয়ালারা পালায় খইএর থলি ফেলে,
বাঘ বুদ্ধুর বাপকে দেয় এনে সেই খই সুদ্ধ থলে।
এবার বাঘ দড়ি আনতে পাশের মাঠে।
যেখানে ছিলো বাঁধা গরু মোটা দড়িতে,
বাঘ দেখে দড়ি ছিঁড়ে লাগলো সব পালাতে।
বুদ্ধুর বাপকে বাঘ সেই দড়ি এনে দিলো।
এরপর বাঘ মুগুর আনতে আখড়া তে গেলো,
পালোয়ানরা সেথায় সবে মুগুর ভাঁজ ছিলো ।
বাঘ দেখে ফেলে সব যে যেদিকে পালালো,
বড় মুগুর টা বাঘ বুদ্ধুর বাপকে এনে দিলো।
এবার বাঘ বুদ্ধুর বাপকে বলল ঐটা দেখাও। বুদ্ধুর বাপ বলল বাঘটাকে থ লের মধ্যে ঢুকতে, যেইনা বাঘ থলেতে ঢুকেছে অমনি থলের মুখ দড়ি দিয়ে ভালো করে বেঁধে মুগুর দিয়ে আচ্ছাসে পিটতে লাগে।
বাঘ চেঁচায় বলে এটা তুমি কি করছ?
বুদ্ধুর বাপ বলে,
ইঁড়ি-মিঁড়ি-কিঁড়ি বাধন এটা তুমি ভয় পাচ্ছ?
চেঁচালে পাছে নিন্দা হয় বাঘ চুপ করে থাকে ,
বুদ্ধুর বাপ তবুও পেটায় খুউব করে তাকে ।
বাঘের গোঙ্গানী, সাড়া শব্দ যখন থেমে গেলো,
ভাবলো মরেছে বাঘ থলে খুলে ক্ষেতে ফেলে এলো ।
কিন্তু বাঘ মরেনি চার পাঁচ ঘন্টা মরার মত পড়ে থাকে তার পর উঠে বসে। রাগে সে বলে ,
বুদ্ধুর বাপ হতভাগা, পাজী,লক্ষ্মীছাড়া,
তোকেএকবার পাই মজা দেখাচ্ছি দাঁড়া!
এই শুনে বুদ্ধুর বাপ বেজায় ভয় পেলো,
ভয়েতে তার মুখ চোখ শুকিয়ে গেলো।
বুদ্ধুর বাপ ঘরে খিল এঁটে বসে রইলো, বাঘ ঘরের চার পাশে ঘোরে আর গালি দেয়।
তারপর দরজার কাছে বাঘ এসে বলে,
তামাক খেতে পারি একটু আগুন পেলে।
বুদ্ধুর বাপের খটকা লাগে ভাবে কথাগুলো মানুষের মতন হলেও গলাটা জানি বাঘের মত ?
দরজা খোলার আগে তাই,
একটু পরখ করে দেখতে চাই।
দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে,
দেখে বাঘ সেই ঘরের দোরে।
কোঁকাতে কোঁকাতে বলে খুউব জ্বর তাই,
দরজাটা আমি খুলতে পারছিনা ভাই।
তুমি যদি দরজার নীচ দিয়ে তোমার লাঠি গাছা ঢোকাও টাটা আমি আগুন বেঁধে দিতে পারি।
বাঘ কোথায় পাবে লাঠি ?দেয় লেজ ঢুকিয়ে,
কেটে নেয় বাঘের লেজ ধারালো বঁটি দিয়ে ।
ঘেঁয়াও বলে বাঘ সজোরে লাফালো,
কাটা লেজ নিয়ে বাঘ তখন পালালো।
বুদ্ধুর বাপ সারাক্ষন ভয়ে ভয়ে ভাবে,
সব বাঘ মিলে তাকে মারতে আসবে কবে?
পরদিন তার আশঙ্কা সত্যি হোলো,দলবেঁধে কুড়ি পঁচিশটা বাঘ মারতে এলো।
দুরথেকে দেখেই বুদ্ধুর বাপ ঘরের পিছনে উঁচু তেঁতুল গাছের আগায় উঠে একটা হাঁড়ির আড়াল থেকে সব দেখে।কিন্তু বাঘেরা তাকে দেখেতো ফেলেছে,বুদ্ধুর বাপ গাছে হাঁড়ি ধরে বসে আছে। তাকে ধরার জন্য বাঘেরা ফন্দি আঁটিলো, একজনের ঘাড়ে অন্য বাঘ উঠিলো ।
সবচেয়ে বড় বাঘ মাটিতে বসে গুঁড়িমেরে,পর্য্যায়ক্রমে বড় থেকে ছোট পর পর চড়ে।
সব থেকে বড়বাঘটার ই ছিলো লেজ কাটা তারসেই ঘা শুকায়নি তাই মাটিতে লেজ লাগিয়ে বসা সম্ভব ছিলোনা একটা গর্তে লেজ ঢুকিয়ে সে বসে।
এই ভাবে বাঘেরপীঠে বাঘ পরস্পর চড়ে,
বুদ্ধুর বাপকে প্রায় ফেলে ছিলো ধরে।
বাঘের মাথায় ভাঙবে হাঁড়ি ঠিক করে ছিলো,
এইজন্য হাঁড়িটি দু হাতেতে নিয়েই বসিলো।
এমন সময় এক মজার কাণ্ড ঘটে গেলো,
লেজ কাটা বাঘের লেজে কাঁকড়া কামড়ালো,
লেজ ঢোকানো গর্তটাতে একটা কাঁকড়া ছিলো,
কাটা লেজের রক্তের গন্ধ সে ঠিক পেয়েছিলো।
ঊপরেও বুদ্ধুর বাপ নীচেও বুদ্ধুর বাপ বলে বাঘ মারে লাফ,
উপর থেকে নীচ অবধি সব বাঘ তখন পড়ে ধুপ ধাপ।
লেজকাটা বাঘের পীঠে হাঁড়ি আছড়ে ফেলে,
উর্ধশ্বাসে পালালো বাঘ আর আসেনি কোনকালে।