মতিভ্রম'
তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
(প্রায় সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত)
অমলেন্দু বিকাশ আমাদের সাথে ই পড়ত ইস্কুলে তাপপর ও ডাক্তারি পড়তে কোলকাতায় চলে যায়।অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলো, তেমন সুপুরুষ লম্বায় ৬ফুট, সুন্দর বলিষ্ঠ সুঠাম চেহারা, উজ্জ্বল বুদ্ধিদীপ্ত দুটিচোখ,বড়বড় ঝাকড়া এক মাথা চুল একদম চলচিত্রের নায়কোচিত চেহারা।খুউব নাম করা বাড়ির ছেলে।ওর বাবা নাম করা একটি আন্তর্জাতীক ঔষধ কোম্পানীর বড় পদে চাকুরী করেন।সুন্দর চোখ ধাঁধানো বাড়ি ,দামী গাড়ি, কি নেই? অমলেন্দুর নেশা বই পড়া ,আমরা দেখেছি ও যেমন পাঠ্য বই পত্র পড়তোতেমনি নানা সাধারণ জ্ঞানের বই, গল্পের বই, দেশ বিদেশের নানা বিষয়ের বই ওর নখ দর্পণে ছিলো।স্কুলে দেখেছি শিক্ষকরাও ওর জ্ঞানকে সমীহ কোরতো, ওকে আলাদা চোখে দেখতো, আমরাও ওকে একটুবিশেষ খাতির কোরতাম মনে মনে হিংসাও হোতো, ভাবতাম ওর সুযোগ সুবিধা আছে প্রচুর পয়সাকড়ি,বাবা দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ান ওরাও যায় ফলে ওর সাথে কি আমাদের তুলনা চলে ? আমরা ভুগোল পড়ি নানা দেশ বিদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের কথা নানা অঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার কথা প্রাণী দের কথা যা কোন্দিন চোখে দেখিনি জীবনে হয়তো দেখা হয়েও উঠবেনা অথচ ওর প্রায় সবই চোখেদেখা মনে গাঁথা। ও দেশ বিদেশের বিজ্ঞানের সংগ্রহ শালা দেখেছে আমাদের কোথাও যাওয়াহয়নি ওর মুখে গল্প শুনেছি হাঁ করে।আমাদের মানসিক চাহিদা, প্রয়োজনের বিষয় কেঊ কোনদিন ভাবেও নি। যাই হোক হায়ার সেকেণ্ডারী পাশ করার পর আমি স্থানীয় কলেজে রসায়নে অনার্স নিয়ে বি,এস,সি পড়তে ভরতি হলাম। পাশ করে প্রথমে ব্যবসা শুরু কোরলাম, বাবা গত হয়েছেন আমার পার্ট অয়ান পরীক্ষার আগে তারপর আমাদের উপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে আমিও সরকারী চাকুরী নিয়ে অন্য জেলায় এরপর বিয়ে থা সংসার নিয়ে অন্য জেলাতেই ১০ বছর ছিলাম।বদলী হয়ে নিজের জেলায় এসেছি একদিন স্টেশনে অমলেন্দুর সাথে দেখা এক মাথা ঝাঁকড়া চুল মুখ ভর্তি দাড়ি গোঁফ, ফুলহাতা শার্ট আর জিন্সের ফুল প্যান্ট পীঠেএকটাবড় স্কুল ব্যাগের মতোন ব্যাগ পায়ে নর্থস্টারের মতোন জুতো, শরীর টা একটু সামনেঝোঁকা কিন্তু চোখ মুখ তেমন ই উজ্জ্বল।আমায় দেখে চিনতে পারলো একগাল হেসে জানতে চাইলো কেমন আছি ? কি কোরছি ?আমি ও পালটা প্রশ্ন কোরলাম কি তুমি কেমনআছো?
উত্তর পেলাম যাছিলাম আছি তাই বিনা পারিশ্রমিকের কাজ বিশুদ্ধ ভাবে পরনির্ভরশীল।
তার মানে? আমি জিজ্ঞাসা করি কোথায় ডাক্তারী কোরছো? চাকুরী না নিজের চেম্বার ? উত্তর পেলাম না কোনটাই নয়। আমি ডাক্তারীর ফাইনাল পরীক্ষা দিই ইনি তো ডাক্তারহবো কিকরে? আমি অবাক হয়ে জানতে চাই কেনো? কি হয়ে ছিলো ? অমলেন্দুবলে কিছুই নয় তোমাদেরমনে হবে মতি ভ্রম। সত্যি হয়তো তাই। আমি ফাইনাল পরীক্ষার আগে ভেবে দেখিআমি পাশ কোরলেই আমাকে সবাই ডাক্তার বানিয়েই ছাড়বে,সেই চেম্বার, মেডিক্যাল রিপ্রেসেন্টেটিভ, সেই প্যাথোলজি, ডাইগোনোস্টিক সেন্টারের পার্শেনটেজ নানা দিকে অর্থের হাতছানি, যান্ত্রিক মানুষে পরিনত হয়ে যাচ্ছি। মিশনারি স্কুলে পড়তাম, প্রতিদিন স্কুলে প্রার্থণা হোতো,বোলতাম হে ইশ্বর আমি যেন দরিদ্র, অসমর্থ, অসহায়, মানুষদের নিঃস্বার্থ ভাবে সেবা শূশ্রষা করি,হিংসা লোভ থেকে দুরে থাকি। পাশকরা স্পেশালিস্ট ডাক্তার হলে আগেই এগুলো ভুলতে হবে নইলে তুমি টিকতেইপারবেনা, চন্দন গুহ,সুশীল পাল হয়ে যাবে নয়তআত্মহত্যা কোরবে।প্রতিদিন তুমি গাদা গাদা অপ্রয়োজনীয় ওষুধ অপারগ রুগীদেরকেনাকরাবে, অপ্রয়োজনীয় সব দামী পরীক্ষা করাবে, তাঁবেদার দালালদের রোজগারেরসুযোগ করে দেবে।আমি যদি ভাবি এসবের থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখবো আমাকেই সরিয়ে দেবেঅপদার্থ প্রতিপন্ন করে ছাড়বে, চাই কি তোমাকে কত রকম সাজানো কেসে ফাঁসিয়ে
(প্রায় সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত)
অমলেন্দু বিকাশ আমাদের সাথে ই পড়ত ইস্কুলে তাপপর ও ডাক্তারি পড়তে কোলকাতায় চলে যায়।অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলো, তেমন সুপুরুষ লম্বায় ৬ফুট, সুন্দর বলিষ্ঠ সুঠাম চেহারা, উজ্জ্বল বুদ্ধিদীপ্ত দুটিচোখ,বড়বড় ঝাকড়া এক মাথা চুল একদম চলচিত্রের নায়কোচিত চেহারা।খুউব নাম করা বাড়ির ছেলে।ওর বাবা নাম করা একটি আন্তর্জাতীক ঔষধ কোম্পানীর বড় পদে চাকুরী করেন।সুন্দর চোখ ধাঁধানো বাড়ি ,দামী গাড়ি, কি নেই? অমলেন্দুর নেশা বই পড়া ,আমরা দেখেছি ও যেমন পাঠ্য বই পত্র পড়তোতেমনি নানা সাধারণ জ্ঞানের বই, গল্পের বই, দেশ বিদেশের নানা বিষয়ের বই ওর নখ দর্পণে ছিলো।স্কুলে দেখেছি শিক্ষকরাও ওর জ্ঞানকে সমীহ কোরতো, ওকে আলাদা চোখে দেখতো, আমরাও ওকে একটুবিশেষ খাতির কোরতাম মনে মনে হিংসাও হোতো, ভাবতাম ওর সুযোগ সুবিধা আছে প্রচুর পয়সাকড়ি,বাবা দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ান ওরাও যায় ফলে ওর সাথে কি আমাদের তুলনা চলে ? আমরা ভুগোল পড়ি নানা দেশ বিদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের কথা নানা অঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার কথা প্রাণী দের কথা যা কোন্দিন চোখে দেখিনি জীবনে হয়তো দেখা হয়েও উঠবেনা অথচ ওর প্রায় সবই চোখেদেখা মনে গাঁথা। ও দেশ বিদেশের বিজ্ঞানের সংগ্রহ শালা দেখেছে আমাদের কোথাও যাওয়াহয়নি ওর মুখে গল্প শুনেছি হাঁ করে।আমাদের মানসিক চাহিদা, প্রয়োজনের বিষয় কেঊ কোনদিন ভাবেও নি। যাই হোক হায়ার সেকেণ্ডারী পাশ করার পর আমি স্থানীয় কলেজে রসায়নে অনার্স নিয়ে বি,এস,সি পড়তে ভরতি হলাম। পাশ করে প্রথমে ব্যবসা শুরু কোরলাম, বাবা গত হয়েছেন আমার পার্ট অয়ান পরীক্ষার আগে তারপর আমাদের উপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে আমিও সরকারী চাকুরী নিয়ে অন্য জেলায় এরপর বিয়ে থা সংসার নিয়ে অন্য জেলাতেই ১০ বছর ছিলাম।বদলী হয়ে নিজের জেলায় এসেছি একদিন স্টেশনে অমলেন্দুর সাথে দেখা এক মাথা ঝাঁকড়া চুল মুখ ভর্তি দাড়ি গোঁফ, ফুলহাতা শার্ট আর জিন্সের ফুল প্যান্ট পীঠেএকটাবড় স্কুল ব্যাগের মতোন ব্যাগ পায়ে নর্থস্টারের মতোন জুতো, শরীর টা একটু সামনেঝোঁকা কিন্তু চোখ মুখ তেমন ই উজ্জ্বল।আমায় দেখে চিনতে পারলো একগাল হেসে জানতে চাইলো কেমন আছি ? কি কোরছি ?আমি ও পালটা প্রশ্ন কোরলাম কি তুমি কেমনআছো?
উত্তর পেলাম যাছিলাম আছি তাই বিনা পারিশ্রমিকের কাজ বিশুদ্ধ ভাবে পরনির্ভরশীল।
তার মানে? আমি জিজ্ঞাসা করি কোথায় ডাক্তারী কোরছো? চাকুরী না নিজের চেম্বার ? উত্তর পেলাম না কোনটাই নয়। আমি ডাক্তারীর ফাইনাল পরীক্ষা দিই ইনি তো ডাক্তারহবো কিকরে? আমি অবাক হয়ে জানতে চাই কেনো? কি হয়ে ছিলো ? অমলেন্দুবলে কিছুই নয় তোমাদেরমনে হবে মতি ভ্রম। সত্যি হয়তো তাই। আমি ফাইনাল পরীক্ষার আগে ভেবে দেখিআমি পাশ কোরলেই আমাকে সবাই ডাক্তার বানিয়েই ছাড়বে,সেই চেম্বার, মেডিক্যাল রিপ্রেসেন্টেটিভ, সেই প্যাথোলজি, ডাইগোনোস্টিক সেন্টারের পার্শেনটেজ নানা দিকে অর্থের হাতছানি, যান্ত্রিক মানুষে পরিনত হয়ে যাচ্ছি। মিশনারি স্কুলে পড়তাম, প্রতিদিন স্কুলে প্রার্থণা হোতো,বোলতাম হে ইশ্বর আমি যেন দরিদ্র, অসমর্থ, অসহায়, মানুষদের নিঃস্বার্থ ভাবে সেবা শূশ্রষা করি,হিংসা লোভ থেকে দুরে থাকি। পাশকরা স্পেশালিস্ট ডাক্তার হলে আগেই এগুলো ভুলতে হবে নইলে তুমি টিকতেইপারবেনা, চন্দন গুহ,সুশীল পাল হয়ে যাবে নয়তআত্মহত্যা কোরবে।প্রতিদিন তুমি গাদা গাদা অপ্রয়োজনীয় ওষুধ অপারগ রুগীদেরকেনাকরাবে, অপ্রয়োজনীয় সব দামী পরীক্ষা করাবে, তাঁবেদার দালালদের রোজগারেরসুযোগ করে দেবে।আমি যদি ভাবি এসবের থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখবো আমাকেই সরিয়ে দেবেঅপদার্থ প্রতিপন্ন করে ছাড়বে, চাই কি তোমাকে কত রকম সাজানো কেসে ফাঁসিয়ে
দেবেতার
ইয়ত্তা
আছে?
তাই
আমি
প্রকৃত
গরীব
দুঃখী
অসহায়
মানুষদেরসেবায়
পালিয় গেলাম তাদের মাঝে।কিন্তু সেখানেও ঠাঁই পাওয়া শক্ত। এই অসহায় মানুষদের
অভাব, অভিযোগ কে মুলধন কোরে এক শ্রেনী রাজনীতি করে এরা ওতাদেরহাতের
পুতুল,ভয়েভক্তিকরে।এই অসহায় মানুষ দের ওরাই চালায় এদের মাথা তোলার নিজস্ব
কিছু বলার করারনেই। আমার মতন বাইরের লোকের সাথে যোগাযোগ রাখায় প্রবল আপত্তি, তাই আমিএগ্রামে কদিন, ওগ্রামেকদিনএইভাবে চষে বেড়ালাম রাজ্যের গ্রামাঞ্চল। আমারকাছে প্রস্তাব এলো শক্তিশালী দলে নাম লেখানোর আমি রাজি না হয়ে যাযাবর হলাম।
আমিঅস্থির ভাবে জানতে চাইলাম তারপর?তার পর আর কি? একদিন আমি আমার
বাড়িফিরে এলাম এসে শুনি বাবা চারবছর হোলো গত হয়েছেন। মা অসুস্থ বাতে শয্যা শায়ী দেখাশোনা করার মতো কেঊনেই,পাড়ার এক বৌদি এসে দেখাশোনা করেন , মামা বাড়ি থেকে মামা মাঝে মাঝে আসেন বাবার যে টাকা পয়সা ছিলো তা পোস্ট অফিসেজমাকরে মাসিকসুদেসবখরচখরচাচলে। বড় বাড়ি আর নেই সব জমি বাড়ি বিক্রীহয়ে গেছেবড় ফ্ল্যাটহয়েছে, এরইদোতলায়একটি দুকামড়ার ফ্ল্যাট মাকে দিয়েছে তাতে থাকে। আমি আসার পর মামা আর আসেননাআমাকে সব হিসাব বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাবার যা কিছু ছিলো সব ই নাকি বাবা মায়ের অসুখে খরচ হয়ে গেছে এখন শুধু ওই ফ্ল্যাট আর মাসে পাঁচ হাজার টাকার মতনসুদের টাকা, এতেই চলে। ডাক্তার ওষুধ পরিচারিকার খরচ অনান্য সবখরচমেটানোপ্রায়অসাধ্য কিন্তু কি উপায়?আমি বলি আচ্ছা অমলেন্দু তুমি ডাক্তারি না হয় না কোরলে, টিঊশানিতো কোরতেপারোএতোভালো ছাত্র ছিলে এখনপ্রাইভেট টিউশানএর খুউব চাহিদা ভালো উপার্জন।অমলেন্দুবলেওখানেও ব্যাপার আছে আমি তো কোনো স্কুলের শিক্ষক নই আমার ছাত্রজোটা মুস্কিল, তা ছাড়া এখনকার পড়া শুনা আমাদের সময়ের মতন নয় এখনবিরাট সিলেবাসে বিষয় অনেক জানতে হয় অনেক কিছুতবেআমাদের সময়ের মতন অতো বিস্তারিত ভাবেনয় এখন কার প্রশ্ন উত্তর সংক্ষিপ্তএকদম যেটুকু দরকার যাকে বলে টুদি পয়েন্ট বুঝলে? আমরা এই ধারায় অভ্যস্ত নই তাই অসুবিধাআছে।যাকআজআসিপরেএকদিন কথা হবে,এই বলে অমলেন্দু হনহন করে চলে গেলো ভীড়ে মিশে গেলো।এরপরআবারআমি আমার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি , অমলেন্দুকে ভুলেই গেছিলাম ।দিন সাতেক আগেবেলা ১২ টা নাগাদ দেখি আমার বাড়ির সামনে একজন প্রবীন লোক গায়ে ঢোলাপাঞ্জাবীরঙ চটা, একটা আধ ময়লা পাজামা, পায়ে হাওয়াই চটি কাঁধে ঝোলানো কাপড়ের ব্যাগ তাতে ভর্তি বইপত্র হবে শরীর ঝুঁকেগেছে, ক্লান্তপা টেনে টেনে রাস্তা দিয়ে উদ্ভ্রান্তের মতন যাচ্ছে খুউব ভালো করেখুঁটিয়ে দেখে চিনতে পারলাম অমলেন্দু, আমি কিছুবলার আগেই আমার মেয়ে এসে আমায় অ ভাবে আগ্রহ ভরে ওকে দেখছি দেখে প্রশ্নকরেপাগলা ডাক্তার কে কি দেখছো ? তুমি চেনো ওনাকে?আমি অবাক হয়ে মেয়েকেবলিতুই চিনিস ? কি করে ও ডাক্তার জানলি কি করে? মেয়ে বলে সেকি একে সবাইচেনেও আমার বান্ধবী যুথিকা দের বাড়ির কাছেই পুকুর ধারেরফ্ল্যাটে থাকেন,উনি ভালো ছাত্রছিলেন কিন্তু ডাক্তারী পড়তে গিয়ে মাথা খারাপ হয়ে গেছিলো কোথায় নিরুদ্দেশ হয়ে গেছিলো,ছ বছর আগে একদিন আবার উদয় হয়, তখন কিন্তু মাথা খারাপের কোনো লক্ষণ ইছিলো না, যুথিকার দিদি ডাক্তারী পাশ করেনি ফাইনাল পরীক্ষা, কি একটা বিষয় নিয়ে সমস্যা কিছুতেই বুঝতে পারছেনা তখন এই পাগলা ডাক্তারওদের বাড়িতেখুউবআসতো,যুথিকার দিদিকে উদবিগ্ন দেখে জানতে চান কিহয়েছে ?যুথিকার দিদি মিত্রাদিজানতোইনিডাক্তারী পড়তেন খুউব ভালো ছাত্র ছিলোতাই সমস্যার কথাটাবোলতেই উনি সহজসরলভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। বছর তিনেক আগে ওনার মা মারা যায় উনি মাকে দাহ কোরতে দিতে চান নি বোলেছিলেন মাকে ডাক্তার ভুল চিকিৎসা কোরে এই অবস্থা কোরেছেএই রোগের ওষুধ বিদেশে বেড়িয়েছে আনতে পারলে মাকে বাঁচানো যাবে, মৃত দেহ কিছুতেইছাড়বেনা পারার লোক জোর করে দাহ করিয়েছে, তার পর থেকে উনিকেমনউদ্ভ্রান্ত, চুপচাপ হ য়ে গেছেন, ঘর থেকে বের হননা, মাঝে মাঝে কাঁধে ঝোলায়বইনিয়ে বেরহন চেনা লোক দেখলে বলেন দামী দামী বই লাইব্রেরীতে দিয়েআসি গরীবছেলেরাপড়বে।রোজ পাড়ার দোকানে গিয়ে খবরের কাগজ পড়েন।স্নান খাওয়া কিছুর ঠিকনেই।
প্রায় ই বলেন চিকিৎসা ব্যবস্থাটা বিরাট ফাঁদ , ব্যবসা এরসাথে ওর কমিশনেরযোগ,
একবার চক্রে ফেঁসেছো কি সর্বসান্ত করে ছেড়ে দেবে, বিপদে পড়লে কি আর টাকার
কথা ভাবে ঘটি বাটি বেচেও চিকিৎসা করাবে ডাক্তার ওষুধ যা বোল্বে তাই।
অমলেন্দু কে দেখে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো , কি ছেলের কি হোয়ার কথা
আজ কোথায় থাকতো আর কোথায় কি অবস্থা? সত্যি এটাই মতিভ্রম নাকি অদৃষ্ট?
পালিয় গেলাম তাদের মাঝে।কিন্তু সেখানেও ঠাঁই পাওয়া শক্ত। এই অসহায় মানুষদের
অভাব, অভিযোগ কে মুলধন কোরে এক শ্রেনী রাজনীতি করে এরা ওতাদেরহাতের
পুতুল,ভয়েভক্তিকরে।এই অসহায় মানুষ দের ওরাই চালায় এদের মাথা তোলার নিজস্ব
কিছু বলার করারনেই। আমার মতন বাইরের লোকের সাথে যোগাযোগ রাখায় প্রবল আপত্তি, তাই আমিএগ্রামে কদিন, ওগ্রামেকদিনএইভাবে চষে বেড়ালাম রাজ্যের গ্রামাঞ্চল। আমারকাছে প্রস্তাব এলো শক্তিশালী দলে নাম লেখানোর আমি রাজি না হয়ে যাযাবর হলাম।
আমিঅস্থির ভাবে জানতে চাইলাম তারপর?তার পর আর কি? একদিন আমি আমার
বাড়িফিরে এলাম এসে শুনি বাবা চারবছর হোলো গত হয়েছেন। মা অসুস্থ বাতে শয্যা শায়ী দেখাশোনা করার মতো কেঊনেই,পাড়ার এক বৌদি এসে দেখাশোনা করেন , মামা বাড়ি থেকে মামা মাঝে মাঝে আসেন বাবার যে টাকা পয়সা ছিলো তা পোস্ট অফিসেজমাকরে মাসিকসুদেসবখরচখরচাচলে। বড় বাড়ি আর নেই সব জমি বাড়ি বিক্রীহয়ে গেছেবড় ফ্ল্যাটহয়েছে, এরইদোতলায়একটি দুকামড়ার ফ্ল্যাট মাকে দিয়েছে তাতে থাকে। আমি আসার পর মামা আর আসেননাআমাকে সব হিসাব বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাবার যা কিছু ছিলো সব ই নাকি বাবা মায়ের অসুখে খরচ হয়ে গেছে এখন শুধু ওই ফ্ল্যাট আর মাসে পাঁচ হাজার টাকার মতনসুদের টাকা, এতেই চলে। ডাক্তার ওষুধ পরিচারিকার খরচ অনান্য সবখরচমেটানোপ্রায়অসাধ্য কিন্তু কি উপায়?আমি বলি আচ্ছা অমলেন্দু তুমি ডাক্তারি না হয় না কোরলে, টিঊশানিতো কোরতেপারোএতোভালো ছাত্র ছিলে এখনপ্রাইভেট টিউশানএর খুউব চাহিদা ভালো উপার্জন।অমলেন্দুবলেওখানেও ব্যাপার আছে আমি তো কোনো স্কুলের শিক্ষক নই আমার ছাত্রজোটা মুস্কিল, তা ছাড়া এখনকার পড়া শুনা আমাদের সময়ের মতন নয় এখনবিরাট সিলেবাসে বিষয় অনেক জানতে হয় অনেক কিছুতবেআমাদের সময়ের মতন অতো বিস্তারিত ভাবেনয় এখন কার প্রশ্ন উত্তর সংক্ষিপ্তএকদম যেটুকু দরকার যাকে বলে টুদি পয়েন্ট বুঝলে? আমরা এই ধারায় অভ্যস্ত নই তাই অসুবিধাআছে।যাকআজআসিপরেএকদিন কথা হবে,এই বলে অমলেন্দু হনহন করে চলে গেলো ভীড়ে মিশে গেলো।এরপরআবারআমি আমার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি , অমলেন্দুকে ভুলেই গেছিলাম ।দিন সাতেক আগেবেলা ১২ টা নাগাদ দেখি আমার বাড়ির সামনে একজন প্রবীন লোক গায়ে ঢোলাপাঞ্জাবীরঙ চটা, একটা আধ ময়লা পাজামা, পায়ে হাওয়াই চটি কাঁধে ঝোলানো কাপড়ের ব্যাগ তাতে ভর্তি বইপত্র হবে শরীর ঝুঁকেগেছে, ক্লান্তপা টেনে টেনে রাস্তা দিয়ে উদ্ভ্রান্তের মতন যাচ্ছে খুউব ভালো করেখুঁটিয়ে দেখে চিনতে পারলাম অমলেন্দু, আমি কিছুবলার আগেই আমার মেয়ে এসে আমায় অ ভাবে আগ্রহ ভরে ওকে দেখছি দেখে প্রশ্নকরেপাগলা ডাক্তার কে কি দেখছো ? তুমি চেনো ওনাকে?আমি অবাক হয়ে মেয়েকেবলিতুই চিনিস ? কি করে ও ডাক্তার জানলি কি করে? মেয়ে বলে সেকি একে সবাইচেনেও আমার বান্ধবী যুথিকা দের বাড়ির কাছেই পুকুর ধারেরফ্ল্যাটে থাকেন,উনি ভালো ছাত্রছিলেন কিন্তু ডাক্তারী পড়তে গিয়ে মাথা খারাপ হয়ে গেছিলো কোথায় নিরুদ্দেশ হয়ে গেছিলো,ছ বছর আগে একদিন আবার উদয় হয়, তখন কিন্তু মাথা খারাপের কোনো লক্ষণ ইছিলো না, যুথিকার দিদি ডাক্তারী পাশ করেনি ফাইনাল পরীক্ষা, কি একটা বিষয় নিয়ে সমস্যা কিছুতেই বুঝতে পারছেনা তখন এই পাগলা ডাক্তারওদের বাড়িতেখুউবআসতো,যুথিকার দিদিকে উদবিগ্ন দেখে জানতে চান কিহয়েছে ?যুথিকার দিদি মিত্রাদিজানতোইনিডাক্তারী পড়তেন খুউব ভালো ছাত্র ছিলোতাই সমস্যার কথাটাবোলতেই উনি সহজসরলভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। বছর তিনেক আগে ওনার মা মারা যায় উনি মাকে দাহ কোরতে দিতে চান নি বোলেছিলেন মাকে ডাক্তার ভুল চিকিৎসা কোরে এই অবস্থা কোরেছেএই রোগের ওষুধ বিদেশে বেড়িয়েছে আনতে পারলে মাকে বাঁচানো যাবে, মৃত দেহ কিছুতেইছাড়বেনা পারার লোক জোর করে দাহ করিয়েছে, তার পর থেকে উনিকেমনউদ্ভ্রান্ত, চুপচাপ হ য়ে গেছেন, ঘর থেকে বের হননা, মাঝে মাঝে কাঁধে ঝোলায়বইনিয়ে বেরহন চেনা লোক দেখলে বলেন দামী দামী বই লাইব্রেরীতে দিয়েআসি গরীবছেলেরাপড়বে।রোজ পাড়ার দোকানে গিয়ে খবরের কাগজ পড়েন।স্নান খাওয়া কিছুর ঠিকনেই।
প্রায় ই বলেন চিকিৎসা ব্যবস্থাটা বিরাট ফাঁদ , ব্যবসা এরসাথে ওর কমিশনেরযোগ,
একবার চক্রে ফেঁসেছো কি সর্বসান্ত করে ছেড়ে দেবে, বিপদে পড়লে কি আর টাকার
কথা ভাবে ঘটি বাটি বেচেও চিকিৎসা করাবে ডাক্তার ওষুধ যা বোল্বে তাই।
অমলেন্দু কে দেখে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো , কি ছেলের কি হোয়ার কথা
আজ কোথায় থাকতো আর কোথায় কি অবস্থা? সত্যি এটাই মতিভ্রম নাকি অদৃষ্ট?

No comments:
Post a Comment