শুভ ২০১৬ শুরু কোরলাম রহস্য মিশ্রিত কল্প বিজ্ঞানের কাহিনী দিয়ে জানিনা কেমন লাগবে।
"দ্যভিঞ্চির হারানো ডায়েরীর খোঁজে" তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
নিউদিল্লীর এয়ার পোর্টে বিমান ছাড়তে দেড় ঘণ্টা দেরী করায় আমাকে জার্মাণীর মিউনিখ এয়ারপোর্টে কানেকটিং প্লেনের জন্য ১০ ঘণ্টা বসে কাটাতে হয়েছিলো যেহেতু আমার রোটারদাম অব্ধি প্লেনের টিকিট ছিলো আর ঠিক কতক্ষন বাদে ফ্লাইট প্রথমে নাজানা থাকায় আমার এখানে আসতে প্রায় বারো ঘণ্টা দেরী হয়ে গেলো,স্থানীয় সময় সকাল ৮টার জায়গায় সন্ধ্যা ৮টায় এসে নামলাম রোটারডাম এয়ারপোর্টে। আমার জন্য প্রফেসর পিটার মার্টিন্স অপেক্ষা কোরছিলেন তাঁর গাড়ি নিয়ে, সাদরে আমাকে জড়িয়ে ধরে তাঁর গাড়িতে নিজেই ড্রাইভ করে নিয়ে এলেন সুন্দর সাজানো গোছানো বাগান ঘেরা ছোট্ট বাংলো "সুইট হোম" এ। ডিসেম্বর মাসের ২৭ তারিখ বেশ ভালোই ঠাণ্ডা বাইরে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি সাথে হাওয়া, এমনিতে এখন এখানে বেশি সময় টাই অন্ধকার, সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড টাইম অনুসারে সকাল ৮টা৫০নাগাদ সুর্য্য ওঠে আর বিকাল৪টা৩৫ পি,এম, (১৬টা-৩৫মি)অস্ত যায় দিনের স্থায়িত্ব৭ঘণ্টা ৪৫ মিনিট সুর্য্যাস্তের ৮ ঘণ্টা বাদে (১২টা ৪৫) চাঁদ ওঠে,কিন্তু এই বৃষ্টি হাওয়ায় বাইরে বেরুনো দায়।আমাদের ওখানের থেকে সাড়ে চার ঘণ্টার সময়ের পার্থক্য। এখানের সাথে ঘড়িটা মিলিয়ে নিয়েছি।গরম কফি খেতে খেতে আমি পিটার কে বোল্লাম, আমি তোমার চিঠিটা পেয়ে ভীষন ব্যস্ত হয়েছি এখানে আসার জন্য কিন্তু একটা জরুরি যন্ত্র যা এখানে খুউব প্রয়োজন হবে সেটা না বানিয়ে আসতে পারছিলাম না তাই কয়েকটা দিন দেরী হয়ে গেলো। পিটার জানতে চাইলো যন্ত্র টা কি কাজে লাগবে? আমার উত্তর যথা সময়েই দেখতে পাবে মুখে ব লে বোঝানো সম্ভব নয়।পিটার মনে হোলো আমার কথায় খুশী হোলোনা তাই খানিক টা বিদ্রুপ করে বললো কি এমন যন্ত্র ডাক্তার উকিল? যা আমার মাথার থেকেও জটিল বোধ গম্যের বাইরে?আমি হেসে উত্তর দিলাম, না না তা নয় আসলে হাতে নাতে প্রয়োগ করে ফলা ফল দেখলে বোঝা যাবে যন্ত্রটা ঠিক কি কাজ করে মুখে বললে ঠিক বোঝাতে পারবোনা।তা যাক ওটাতো কাজ করার সময় দেখা যাবে আমি নিজেই এখনো জানিনা কতটা কার্য্যকর হবে?পিটার আমার কথায় খুশী হোলো ও বললো তাই বলো ওটা আণ্ডারট্রায়াল এক্সপেরিমেন্টাল স্টেজে আছে?আমি জানালাম একদম ঠিক ধরেছো।আমি এই বার পিটারকে বোললাম আচ্ছা তুমি কোথায় পেলে দ্য ভিঞ্চির ডায়েরির হারানো পাতা আর ওটা যে দ্য ভিঞ্চির হারানো ডায়েরীর পাতা বুঝলে কি করে?এর উত্তরে প্রফেসর আমাকে যা বলেছিলেন আমি আমার মতন করে তা ছোট নোটবুকে লিখে রাখি সেটা এই রকম। পিটার গতঅক্টোবর মাসে প্যারিসে অবস্থিত বিখ্যাত শিল্প গ্যালারি ও যাদুঘর লুৎভ্র সংগ্রহালয় (Museum du Louvre) দেখতে গেছিলেন সেখানে গবেষণা রত পদার্থ বিজ্ঞাণের মেধাবী ছাত্র স্টিভেন বার্গাস এর সাথে পরিচয় হলে ভাস্কর ,স্থপতি,সঙ্গীতজ্ঞ, সমরযন্ত্রের উদ্ভাবক,শিল্পী এবং বিংশ শতাব্দীর বহু আবিষ্কারের নেপথ্য জনক 'লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি(Leonardo di serpiero da vinchi) সমন্ধে অনেক নতুন তথ্য জানতে পারেন।ফ্লোরেন্সের ভিঞ্চি তে জন্ম গ্রহন করে ১৪ বছর বয়েসে ভ্যারিচ্চি ও কাছে শিক্ষানবীশ হিসাবে যোগদান করেন, এখানে বহু বিখ্যাত শিল্পিরা আসতেন, এখানেই লিওনার্দো হাতে কলমে প্রভুত কারিগরি জ্ঞাণার্জনকরেন, কারুকার্য্য,খোদাই,রসায়ন ,ধাতুবিদ্যা,নানা জিনিস বানানো,প্লাস্টার কাস্টিং,চামড়া দিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানানো তাঁর নেশা ছিলো। গতি বিদ্যা, কাঠের কাজ,ছবি আঁকা,ভাস্কর্য্য তৈরী ও মডেলিং, ২০ বছর বয়সে'গিল্ড অফ সেন্ট লুক'এর সদস্য হন পরে পরিচালক হন এটা চিকিৎসক ও চিত্রকরদের সংঘ। লুভোডিকো মুরো নামে
এক ব্যক্তিকে চিঠি দিয়ে শহরের নিরাপত্তা ও সু রক্ষার জন্য স্বয়ংক্রিয় কিছু যন্ত্র আবিস্কারের উল্লেখ করে জানান তারপর ভেনিসে স্থানান্তরিত হয়ে সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানীতে কাজ করে তাঁর উদ্ভাবনী শক্তির পুর্ণ বিকাশ ঘটান। শহরকে বহিরাগত শত্রুর আক্রমনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য স্থানান্তর যোগ্য প্রতি বন্ধকপ্রাচীর বা ব্যারিকেড তৈরী কোরতে সক্ষম হন। তিনি ডায়েরী তে খাতায় বহু বাস্তব ও অবাস্তব যন্ত্রের চিত্রাঙ্কন বর্ণনা করেন যা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এর মধ্যে আছে বাদ্য যন্ত্র,একটি যান্ত্রিক সৈন্য, হাইড্রোলিক পাম্প, ডানার মর্টার শেল এবং বাস্প কামান।জীবনের একটা বড় সময় তিনি উড্ডন সক্ষম যন্ত্র তৈরীতে কাটান বলা যায় বর্তমান আধুনিক এই বিমান তাঁর ই দান।রাজা ফ্রান্সিস ১ম মিলান দখল করলে তাঁর অধীনে থাকেন তাঁর বাস ভবনের পাশে'ক্লাস লুইস' ভবনে সেখানে ২রা মে ১৫১৯ তিনি মারা যান
এই ক্লাস লুইস ভবনের রক্ষণাবেক্ষণে স্টিভেন বার্গাসের প্রপিতামহ বহুদিন ছিলেন।তিনি এখানে পরিত্যক্ত কাগজ পত্রের
মাঝে ছেঁড়া প্রায় বিনষ্ট দুটি ডায়েরীরপাতা তাতে দুর্বোধ্য কিছু আঁকা আর লেখা ছিলো পান
এবং স যতনে গোপনে ওটা লুকিয়ে রাখেন।বংশে
এটার খবর কেঊ রাখেনি।সম্প্রতি
স্টিভেন বার্গাস পুরানো বাড়ি মেরামতীর কাজে পুরানো ভাঙ্গা মালপত্রের মধ্যে এটা আবিস্কার
করে সাথে প্রপিতামহের লেখা থেকে জিনিস টা কি জানতে পারেন। পিটার
কৌশলে জিনিস টা হাতিয়েছেন স্টিভেন বার্গাস কে ওটা চুরি হয়ে গেছে বলে ধোঁকা দিয়েছেন,বার্গাসের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়,চোরের কিল তাই নীরবে
হজম কোরেছে।
যেহেতু লেখা আঁকার বিন্দু বিসর্গ উদ্ধার করা পিটারের পক্ষে অসম্ভব এবং পিটার জানে এটা একমাত্র ডাক্তার উকিল ই পারবেন উদ্ধার কোরতে তাই তাঁর শরণাপন্ন হয়েছেন, তাঁকে এখানে আসার জন্য একান্ত আবেদন অনুনয় বিনয়, পিটার এটাও জানেন ডাক্তার উকিলের নাম প্রচার, কোনো খ্যাতির প্রয়োজন নেই ঊনি এমনিতেই বিশ্ব বিখ্যাত নির্লোভ ,বিজ্ঞানের সাধক, পরোপকারী তাই তিনিই একমাত্র পরিত্রাতা, তঁকেই স্মরণ কোরেছেন।
পিটারের উপরের কথা থেকে স্পষ্ট যে পিটার লোভী,স্বার্থপর,কু মতলব আছে , তাই আমি ও সতর্ক, আমি চিঠি পেয়েই আঁচ কোরেছিলাম কাছা কাছি বহু বিশিষ্ট বিজ্ঞাণী থাকতেও সুদুর ভারতের আমাকে কেনো প্রয়োজন হোলো?,তাছড়া এটা বিশ্ব বিজ্ঞানীদের সবার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এটা আন্তর্জাতিক ব্যাপার এটা প্রচারিত হওয়া দরকার। বুঝলাম আমি যদি ওই আঁকা লেখা টা বুঝে পিটারকে জানাই ও জেনেই আমাকে শেষ করে দেবে যাতে কেঊ না জানতে পারে আসল সত্য টা।আমি যে লেখা আঁকার অর্থ উদ্ধার কোরতে সক্ষম এটা পিটার ভালো ভাবেই জানে তাই আমি ও কিছুটা চালাকি কোরবো ঠিক কোরলাম।বোললাম বাঃ বেশ এটা নিয়ে বেশি ঢাক ঢোল না পেটানোই ভালো বিষয় টা তোমার আমার মধ্যে গোপনে সীমাবদ্ধ থাকাটাই বাঞ্ছনীয় আর আমি চাইনা এই বিষয়ে আমার নাম জড়াক, আমি দেশে ফিরে গেলে তুমি যা হয় কোরো, আমি যদি উদ্ধার কোরতে সক্ষম হই তোমাকেই শুধু বোলে দিয়ে যাবো আমি ওই নক্সার কোনো কপি ও চাইনা। তবে ক'দিন লাগবে এটা উদ্ধার কোরতে জানিনা আগে দেখি আদৌ আমার দ্বারা সম্ভব হবে কিনা?
পিটার আমাকে বোললো এটা তোমার কাছে জল ভাত,তুমি কত কঠিন বিষয় সমাধান কোরেছো আমি জানি, এটা তো তোমার সে তুলনায় জানা বিষয় তোমার কাছে।লিওনার্দোকে নিয়ে তোমার অনেক পড়াশুনা আছে অনেক গবেষণা কোরেছো, বহু লেখা আমি বিভিন্ন ম্যাগাজিনে পড়েছি ওনার চিকিৎসা শাস্ত্রে এনাটমির ব্যাখ্যা, রসায়নের তত্ত্ব, যন্ত্রের বণর্ণা এমনকি ওনার আঁকা,স্থাপত্য, ভাস্কর্য শিল্প কলার উপর গবেষণা পত্র গুলো আমি সম্প্রতি আনিয়ে পড়ে দেখেছি এমন গভীর জ্ঞান ভাবা যায় না। আমি বোললাম এগুলো কিছুই নয় অনেকে অনেক বেশী জানেন কেঊ প্রকাশ করে কেঊ করেনা।পিটার চমকে উঠে বোলে ফেললো তাহলে তো এই কাগজ পেলে অনেকেই কেল্লা ফতে কোরে ফেলবে সেটা হতে দেওয়া যাবেনা এই অমুল্য সম্পদ আমি পেয়েছি এটা আমার একার । আমি বোললাম একশো বার সত্যি সে কথা।তবে আগে উদ্ধার করি ওটা কতো মুল্যবান তখন বোঝা যাবে, এমন তো হতে পারে ওটা হিজি বিজি আঁকা লেখা কোনো দাম ই নেই তখন ?
পিটার চেঁচিয়ে ওঠে বলে তা হোতেই পারেনা আমি এই রকম আঁকা লেখা ওনার দেখেছি যেগুলো প্রকাশিত হয়েছে, এটা কিছুটা জটিল অন্য রকম অনেক অংক আছে,সঙ্কেত বোঝাই তাই এটা ফেলনা নয়। আমি বোললাম হোতেই পারে আগে দেখি তাছড়া আমি যখন দেখবো গভীর মন সংযোগ দরকার তাই একান্ত নিরিবিলিতে কাগজ কলম নিয়ে বোসতে হবে বাইরের কেউ এসে না ব্যাঘাত ঘটায়। পিটার তক্ষুণী বলে ওঠে নানা একদম আলাদা ব্যবস্থা আমি কোরেই রেখেছি ভিতরের গোপন ঘরে কেউ জান্তেই পারবেনা ও ঘরে কি হোচ্ছে?আমি বোল লাম বেশভালো এটাই চাই। আমি দুদিন ঐ ঘরে দিন রাত কাজ কোরবো খাবার নিয়ে চিন্তা কোরতে হবেনা আমার সাথে আমার খাবার আছে কাজের সময় আমি বাইরের খাবার খাইনা। আমি এক নাগাড়ে কাজ করে যাই কাজ শেষ হোলে অন্য খাওয়া দাওয়া। আমাকে ওই ঘরে নিয়ে গিয়ে কাজটা বুঝিয়ে দাও কাজ হয়ে গেলে ওই ঘর থেকে বেরুবো তার আগে নয়।
আশা করি আগামী পরশু কাজটা মিটে যাবে তখন বুঝিয়ে দিতে পারবো কি কোরতে পারলাম।
পিটার আমাকে আগ্রহ ভরে ভিতরের নির্দ্দিষ্ট ঘরে নিয়ে গেলো, ঘরে একটা ছোট খাট তাতে পরিস্কার বিছনা পাতা, পাশে ছোট লেখার টেবিল, খাবার ডেস্ক আলাদা আছে। আগে থেকেই ব্যাবস্থা পাকা ,বুঝলাম আমাকে নজর বন্দী করে রাখার মোক্ষম ব্যবস্থা,নিশ্চয় চারপাশে গোপন ক্যামেরার ব্যবস্থাও আছে আমার প্রতি মুহুর্তের গতিবিধি লক্ষ্য রাখার জন্য সামনাসামনি যতোই আমার প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি আনুগত্য দেখাক আমাকে পিটার মনে মনে এক ফোঁটাও বিশ্বাস করেনা বুঝি,শুধু কাজ বাগানোর জন্য আমায় তোয়াজ কোরছে,কাজ মিটলে আমার কি দশা হবে জানিনা তবে আমিও তৈরী আছি।আমি এ রকম পরিস্থিতিতে আগেও পড়েছি তাই আমি সদা প্রস্তুত আমার আত্মরক্ষার সব কিছু আমার সাথে সাথেই থাকে।আমার সাথে খাদ্যের বিকল্প আমার ই আবিস্কৃত ইন্সটাফুড পিল ভেষজ বটিকা'পুষ্টি' আছে ,সর্বরোগ হর 'সঞ্জীবন'বটিকা আছে সাথে আছে ভেরিয়েবল হাই এফিসিয়েন্সী ইলেক্ট্রো ম্যাগ্নেটিক সোনিক্লেজার কমপ্যাক্ট ওয়েভ ফর্ম জেনারেটর কাম ডেস্ট্রয়ার,এর সাহার্য্যে ১ কিমি দুরের যেকোন বস্তু সে প্রাণী বা জড়বস্তু যাই হোক নিঃশ্চুপ হয়ে যায় বজ্রাঘাতের মতন আঘাত হানে অথচ অদৃশ্য তরঙ্গ । হাতের রিস্টে ঘড়ির মতন লাগানো থাকে, ছোট মার্কারি লিথিয়াম ট্যাবলেট ব্যাটারীতে চলে।এর প্রবল শক্তির তরঙ্গের শক সব বিকল করে স্তদ্ধ করে দেয়।অন্ধকারে দেখার আর ছবি তোলার জন্য ডার্ক ভিশন মাইক্রো ভিঊয়ার কাম ইমেজ সাঊন্ড রেকর্ডার চশ্মায় লাগানো আছে লেন্স আর ফ্রেমে।ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার আছিলায় আমি স্পেস স্যুটের মতন মাথা থেকে পায়ের নখ অব্ধিএক্টা পাতলা পোষাক,স্বচ্ছ, অথচ বাইরের আঘাত হাওয়া বাতাস কোনো গ্যাস,গন্ধ থেকে রক্ষা করে।আমি দেশের বাইরে যখন কোথাও যাই তখন আমার সাথে এই সব ই থাকে,আর এখানেতো বিপদের আশঙ্কা আছেই তাই অতিরিক্ত সতর্ক ।আমি ঘরের চার পাশে চোখ বুলিয়ে নিলাম,পিটার জানতে চাইলো ঘরটা পছন্দ হয়েছে কিনা? আমি জানালাম অপুর্ব এমন টাই আমি চেয়েছি। আমাকে এই ঘরে রেখে পিটার ভিতরে গেলো কিছুক্ষণ বাদে হাতে একটা বড় খাম নিয়ে এলো বুঝলাম ওর মধ্যেই আছে আসল রত্ন লিওনার্দোদার ডায়েরীর পাতা , আমার হাতে খামটা দিয়ে পিটার খানিকটা আদেশের ঢং এ আমায় বোললো দেখো কত তাড়া তাড়ি উদ্ধার কোরতে পারো,তোমার আমার দুজনেরই মুক্তি এর পর জোরে হেসে বলে আসলে এটা পাঠোদ্ধার হলে আমি পাবো আমার আকাঙ্খিত অমুল্য রত্ন ভাণ্ডার রাশি রাশি টাকা, খ্যাতি সারা বিশ্ব জানবে আমার নাম আর তুমিতো এগুলো চাওনা তুমি পাবে সাফল্যের আনন্দ , আমি ও বোললাম ঠিক ই বোলেছো আমি একা বিজ্ঞান তপস্বী আমার আর কি চাওয়া পাওয়া আমার অজানাকে জানাতেই আনন্দ।আমি খামের মধ্য থেকে বহু প্রাচীন হলদেহয়ে যাওয়া প্রায় ভঙ্গুর দুটি ৮"X ৬" সাইজের কাগজের পাতা বার কোরলাম, দুটি পাতাতে ইঞ্জিনিয়ারিং কোন যন্ত্র বা যানের ছবি আঁকা সাথে ছোট ছোট করে অংকে নানা মাপজোখ হিসাব আর অস্পষ্ট লেখা সব আবছা হয়ে এসেছে আমি পিটারকে বোললাম অনেক হিসাব পত্র আছে সাংকেতিক ভাষা বুঝতে সময় লাগবে তবেউদ্ধার কোরতে পারবো মনে হচ্ছে ,দুটো দিন সময় লাগতে পারে দেখি লেগে পড়ি কি হয়?পিটারের নির্দেশ বেশ লেগে যান তবে দেখবেন এর কোনো কপি কোরবেন না আপনার সাথে না থাকে আমি চাইনা কারো হাতে পড়ুক।আমি বলি সেকি কথা আমি কপি কোরবো কেনো ? আমার ছোটো ছোটো হিসাব নিকেশ কোরতে হতে পারে পার্ট পার্ট জটিল হিসাব আমি যেমন খাতায় কোরবো সবটাই আবার কেটে ও দেবো আমি আঁকা লেখা কোথাও নিয়ে যাবো না। এটা শুনে পিটার খুউব খুশি হয়ে আমাকে শুভ রাত্রি জানিয়ে চলে গেলো।,
আমি আতস কাঁচের মাধ্যমে ওই কাগজ দুটি খুঁটিয়ে দেখলাম বুঝলাম এটি অন্য কোন একটি বড় নক্সার আংশিক খণ্ডিত অংশের ,এটাই যথেষ্ট জটীল পুরো নক্সাটি আরো কত জটীল বুঝতেই পারছি এটা পুরোপুরি অপ্রকাশিত বলা যায়না কারন এই ধরনের আরো বেশ কিছু নক্সা দ্য ভিঞ্চি নিজেই প্রকাশ করে গেছেন এটা তারই কোনোটার প্রাথমিক পর্য্যায়ের কাজ, যাইহোক কাজটা তাঁরই তাই গুরুত্বপুর্ন ও মুল্যবান, তিনি এটা অপ্রয়োজনীয় মনে করে বাতিল করে দিয়ে থাকতে পারেন তবুও এটা গবেষণার বিষয়,এটা মিউজিয়ামের সম্পত্তি, কারো ব্যক্তি গত হেফাজতে থাকার কথা নয়।আমি প্রথম দিন রাতেই বুঝে যাই এটা একটা বিশেষ ধরনের উড়োজাহাজ যেটা সামরিক কাজে ব্যবহার করার জন্য বোমাবহন কারী,এটা প্রয়োজনে জলে ও ডাঙ্গায় অবতরণ ও সেখান থাকে উৎক্ষেপন সম্ভব অনেকটা আধুনিক হোভার ক্রাফটের মতোন।লেখাগুলি দুর্বোধ্য অস্পষ্ট, আমি পাতা দুটির আনুবীক্ষণিক চিত্র আমার আবিস্কৃত চশমা বীক্ষণ ক্যাম রেকোর্ডারে তুলে নিই, এটা আমার আর পাঁচটা চশমার মতোই দেখতে তাই বাইরে থেকে দেখে আলাদা কোরে বোঝার ঊপায় নেই এর বিশেষত্ব।আমার এমন কিছু চশমা আছে যেগুলো বিশেষ বিশেষ কাজের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরী।সারারাত ঘুমাইনি ভোরের দিকে ঘুমিয়ে ছিলাম ঘুম থেকে ঊঠলাম এখানের সময় সকাল ৯টা সুর্য্য তখনো ওঠেনি।ঘণ্টা খানেক বাদে পিটার হাজির হাতে গরম কফি কাপ,আমাকে এক কাপ এগিয়ে শুভ সকাল জানিয়ে জানতে চাইলো, কতদুর কি বোঝা গেছে?
আমি জানালাম এখনো ঠিক বলার মতো অবস্থা আসেনি তবে এটা দ্য ভিঞ্চির শেষ জীবনে উড্ডীন যানের প্রচেষ্টার নক্সা আপাতত মনে হচ্ছে অসম্পুর্ণ কাজ।আমি আমার ডায়েরী টা এগিয়ে দিলাম পাতার পর পাতা আমি হিজিবিজির মতন দাগ কেটেছি লিখেছি জানি অনেক অংক কষেছি। পিটার দেখে রেগে গিয়ে আমায় বোললো একি কোরেছো ডাক্তার উকিল তোমার খাতায় এগুলো এঁকেছো লিখেছো কেনো? আমি বারন কোরেছিলাম কিছুএঁকে লিখে নিতে পারবেনা,তা সত্বেও তুমি কেন এটা কোরেছো?আমি বোললাম এখন তো আমাকে হিসেব নিকেষ করার জন্য এগুলো তো কোরতেই হবে আমার ডায়েরীতে কোরছি যাতে এদিক সেদিকে না লেখা থেকে যায় এখান থেকে বেরুনোর আগে সব লেখা পাতা পুড়িয়ে দিয়ে যাবো দেখে নিও।আমি পিটার কে একটু বেশী রাতে আসতে বোললাম আসা করি এর মধ্যে সমাধান ক রে ফেলবো এটা আসলে কিসের নক্সা, পিটার আচ্ছা বলে চলে গেলো। আমি মনে মনেঠিক কোরলাম যেহেতু এই নক্সাটা পিটার হাতছাড়া কোরবেনা এটাকে তাই যেভাবেই হোক এটাকে ওর কাছ ছাড়া কোরতেই হবে যাতে ও কোন ভাবেই এর ফায়দাটা না তুলতে পারে অ যেম্ন স্টিভেন বার্গাস কে প্রতারণা কোরেছে ওকেও তেমনি ভাবে প্রতারিত হতে হবে এটা ওর কাজে লাগবেনা।আমি ভালোভাবে নক্সাটা বুঝে নেবার পর আমার আবিস্কৃত রাসায়নিক ট্রাই মিথাইল অক্সি ক্লোরোপার অক্সাইডের দ্রবনে নক্সা দুটো ডুবিয়ে রুম হিটারেই শুকিয়ে নিলাম এই দ্রবনে ডোবানোয় ৭২ ঘণ্টা বাদে নক্সার আঁকা মুছে কাগজ দুটো সাদা হয়ে যাবে এখন কিছুই ধরা যাবেনা। রাতে পিটার এলে তাকে বোললাম এটা দ্যভিঞ্চির প্রকাশিত স্পেস ক্রাফট নক্সার প্রাথমিক রাফ স্কেচ তবে বিষয় টা পাকাপাকি নিশ্চিত হতে গেলে জার্মানীতে একবার কালকে আমার বন্ধু স্যামুয়েল হিথ্রোর কাছে গিয়ে আমার একটা গবেষণায় তৈরী দ্য ভিঞ্চির ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িংস এর তালিকা বিবরণী দেওয়া আছে সেটা দেখে আসতে হবে ওটা দেখে বলে দিতে পারবো এটা কোন নক্সার সংশ্লিষ্ট ।প্রথমে পিটার আপত্তি জানালেও যখন জানালাম আমি কোনো আঁকা লেখা নিয়ে যাবনা আর ওটা নাপেলে এই কাজটার কোনো মুল্য ই থাকবেনা পণ্ডশ্রম হবে। তখন পিটার অগত্যা রাজী হোলো । কাল সকাল১০ টায় বেরুবো ঠিক হোলো।বেরূনোর আগে পিটার আমার ডায়েরীটা দেখতে চাইলো আমি দেখালাম ডায়েরীতে কোনো লেখা আঁকা পাতা নেই, বোললাম ওই লেখা পাতা গুলো রাতে পুড়িয়ে দিয়েছি আর লাগবেনা ওই দেখো ঘরের কোনে পোড়া কাগজএর ছাই পড়ে আছে। আসলে আমি ডায়েরীর পাতাগুলো মোনো সোডিয়াম পেন্টা থ্যালেট পাঊডার দিয়ে ঘষে অদৃশ্য কোরে দিয়েছিলাম বাড়ি ফিরে আবার পলি কার্বোনিল
সাক্সিনেট পাঊডার ঘষে লেখা আঁকা ফিরিয়ে আনা যাবে।এগুলো সব ই আমার আবিষ্কার।
আমি জার্মাণী তে গিয়ে অনেক দিনের বন্ধু স্যামুয়েল হিথ্রো কে সাংকেতিক পত্রের মাধ্যমে জানালাম আমি বিপদাপন্ন আমাকে অবিলম্বে দেশে ফেরার প্লেনের টিকিট কেটে ফেরার ব্যবস্থা করে দাও পিতার প্তের ব্যপারটা ধরতে পারিনি আমি বোলেছিলাম এতা ঐ ইন্ডেক্সের সাংকেতিক কোড এটা শুধু স্যামুয়েল বুঝবে। স্যামুয়েল ব্যাপার কিছুটা আঁচ করে পিটার কে বোললো আজ রাত্রি টা থাক তে হবে ওটা ভল্টের লকার থেকে কাল সকালে আনতে হবে বা ডাক্তার উকিল ওখানে দেখে নিয়ে ফিরে যাবেন। স্যামুয়েল নিজেই পিটারের বাড়ি আমাকে পৌঁছে দিয়ে আসবেন আমি কাল ১টার মধ্যেই রোটারডাম পৌঁছে যাবো।পিটার খানিকটা অসন্তুষ্ট হয়েই আমাকে স্যামুয়েলএর বাড়িতে রেখে ফিরে গেলো।
পরদিন সকালেই প্লেনের টিকিট কেটে প্লেন ধরে দেশে ফিরে এলাম দেশে ফিরে আমার ডায়েরী থেকে আর চশমা ক্যামেরায় তোলা ছবি গুলো আমি ক্লাস লুইস মিঊজিয়ামের কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিই সেখান থেকে আমার ছবিগুলো পেয়ে আমাকে জানিয়ে দেয় আমার ধারণা সঠিক এগুলো রাফ স্কেচ এর পরিবর্তন করে কতক গুলি ছবি প রে এঁকে ছিলেন যেগুলি সংগ্রহ শালায় আছে তথাপি এটা একটা মুল্যবান নথী ছিলো, প্রমানাভাবে পিটার ছাড়া পেয়ে যায়, আমি এর উপর যে কাজ করেছি এবং সাফল্য পেয়েছি সে ঘটনা পরে জানাবো
যেহেতু লেখা আঁকার বিন্দু বিসর্গ উদ্ধার করা পিটারের পক্ষে অসম্ভব এবং পিটার জানে এটা একমাত্র ডাক্তার উকিল ই পারবেন উদ্ধার কোরতে তাই তাঁর শরণাপন্ন হয়েছেন, তাঁকে এখানে আসার জন্য একান্ত আবেদন অনুনয় বিনয়, পিটার এটাও জানেন ডাক্তার উকিলের নাম প্রচার, কোনো খ্যাতির প্রয়োজন নেই ঊনি এমনিতেই বিশ্ব বিখ্যাত নির্লোভ ,বিজ্ঞানের সাধক, পরোপকারী তাই তিনিই একমাত্র পরিত্রাতা, তঁকেই স্মরণ কোরেছেন।
পিটারের উপরের কথা থেকে স্পষ্ট যে পিটার লোভী,স্বার্থপর,কু মতলব আছে , তাই আমি ও সতর্ক, আমি চিঠি পেয়েই আঁচ কোরেছিলাম কাছা কাছি বহু বিশিষ্ট বিজ্ঞাণী থাকতেও সুদুর ভারতের আমাকে কেনো প্রয়োজন হোলো?,তাছড়া এটা বিশ্ব বিজ্ঞানীদের সবার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এটা আন্তর্জাতিক ব্যাপার এটা প্রচারিত হওয়া দরকার। বুঝলাম আমি যদি ওই আঁকা লেখা টা বুঝে পিটারকে জানাই ও জেনেই আমাকে শেষ করে দেবে যাতে কেঊ না জানতে পারে আসল সত্য টা।আমি যে লেখা আঁকার অর্থ উদ্ধার কোরতে সক্ষম এটা পিটার ভালো ভাবেই জানে তাই আমি ও কিছুটা চালাকি কোরবো ঠিক কোরলাম।বোললাম বাঃ বেশ এটা নিয়ে বেশি ঢাক ঢোল না পেটানোই ভালো বিষয় টা তোমার আমার মধ্যে গোপনে সীমাবদ্ধ থাকাটাই বাঞ্ছনীয় আর আমি চাইনা এই বিষয়ে আমার নাম জড়াক, আমি দেশে ফিরে গেলে তুমি যা হয় কোরো, আমি যদি উদ্ধার কোরতে সক্ষম হই তোমাকেই শুধু বোলে দিয়ে যাবো আমি ওই নক্সার কোনো কপি ও চাইনা। তবে ক'দিন লাগবে এটা উদ্ধার কোরতে জানিনা আগে দেখি আদৌ আমার দ্বারা সম্ভব হবে কিনা?
পিটার আমাকে বোললো এটা তোমার কাছে জল ভাত,তুমি কত কঠিন বিষয় সমাধান কোরেছো আমি জানি, এটা তো তোমার সে তুলনায় জানা বিষয় তোমার কাছে।লিওনার্দোকে নিয়ে তোমার অনেক পড়াশুনা আছে অনেক গবেষণা কোরেছো, বহু লেখা আমি বিভিন্ন ম্যাগাজিনে পড়েছি ওনার চিকিৎসা শাস্ত্রে এনাটমির ব্যাখ্যা, রসায়নের তত্ত্ব, যন্ত্রের বণর্ণা এমনকি ওনার আঁকা,স্থাপত্য, ভাস্কর্য শিল্প কলার উপর গবেষণা পত্র গুলো আমি সম্প্রতি আনিয়ে পড়ে দেখেছি এমন গভীর জ্ঞান ভাবা যায় না। আমি বোললাম এগুলো কিছুই নয় অনেকে অনেক বেশী জানেন কেঊ প্রকাশ করে কেঊ করেনা।পিটার চমকে উঠে বোলে ফেললো তাহলে তো এই কাগজ পেলে অনেকেই কেল্লা ফতে কোরে ফেলবে সেটা হতে দেওয়া যাবেনা এই অমুল্য সম্পদ আমি পেয়েছি এটা আমার একার । আমি বোললাম একশো বার সত্যি সে কথা।তবে আগে উদ্ধার করি ওটা কতো মুল্যবান তখন বোঝা যাবে, এমন তো হতে পারে ওটা হিজি বিজি আঁকা লেখা কোনো দাম ই নেই তখন ?
পিটার চেঁচিয়ে ওঠে বলে তা হোতেই পারেনা আমি এই রকম আঁকা লেখা ওনার দেখেছি যেগুলো প্রকাশিত হয়েছে, এটা কিছুটা জটিল অন্য রকম অনেক অংক আছে,সঙ্কেত বোঝাই তাই এটা ফেলনা নয়। আমি বোললাম হোতেই পারে আগে দেখি তাছড়া আমি যখন দেখবো গভীর মন সংযোগ দরকার তাই একান্ত নিরিবিলিতে কাগজ কলম নিয়ে বোসতে হবে বাইরের কেউ এসে না ব্যাঘাত ঘটায়। পিটার তক্ষুণী বলে ওঠে নানা একদম আলাদা ব্যবস্থা আমি কোরেই রেখেছি ভিতরের গোপন ঘরে কেউ জান্তেই পারবেনা ও ঘরে কি হোচ্ছে?আমি বোল লাম বেশভালো এটাই চাই। আমি দুদিন ঐ ঘরে দিন রাত কাজ কোরবো খাবার নিয়ে চিন্তা কোরতে হবেনা আমার সাথে আমার খাবার আছে কাজের সময় আমি বাইরের খাবার খাইনা। আমি এক নাগাড়ে কাজ করে যাই কাজ শেষ হোলে অন্য খাওয়া দাওয়া। আমাকে ওই ঘরে নিয়ে গিয়ে কাজটা বুঝিয়ে দাও কাজ হয়ে গেলে ওই ঘর থেকে বেরুবো তার আগে নয়।
আশা করি আগামী পরশু কাজটা মিটে যাবে তখন বুঝিয়ে দিতে পারবো কি কোরতে পারলাম।
পিটার আমাকে আগ্রহ ভরে ভিতরের নির্দ্দিষ্ট ঘরে নিয়ে গেলো, ঘরে একটা ছোট খাট তাতে পরিস্কার বিছনা পাতা, পাশে ছোট লেখার টেবিল, খাবার ডেস্ক আলাদা আছে। আগে থেকেই ব্যাবস্থা পাকা ,বুঝলাম আমাকে নজর বন্দী করে রাখার মোক্ষম ব্যবস্থা,নিশ্চয় চারপাশে গোপন ক্যামেরার ব্যবস্থাও আছে আমার প্রতি মুহুর্তের গতিবিধি লক্ষ্য রাখার জন্য সামনাসামনি যতোই আমার প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি আনুগত্য দেখাক আমাকে পিটার মনে মনে এক ফোঁটাও বিশ্বাস করেনা বুঝি,শুধু কাজ বাগানোর জন্য আমায় তোয়াজ কোরছে,কাজ মিটলে আমার কি দশা হবে জানিনা তবে আমিও তৈরী আছি।আমি এ রকম পরিস্থিতিতে আগেও পড়েছি তাই আমি সদা প্রস্তুত আমার আত্মরক্ষার সব কিছু আমার সাথে সাথেই থাকে।আমার সাথে খাদ্যের বিকল্প আমার ই আবিস্কৃত ইন্সটাফুড পিল ভেষজ বটিকা'পুষ্টি' আছে ,সর্বরোগ হর 'সঞ্জীবন'বটিকা আছে সাথে আছে ভেরিয়েবল হাই এফিসিয়েন্সী ইলেক্ট্রো ম্যাগ্নেটিক সোনিক্লেজার কমপ্যাক্ট ওয়েভ ফর্ম জেনারেটর কাম ডেস্ট্রয়ার,এর সাহার্য্যে ১ কিমি দুরের যেকোন বস্তু সে প্রাণী বা জড়বস্তু যাই হোক নিঃশ্চুপ হয়ে যায় বজ্রাঘাতের মতন আঘাত হানে অথচ অদৃশ্য তরঙ্গ । হাতের রিস্টে ঘড়ির মতন লাগানো থাকে, ছোট মার্কারি লিথিয়াম ট্যাবলেট ব্যাটারীতে চলে।এর প্রবল শক্তির তরঙ্গের শক সব বিকল করে স্তদ্ধ করে দেয়।অন্ধকারে দেখার আর ছবি তোলার জন্য ডার্ক ভিশন মাইক্রো ভিঊয়ার কাম ইমেজ সাঊন্ড রেকর্ডার চশ্মায় লাগানো আছে লেন্স আর ফ্রেমে।ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার আছিলায় আমি স্পেস স্যুটের মতন মাথা থেকে পায়ের নখ অব্ধিএক্টা পাতলা পোষাক,স্বচ্ছ, অথচ বাইরের আঘাত হাওয়া বাতাস কোনো গ্যাস,গন্ধ থেকে রক্ষা করে।আমি দেশের বাইরে যখন কোথাও যাই তখন আমার সাথে এই সব ই থাকে,আর এখানেতো বিপদের আশঙ্কা আছেই তাই অতিরিক্ত সতর্ক ।আমি ঘরের চার পাশে চোখ বুলিয়ে নিলাম,পিটার জানতে চাইলো ঘরটা পছন্দ হয়েছে কিনা? আমি জানালাম অপুর্ব এমন টাই আমি চেয়েছি। আমাকে এই ঘরে রেখে পিটার ভিতরে গেলো কিছুক্ষণ বাদে হাতে একটা বড় খাম নিয়ে এলো বুঝলাম ওর মধ্যেই আছে আসল রত্ন লিওনার্দোদার ডায়েরীর পাতা , আমার হাতে খামটা দিয়ে পিটার খানিকটা আদেশের ঢং এ আমায় বোললো দেখো কত তাড়া তাড়ি উদ্ধার কোরতে পারো,তোমার আমার দুজনেরই মুক্তি এর পর জোরে হেসে বলে আসলে এটা পাঠোদ্ধার হলে আমি পাবো আমার আকাঙ্খিত অমুল্য রত্ন ভাণ্ডার রাশি রাশি টাকা, খ্যাতি সারা বিশ্ব জানবে আমার নাম আর তুমিতো এগুলো চাওনা তুমি পাবে সাফল্যের আনন্দ , আমি ও বোললাম ঠিক ই বোলেছো আমি একা বিজ্ঞান তপস্বী আমার আর কি চাওয়া পাওয়া আমার অজানাকে জানাতেই আনন্দ।আমি খামের মধ্য থেকে বহু প্রাচীন হলদেহয়ে যাওয়া প্রায় ভঙ্গুর দুটি ৮"X ৬" সাইজের কাগজের পাতা বার কোরলাম, দুটি পাতাতে ইঞ্জিনিয়ারিং কোন যন্ত্র বা যানের ছবি আঁকা সাথে ছোট ছোট করে অংকে নানা মাপজোখ হিসাব আর অস্পষ্ট লেখা সব আবছা হয়ে এসেছে আমি পিটারকে বোললাম অনেক হিসাব পত্র আছে সাংকেতিক ভাষা বুঝতে সময় লাগবে তবেউদ্ধার কোরতে পারবো মনে হচ্ছে ,দুটো দিন সময় লাগতে পারে দেখি লেগে পড়ি কি হয়?পিটারের নির্দেশ বেশ লেগে যান তবে দেখবেন এর কোনো কপি কোরবেন না আপনার সাথে না থাকে আমি চাইনা কারো হাতে পড়ুক।আমি বলি সেকি কথা আমি কপি কোরবো কেনো ? আমার ছোটো ছোটো হিসাব নিকেশ কোরতে হতে পারে পার্ট পার্ট জটিল হিসাব আমি যেমন খাতায় কোরবো সবটাই আবার কেটে ও দেবো আমি আঁকা লেখা কোথাও নিয়ে যাবো না। এটা শুনে পিটার খুউব খুশি হয়ে আমাকে শুভ রাত্রি জানিয়ে চলে গেলো।,
আমি আতস কাঁচের মাধ্যমে ওই কাগজ দুটি খুঁটিয়ে দেখলাম বুঝলাম এটি অন্য কোন একটি বড় নক্সার আংশিক খণ্ডিত অংশের ,এটাই যথেষ্ট জটীল পুরো নক্সাটি আরো কত জটীল বুঝতেই পারছি এটা পুরোপুরি অপ্রকাশিত বলা যায়না কারন এই ধরনের আরো বেশ কিছু নক্সা দ্য ভিঞ্চি নিজেই প্রকাশ করে গেছেন এটা তারই কোনোটার প্রাথমিক পর্য্যায়ের কাজ, যাইহোক কাজটা তাঁরই তাই গুরুত্বপুর্ন ও মুল্যবান, তিনি এটা অপ্রয়োজনীয় মনে করে বাতিল করে দিয়ে থাকতে পারেন তবুও এটা গবেষণার বিষয়,এটা মিউজিয়ামের সম্পত্তি, কারো ব্যক্তি গত হেফাজতে থাকার কথা নয়।আমি প্রথম দিন রাতেই বুঝে যাই এটা একটা বিশেষ ধরনের উড়োজাহাজ যেটা সামরিক কাজে ব্যবহার করার জন্য বোমাবহন কারী,এটা প্রয়োজনে জলে ও ডাঙ্গায় অবতরণ ও সেখান থাকে উৎক্ষেপন সম্ভব অনেকটা আধুনিক হোভার ক্রাফটের মতোন।লেখাগুলি দুর্বোধ্য অস্পষ্ট, আমি পাতা দুটির আনুবীক্ষণিক চিত্র আমার আবিস্কৃত চশমা বীক্ষণ ক্যাম রেকোর্ডারে তুলে নিই, এটা আমার আর পাঁচটা চশমার মতোই দেখতে তাই বাইরে থেকে দেখে আলাদা কোরে বোঝার ঊপায় নেই এর বিশেষত্ব।আমার এমন কিছু চশমা আছে যেগুলো বিশেষ বিশেষ কাজের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরী।সারারাত ঘুমাইনি ভোরের দিকে ঘুমিয়ে ছিলাম ঘুম থেকে ঊঠলাম এখানের সময় সকাল ৯টা সুর্য্য তখনো ওঠেনি।ঘণ্টা খানেক বাদে পিটার হাজির হাতে গরম কফি কাপ,আমাকে এক কাপ এগিয়ে শুভ সকাল জানিয়ে জানতে চাইলো, কতদুর কি বোঝা গেছে?
আমি জানালাম এখনো ঠিক বলার মতো অবস্থা আসেনি তবে এটা দ্য ভিঞ্চির শেষ জীবনে উড্ডীন যানের প্রচেষ্টার নক্সা আপাতত মনে হচ্ছে অসম্পুর্ণ কাজ।আমি আমার ডায়েরী টা এগিয়ে দিলাম পাতার পর পাতা আমি হিজিবিজির মতন দাগ কেটেছি লিখেছি জানি অনেক অংক কষেছি। পিটার দেখে রেগে গিয়ে আমায় বোললো একি কোরেছো ডাক্তার উকিল তোমার খাতায় এগুলো এঁকেছো লিখেছো কেনো? আমি বারন কোরেছিলাম কিছুএঁকে লিখে নিতে পারবেনা,তা সত্বেও তুমি কেন এটা কোরেছো?আমি বোললাম এখন তো আমাকে হিসেব নিকেষ করার জন্য এগুলো তো কোরতেই হবে আমার ডায়েরীতে কোরছি যাতে এদিক সেদিকে না লেখা থেকে যায় এখান থেকে বেরুনোর আগে সব লেখা পাতা পুড়িয়ে দিয়ে যাবো দেখে নিও।আমি পিটার কে একটু বেশী রাতে আসতে বোললাম আসা করি এর মধ্যে সমাধান ক রে ফেলবো এটা আসলে কিসের নক্সা, পিটার আচ্ছা বলে চলে গেলো। আমি মনে মনেঠিক কোরলাম যেহেতু এই নক্সাটা পিটার হাতছাড়া কোরবেনা এটাকে তাই যেভাবেই হোক এটাকে ওর কাছ ছাড়া কোরতেই হবে যাতে ও কোন ভাবেই এর ফায়দাটা না তুলতে পারে অ যেম্ন স্টিভেন বার্গাস কে প্রতারণা কোরেছে ওকেও তেমনি ভাবে প্রতারিত হতে হবে এটা ওর কাজে লাগবেনা।আমি ভালোভাবে নক্সাটা বুঝে নেবার পর আমার আবিস্কৃত রাসায়নিক ট্রাই মিথাইল অক্সি ক্লোরোপার অক্সাইডের দ্রবনে নক্সা দুটো ডুবিয়ে রুম হিটারেই শুকিয়ে নিলাম এই দ্রবনে ডোবানোয় ৭২ ঘণ্টা বাদে নক্সার আঁকা মুছে কাগজ দুটো সাদা হয়ে যাবে এখন কিছুই ধরা যাবেনা। রাতে পিটার এলে তাকে বোললাম এটা দ্যভিঞ্চির প্রকাশিত স্পেস ক্রাফট নক্সার প্রাথমিক রাফ স্কেচ তবে বিষয় টা পাকাপাকি নিশ্চিত হতে গেলে জার্মানীতে একবার কালকে আমার বন্ধু স্যামুয়েল হিথ্রোর কাছে গিয়ে আমার একটা গবেষণায় তৈরী দ্য ভিঞ্চির ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িংস এর তালিকা বিবরণী দেওয়া আছে সেটা দেখে আসতে হবে ওটা দেখে বলে দিতে পারবো এটা কোন নক্সার সংশ্লিষ্ট ।প্রথমে পিটার আপত্তি জানালেও যখন জানালাম আমি কোনো আঁকা লেখা নিয়ে যাবনা আর ওটা নাপেলে এই কাজটার কোনো মুল্য ই থাকবেনা পণ্ডশ্রম হবে। তখন পিটার অগত্যা রাজী হোলো । কাল সকাল১০ টায় বেরুবো ঠিক হোলো।বেরূনোর আগে পিটার আমার ডায়েরীটা দেখতে চাইলো আমি দেখালাম ডায়েরীতে কোনো লেখা আঁকা পাতা নেই, বোললাম ওই লেখা পাতা গুলো রাতে পুড়িয়ে দিয়েছি আর লাগবেনা ওই দেখো ঘরের কোনে পোড়া কাগজএর ছাই পড়ে আছে। আসলে আমি ডায়েরীর পাতাগুলো মোনো সোডিয়াম পেন্টা থ্যালেট পাঊডার দিয়ে ঘষে অদৃশ্য কোরে দিয়েছিলাম বাড়ি ফিরে আবার পলি কার্বোনিল
সাক্সিনেট পাঊডার ঘষে লেখা আঁকা ফিরিয়ে আনা যাবে।এগুলো সব ই আমার আবিষ্কার।
আমি জার্মাণী তে গিয়ে অনেক দিনের বন্ধু স্যামুয়েল হিথ্রো কে সাংকেতিক পত্রের মাধ্যমে জানালাম আমি বিপদাপন্ন আমাকে অবিলম্বে দেশে ফেরার প্লেনের টিকিট কেটে ফেরার ব্যবস্থা করে দাও পিতার প্তের ব্যপারটা ধরতে পারিনি আমি বোলেছিলাম এতা ঐ ইন্ডেক্সের সাংকেতিক কোড এটা শুধু স্যামুয়েল বুঝবে। স্যামুয়েল ব্যাপার কিছুটা আঁচ করে পিটার কে বোললো আজ রাত্রি টা থাক তে হবে ওটা ভল্টের লকার থেকে কাল সকালে আনতে হবে বা ডাক্তার উকিল ওখানে দেখে নিয়ে ফিরে যাবেন। স্যামুয়েল নিজেই পিটারের বাড়ি আমাকে পৌঁছে দিয়ে আসবেন আমি কাল ১টার মধ্যেই রোটারডাম পৌঁছে যাবো।পিটার খানিকটা অসন্তুষ্ট হয়েই আমাকে স্যামুয়েলএর বাড়িতে রেখে ফিরে গেলো।
পরদিন সকালেই প্লেনের টিকিট কেটে প্লেন ধরে দেশে ফিরে এলাম দেশে ফিরে আমার ডায়েরী থেকে আর চশমা ক্যামেরায় তোলা ছবি গুলো আমি ক্লাস লুইস মিঊজিয়ামের কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিই সেখান থেকে আমার ছবিগুলো পেয়ে আমাকে জানিয়ে দেয় আমার ধারণা সঠিক এগুলো রাফ স্কেচ এর পরিবর্তন করে কতক গুলি ছবি প রে এঁকে ছিলেন যেগুলি সংগ্রহ শালায় আছে তথাপি এটা একটা মুল্যবান নথী ছিলো, প্রমানাভাবে পিটার ছাড়া পেয়ে যায়, আমি এর উপর যে কাজ করেছি এবং সাফল্য পেয়েছি সে ঘটনা পরে জানাবো


No comments:
Post a Comment