ডাক্তার উকিলের ডায়েরী থেকে-
আরশুলা ' তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
ডাক্তার উকিলের ডায়েরী থেকে সংগৃহীত আর একটি কাহিনী হুবহু তাঁর লেখার বয়ানেই লিখছি।প্রয়োজনে কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য বাদ দিতে হয়েছে দুর্বোধ্য বোলে।
১৯ শে সেপ্টেম্বরঃ কাল আমার বহুদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের সাফল্য,প্রাণি কোষ বিবর্ধকের জন্য যে ভেষজ ঔষধ ' বিবর্ধক' নিয়ে গবেষণা কোরছিলাম তার কাজ সম্পুর্ণ কোরতে সক্ষম হয়েছি তৈরী হয়েছে মুল উপাদান এটি ভেষজ উপাদানে প্রস্তুত এক প্রকার উৎসেচক যা অতি দ্রুত প্রাণী দেহের সমস্ত কোষ কে বহু গুন বিবর্ধণ কোরতে সক্ষম মুহুর্ত্তে প্রাণীটির আকৃতি বহুগুন বর্দ্ধিত কোরে দেয়।
পরমানুর যে বিভাজন প্রক্রিয়া ফিশান, তার চেয়েও দ্রুত এরকাজ কোষবিভাজনে। আমি হাইড্রার উপর এক ফোঁটা প্রয়োগ করে দেখেছি ওটা মুহুর্ত্তে ২ফুটের বন্সাই নারিকেল গাছের মতন আকৃতি নিয়েছিলো কিন্তু পরীক্ষাগারে বিশুদ্ধ জল তখন না থাকায় হাইড্রাটি তক্ষুনী নষ্ট হয়ে যায়,আমার পরীক্ষা গারে একটা কাঁচের শিশিতে ওই ভেষজ ঔষধ ' বিবর্ধক' এর একটু খানি অবশিষ্ট ছিলো সেটা মুখ বন্ধ করে রেখে এলাম। চারপাশের জানালা সব বন্ধ কিনা দেখে নিলাম। এই ঘরে বাইরে থেকে যেন কিছু না ঢুক্তে আর ঘর থেকেও যেন কিছু না বেরূতে পারে নিশ্চন্ত হয়ে , পরীক্ষাগারের দরজা বন্ধ করে তালা দিয়ে এলাম।
২০শে সেপ্টেম্বরঃ - রাত্রিটা প্রবল উত্তেজনার মধ্যেই কাটালাম,আমার এতোদিনের পরিশ্রম স্বার্থক, নিজে চোখেই দেখেছি , আমি আজ বেশ কিছুকাল যাবৎ প্রাণী জগৎ এর বিবর্তনের উপর গবেষণার কাজ শুরু করেছি, আদ্য প্রাণী প্রটোজোয়া থেকে এনিমেলিয়া পর্বের মেরুদণ্ডী প্রাণী হোমোস্যাপিনিয়াস, মানুষ গোত্রে উত্তরণের পদ্ধতিটা জানার প্রবল ইচ্ছা আমাকে পেয়ে বসেছে। আমি ইতি মধ্যে ই প্রাণীর ক্ষমতা ও দক্ষতার উন্মেষ ঘটানোর জন্য ভেষজ ঔষধ 'স্ফুরণ'প্রস্তুত করে প্রাথমিক পরীক্ষার কাজ সেরে রেখেছি।পরীক্ষা গারে একটা ছোট শিশিতে ওই 'স্ফুরণ' রাখা আছে। আমি প্রাণী জগতের অমেরুদণ্ডী প্রাণীর একদম প্রাথমিক দিকের সিলেন্ত্রারেটা collenterata) বা নিভারিয়া(Chinderia) পর্বের হাইড্রাকে বেছে নিয়েছি।হাইড্রা নাম টি কাল্পনিক বহু মস্তক বিশিষ্ট গ্রীক দৈত্যের নাম,যার মাথা কাটলে আরো বেশী মাথা গজাতো থেকে এসেছে। হাইড্রা হারানো বা ক্ষতিগ্রস্থ অংশ পুন রায় সৃষ্টি কোরতে পারে।হাইড্রার পুনরুতপত্তি ক্ষমতা প্রচণ্ড। এদের আকৃতি অতি ক্ষুদ্র ১০মিলিমিটার, মুক্তজীবি, মিস্টিজলে ক্টহিন বস্তু বা জলজ উদ্ভিদের পাতার নীচে নিন্ম মুখী ঝুলে থাকে,এরা মাংসাসী। কর্ষিকার সাহার্য্যে খাদ্যগ্রহণ করে,চলাফেরা করে দেহের সংকোচন প্রসারণের কর্ষিকার মাধ্যমে। এই হাইড্রার উপর আমার বিবর্ধকের প্রভাব আমাকে আশাতীত সাফল্য এনে দিয়েছে।
গত কাল হাইড্রাটির বিবর্ধনের অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে উচ্চতা হারিয়ে একটা গোলাকার পিণ্ডে পরিনত হয়েছিলো সেটিকে নষ্ট না করে একটি কাঁচের পাত্রে দু ফোঁটা স্ফুরণ দিয়ে টেবিলে রেখে এসেছি।
সারারাত উত্তেজনায় ঘুম হয়নি সকালে উঠেই পরীক্ষাগারে যাবার জন্য তালার চাবিটা নিয়ে সবে বেরুতে যাচ্ছি দেখি আমার পোষা এলসেসিয়ান কুকুর ভিক্টর এসে পাশে হাজির সাথে পোষা বিড়াল মোটকু। ওরাও আমার সাথে ল্যাবোরেটরীতে যেতে চায় আমাকে এরা একা কোথাও যেতে দিতে চায়না। অগত্যা সাথে চলল। ল্যাবের দরজার তালা খুলতে চাবিটা তালায় লাগানো মাত্র দেখি ভিক্টর প্রচণ্ড জোরে ভেউ ভেউ করে ডাকতে শুরু করেছে আর মোটকু ও লোম ফুলিয়ে গরর গরর করে আক্রোশে ফুঁশছে, বুঝলাম ওরা কোনো বিপদের আঁচ পেয়ে আমাকে সতর্ক কোরছে। আমি একটু থমকে আস্তে আস্তে দরজাটা খুললাম ,দ রজা খোলার সাথে সাথে আমার মুখের উপর দানার ঝাপটার মতন ঝাপটা আর একটা বড় পাখীর মতন কি দ্রুত ঊড়ে গেলো বাইরে বাগানের দিকে। আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না,সাবধানে ভিতরে ঢুকলাম, আলো গুলো সব জ্বালালাম যদিও ল্যবের ভিতর অটো লুমিনিয়াস ব্যবস্থা আছে ভিতরে আলর অভাব হয়না তবু অতিরিক্ত আলোর ব্যবস্থাও আছে। ভিতরে টেবিলে গিয়ে দেখি কালকের হাইড্রার পিন্ডটি উধাও, বিবর্ধক' আর স্ফুরণের
শিশি টেবিলে ভাঙ্গা পড়ে আছে, আমি হতভম্ব কি হোলো? বাইরে থেকে কেঊ আসেনি কি হতে পারে? হঠাৎ আমার মাথায় এসেগেলো আমার পরীক্ষাগারে ভিতরে সলিড স্টেট ইমেজ সেন্সিং আর রেকর্ডিং ব্যবস্থা আছে তাতেই সব ধরা থাকবে।
২১শে সেপ্টেম্বরঃ- আমি কালকের ঘটনাটা কাল ডায়েরীতে লিখতে পারিনি কারন বিস্ময়ে আমি হত চকিত হয়ে গেছিলাম এই অবিশাস্য কাণ্ড দেখে,আজ ধীরে সুস্থে লিখছি।কাল সন্ধ্যায় পরীক্ষাগার ছেড়ে বাংলোতে ফিরে আসি।আসার সময় হাইড্রাটার পিন্ডটা টেবিলে একটা কাঁচের পাত্রে রাখা ছিলো।ঘর থেকে চলে আসার প্রায় ঘণ্টা দুয়েক বাদে ঐ পিন্ডটা আকারে বড় হতে থাকে ছিলো ছোটো মার্বেল গুলির মত ৪ঘণ্টার মধ্যে বড় ফুটবলের আকার নেয়, তখন টেবিলের কাঁচের পাত্র থেকে টেবিলে গড়িয়ে পড়ে, এবার গড়াতে গড়াতে টেবিলেরশিশি বোতল গুলো ফেলে ভাঙতে থেকে ঐ পিণ্ডটার গা থেকে হাইড্রার কর্ষিকার মত বের হয় সেগুলো নাড়াচাড়া কোরতে শুরু করে, টেবিলের শেলফ থেকে বিক্রিয়কের শিশি বোতল পড়ে টেবিল ভেসে যায় সব মিশে একাকার এর মাঝে ওই হাইড্রার পিণ্ডটি মাখামাখি হয়ে যায়। তার কিছুক্ষন বাদে ওই হাইড্রাটি প্রচণ্ড বেগে ঘুরতে শুরু করে চক্রাকারে ,আস্তে আস্তে ময়দা র তালের মতোন লম্বা হয়ে যায় , মাথার কর্ষিকা দেহের নীচে সন্ধি পদের আকার নেয়, দেহের উপরের অংশ টা শক্ত খোলসের মত আকার নেয়। পিঠের দিকে চারটি ডানার মত গজায় একটা বিশাল আরশুলায় পরিনত হয়। প্রায় তিন ফুট দেহ। ডানা বা পাখনা গুলো বেশ বড় তাই পাঁই পাঁই করে ঘরে ঊড়তে শুরু করে। এখনে সেখানে উড়ে গিয়ে বসে।সকালে দরজা খুললে ওটাই সবেগে দরজা দিয়ে ঊড়ে বেরিয়ে যায়।
এগুলো সব ই সলিড স্টেট ইমেজ কপিয়ার থেকে পাওয়া তথ্য ও চিত্র। আমি হতাশ আমার গবেষণার এই মর্মান্তিক পরিনতিতে আমার কাছে কোনো প্রমান নেই , আমার দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন দুর্গমস্থানের থেকে সংগৃহীত দুঃস্প্রাপ্য সব উপকরণে প্রস্তুত বিবর্ধক আর স্ফুরণ নিঃশেষ। আমার এই তথ্য চিত্রের বিশ্বাস যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে কারণ এগুলো বানানো যায় প্রযুক্তির সাহার্য্যে। এখন চিন্তিত ওই দৈত্য আরশুলাটা কোথায় গেলো ওটার আয়ু কতক্ষন? ওটার আরো বিবর্তন ঘটেছে কিনা কিছুই বুঝতে পারছিনা?
২৫ শে সেপ্টেম্বরঃ- কালকের রাতে ঘটে যাওয়া দুঃখ জনক প রিনতিতে আমি বাকরুদ্ধ, আমার শেষ আশার প্রদীপ টাও কাল মাঝ রাতে নিভেগেছে সব প্রমান নিঃশ্চিহ্ন। গত তিন দিন আমি সারাক্ষণ ওই আরশুলাটা কোথায় চারপাশে খুঁজে বেড়িয়েছি, সাথে ভিক্ট র আর মোটকু কে নিয়ে, কোনো হদিশ পাইনি হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে,গত কাল রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাৎ রাত তখন আড়াইটে হবে , ঘুম ভাঙ্গলো ভিক্টরের প্রচণ্ড চিৎকারে দেখি ভিক্টর বাংলোর ঘেরা পাঁচিলের দিকে তাকিয়ে ঘর থেকে বেরুনোর জন্য ছট ফট কোরছে, মোটকু ও লোম ফুলিয়ে অই একি দিকে চেয়ে অস্থির হাব ভাব। আমি উঠে আমার ইলেকট্রণিক আল্ট্রা পাওয়ারফুল টর্চটানিয়ে বাগানের দিকে দেখবো ভাবছি ওই দিকে আমার গবেষণার জন্য বেশ কিছু হিংস্র শ্বাপদ খাঁচায় বন্দী আছে, রাতে ওদিকে যাওয়া অন্য কারোর পক্ষে নিরাপদ নয়, আমার ভিক্টর , মোটকু জানে ওরা নিরাপদ দুরত্বেই থাকে, আমার সাথে আত্মরক্ষার অস্ত্র আছে।মাইক্রো ওয়েভ কম্পাঊণ্ড লেজার ডিমিনিশিং গান
অদৃশ্য রশ্মিতরঙ্গ যার উপর পড়বে সে তক্ষুনী বিলুপ্ত হয়ে যাবে প্রচণ্ড তাপ শক্তিতে ভস্বিভুত হয়েযাবে শরীর।
বাইরে এসে ঐ পাঁচিলের দিকে এগিয়ে টর্চের আলোয় দেখি চিতা বাঘের খাঁচায় ছিন্নভিন্ন একটা প্রকাণ্ড বড় আরশুলা র মতো দেখতে প্রাণীর দেহাবশেষ দেহ টা খেয়ে নিয়েছে পাখনা ছিন্নভিন্ন পড়ে আছে চেনার উপায় নেই নেহাৎ আমার জানা তাই চিনলাম নইলে ওটা কোন পাখীর ডানা বলে মনে হতো, আমি গিয়ে দেখি মাথাটা চিবোচ্ছে পুঞ্জাক্ষি আর সন্ধিপদের টুকরো মুখ থেকে ঝুলছে তাই সনাক্ত করা গেল এটা ঐ আরশুলাটা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে এলাম,সব শেষ।
ডাক্তার উকিলের ডায়েরী থেকে সংগৃহীত আর একটি কাহিনী হুবহু তাঁর লেখার বয়ানেই লিখছি।প্রয়োজনে কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য বাদ দিতে হয়েছে দুর্বোধ্য বোলে।
১৯ শে সেপ্টেম্বরঃ কাল আমার বহুদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের সাফল্য,প্রাণি কোষ বিবর্ধকের জন্য যে ভেষজ ঔষধ ' বিবর্ধক' নিয়ে গবেষণা কোরছিলাম তার কাজ সম্পুর্ণ কোরতে সক্ষম হয়েছি তৈরী হয়েছে মুল উপাদান এটি ভেষজ উপাদানে প্রস্তুত এক প্রকার উৎসেচক যা অতি দ্রুত প্রাণী দেহের সমস্ত কোষ কে বহু গুন বিবর্ধণ কোরতে সক্ষম মুহুর্ত্তে প্রাণীটির আকৃতি বহুগুন বর্দ্ধিত কোরে দেয়।
পরমানুর যে বিভাজন প্রক্রিয়া ফিশান, তার চেয়েও দ্রুত এরকাজ কোষবিভাজনে। আমি হাইড্রার উপর এক ফোঁটা প্রয়োগ করে দেখেছি ওটা মুহুর্ত্তে ২ফুটের বন্সাই নারিকেল গাছের মতন আকৃতি নিয়েছিলো কিন্তু পরীক্ষাগারে বিশুদ্ধ জল তখন না থাকায় হাইড্রাটি তক্ষুনী নষ্ট হয়ে যায়,আমার পরীক্ষা গারে একটা কাঁচের শিশিতে ওই ভেষজ ঔষধ ' বিবর্ধক' এর একটু খানি অবশিষ্ট ছিলো সেটা মুখ বন্ধ করে রেখে এলাম। চারপাশের জানালা সব বন্ধ কিনা দেখে নিলাম। এই ঘরে বাইরে থেকে যেন কিছু না ঢুক্তে আর ঘর থেকেও যেন কিছু না বেরূতে পারে নিশ্চন্ত হয়ে , পরীক্ষাগারের দরজা বন্ধ করে তালা দিয়ে এলাম।
২০শে সেপ্টেম্বরঃ - রাত্রিটা প্রবল উত্তেজনার মধ্যেই কাটালাম,আমার এতোদিনের পরিশ্রম স্বার্থক, নিজে চোখেই দেখেছি , আমি আজ বেশ কিছুকাল যাবৎ প্রাণী জগৎ এর বিবর্তনের উপর গবেষণার কাজ শুরু করেছি, আদ্য প্রাণী প্রটোজোয়া থেকে এনিমেলিয়া পর্বের মেরুদণ্ডী প্রাণী হোমোস্যাপিনিয়াস, মানুষ গোত্রে উত্তরণের পদ্ধতিটা জানার প্রবল ইচ্ছা আমাকে পেয়ে বসেছে। আমি ইতি মধ্যে ই প্রাণীর ক্ষমতা ও দক্ষতার উন্মেষ ঘটানোর জন্য ভেষজ ঔষধ 'স্ফুরণ'প্রস্তুত করে প্রাথমিক পরীক্ষার কাজ সেরে রেখেছি।পরীক্ষা গারে একটা ছোট শিশিতে ওই 'স্ফুরণ' রাখা আছে। আমি প্রাণী জগতের অমেরুদণ্ডী প্রাণীর একদম প্রাথমিক দিকের সিলেন্ত্রারেটা collenterata) বা নিভারিয়া(Chinderia) পর্বের হাইড্রাকে বেছে নিয়েছি।হাইড্রা নাম টি কাল্পনিক বহু মস্তক বিশিষ্ট গ্রীক দৈত্যের নাম,যার মাথা কাটলে আরো বেশী মাথা গজাতো থেকে এসেছে। হাইড্রা হারানো বা ক্ষতিগ্রস্থ অংশ পুন রায় সৃষ্টি কোরতে পারে।হাইড্রার পুনরুতপত্তি ক্ষমতা প্রচণ্ড। এদের আকৃতি অতি ক্ষুদ্র ১০মিলিমিটার, মুক্তজীবি, মিস্টিজলে ক্টহিন বস্তু বা জলজ উদ্ভিদের পাতার নীচে নিন্ম মুখী ঝুলে থাকে,এরা মাংসাসী। কর্ষিকার সাহার্য্যে খাদ্যগ্রহণ করে,চলাফেরা করে দেহের সংকোচন প্রসারণের কর্ষিকার মাধ্যমে। এই হাইড্রার উপর আমার বিবর্ধকের প্রভাব আমাকে আশাতীত সাফল্য এনে দিয়েছে।
গত কাল হাইড্রাটির বিবর্ধনের অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে উচ্চতা হারিয়ে একটা গোলাকার পিণ্ডে পরিনত হয়েছিলো সেটিকে নষ্ট না করে একটি কাঁচের পাত্রে দু ফোঁটা স্ফুরণ দিয়ে টেবিলে রেখে এসেছি।
সারারাত উত্তেজনায় ঘুম হয়নি সকালে উঠেই পরীক্ষাগারে যাবার জন্য তালার চাবিটা নিয়ে সবে বেরুতে যাচ্ছি দেখি আমার পোষা এলসেসিয়ান কুকুর ভিক্টর এসে পাশে হাজির সাথে পোষা বিড়াল মোটকু। ওরাও আমার সাথে ল্যাবোরেটরীতে যেতে চায় আমাকে এরা একা কোথাও যেতে দিতে চায়না। অগত্যা সাথে চলল। ল্যাবের দরজার তালা খুলতে চাবিটা তালায় লাগানো মাত্র দেখি ভিক্টর প্রচণ্ড জোরে ভেউ ভেউ করে ডাকতে শুরু করেছে আর মোটকু ও লোম ফুলিয়ে গরর গরর করে আক্রোশে ফুঁশছে, বুঝলাম ওরা কোনো বিপদের আঁচ পেয়ে আমাকে সতর্ক কোরছে। আমি একটু থমকে আস্তে আস্তে দরজাটা খুললাম ,দ রজা খোলার সাথে সাথে আমার মুখের উপর দানার ঝাপটার মতন ঝাপটা আর একটা বড় পাখীর মতন কি দ্রুত ঊড়ে গেলো বাইরে বাগানের দিকে। আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না,সাবধানে ভিতরে ঢুকলাম, আলো গুলো সব জ্বালালাম যদিও ল্যবের ভিতর অটো লুমিনিয়াস ব্যবস্থা আছে ভিতরে আলর অভাব হয়না তবু অতিরিক্ত আলোর ব্যবস্থাও আছে। ভিতরে টেবিলে গিয়ে দেখি কালকের হাইড্রার পিন্ডটি উধাও, বিবর্ধক' আর স্ফুরণের
শিশি টেবিলে ভাঙ্গা পড়ে আছে, আমি হতভম্ব কি হোলো? বাইরে থেকে কেঊ আসেনি কি হতে পারে? হঠাৎ আমার মাথায় এসেগেলো আমার পরীক্ষাগারে ভিতরে সলিড স্টেট ইমেজ সেন্সিং আর রেকর্ডিং ব্যবস্থা আছে তাতেই সব ধরা থাকবে।
২১শে সেপ্টেম্বরঃ- আমি কালকের ঘটনাটা কাল ডায়েরীতে লিখতে পারিনি কারন বিস্ময়ে আমি হত চকিত হয়ে গেছিলাম এই অবিশাস্য কাণ্ড দেখে,আজ ধীরে সুস্থে লিখছি।কাল সন্ধ্যায় পরীক্ষাগার ছেড়ে বাংলোতে ফিরে আসি।আসার সময় হাইড্রাটার পিন্ডটা টেবিলে একটা কাঁচের পাত্রে রাখা ছিলো।ঘর থেকে চলে আসার প্রায় ঘণ্টা দুয়েক বাদে ঐ পিন্ডটা আকারে বড় হতে থাকে ছিলো ছোটো মার্বেল গুলির মত ৪ঘণ্টার মধ্যে বড় ফুটবলের আকার নেয়, তখন টেবিলের কাঁচের পাত্র থেকে টেবিলে গড়িয়ে পড়ে, এবার গড়াতে গড়াতে টেবিলেরশিশি বোতল গুলো ফেলে ভাঙতে থেকে ঐ পিণ্ডটার গা থেকে হাইড্রার কর্ষিকার মত বের হয় সেগুলো নাড়াচাড়া কোরতে শুরু করে, টেবিলের শেলফ থেকে বিক্রিয়কের শিশি বোতল পড়ে টেবিল ভেসে যায় সব মিশে একাকার এর মাঝে ওই হাইড্রার পিণ্ডটি মাখামাখি হয়ে যায়। তার কিছুক্ষন বাদে ওই হাইড্রাটি প্রচণ্ড বেগে ঘুরতে শুরু করে চক্রাকারে ,আস্তে আস্তে ময়দা র তালের মতোন লম্বা হয়ে যায় , মাথার কর্ষিকা দেহের নীচে সন্ধি পদের আকার নেয়, দেহের উপরের অংশ টা শক্ত খোলসের মত আকার নেয়। পিঠের দিকে চারটি ডানার মত গজায় একটা বিশাল আরশুলায় পরিনত হয়। প্রায় তিন ফুট দেহ। ডানা বা পাখনা গুলো বেশ বড় তাই পাঁই পাঁই করে ঘরে ঊড়তে শুরু করে। এখনে সেখানে উড়ে গিয়ে বসে।সকালে দরজা খুললে ওটাই সবেগে দরজা দিয়ে ঊড়ে বেরিয়ে যায়।
এগুলো সব ই সলিড স্টেট ইমেজ কপিয়ার থেকে পাওয়া তথ্য ও চিত্র। আমি হতাশ আমার গবেষণার এই মর্মান্তিক পরিনতিতে আমার কাছে কোনো প্রমান নেই , আমার দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন দুর্গমস্থানের থেকে সংগৃহীত দুঃস্প্রাপ্য সব উপকরণে প্রস্তুত বিবর্ধক আর স্ফুরণ নিঃশেষ। আমার এই তথ্য চিত্রের বিশ্বাস যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে কারণ এগুলো বানানো যায় প্রযুক্তির সাহার্য্যে। এখন চিন্তিত ওই দৈত্য আরশুলাটা কোথায় গেলো ওটার আয়ু কতক্ষন? ওটার আরো বিবর্তন ঘটেছে কিনা কিছুই বুঝতে পারছিনা?
২৫ শে সেপ্টেম্বরঃ- কালকের রাতে ঘটে যাওয়া দুঃখ জনক প রিনতিতে আমি বাকরুদ্ধ, আমার শেষ আশার প্রদীপ টাও কাল মাঝ রাতে নিভেগেছে সব প্রমান নিঃশ্চিহ্ন। গত তিন দিন আমি সারাক্ষণ ওই আরশুলাটা কোথায় চারপাশে খুঁজে বেড়িয়েছি, সাথে ভিক্ট র আর মোটকু কে নিয়ে, কোনো হদিশ পাইনি হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে,গত কাল রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাৎ রাত তখন আড়াইটে হবে , ঘুম ভাঙ্গলো ভিক্টরের প্রচণ্ড চিৎকারে দেখি ভিক্টর বাংলোর ঘেরা পাঁচিলের দিকে তাকিয়ে ঘর থেকে বেরুনোর জন্য ছট ফট কোরছে, মোটকু ও লোম ফুলিয়ে অই একি দিকে চেয়ে অস্থির হাব ভাব। আমি উঠে আমার ইলেকট্রণিক আল্ট্রা পাওয়ারফুল টর্চটানিয়ে বাগানের দিকে দেখবো ভাবছি ওই দিকে আমার গবেষণার জন্য বেশ কিছু হিংস্র শ্বাপদ খাঁচায় বন্দী আছে, রাতে ওদিকে যাওয়া অন্য কারোর পক্ষে নিরাপদ নয়, আমার ভিক্টর , মোটকু জানে ওরা নিরাপদ দুরত্বেই থাকে, আমার সাথে আত্মরক্ষার অস্ত্র আছে।মাইক্রো ওয়েভ কম্পাঊণ্ড লেজার ডিমিনিশিং গান
অদৃশ্য রশ্মিতরঙ্গ যার উপর পড়বে সে তক্ষুনী বিলুপ্ত হয়ে যাবে প্রচণ্ড তাপ শক্তিতে ভস্বিভুত হয়েযাবে শরীর।
বাইরে এসে ঐ পাঁচিলের দিকে এগিয়ে টর্চের আলোয় দেখি চিতা বাঘের খাঁচায় ছিন্নভিন্ন একটা প্রকাণ্ড বড় আরশুলা র মতো দেখতে প্রাণীর দেহাবশেষ দেহ টা খেয়ে নিয়েছে পাখনা ছিন্নভিন্ন পড়ে আছে চেনার উপায় নেই নেহাৎ আমার জানা তাই চিনলাম নইলে ওটা কোন পাখীর ডানা বলে মনে হতো, আমি গিয়ে দেখি মাথাটা চিবোচ্ছে পুঞ্জাক্ষি আর সন্ধিপদের টুকরো মুখ থেকে ঝুলছে তাই সনাক্ত করা গেল এটা ঐ আরশুলাটা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে এলাম,সব শেষ।

No comments:
Post a Comment