Sunday, 17 July 2016

"ডাক্তার উকিল ও বিশ্বের অমীমাংসিত রহস্য (২) রহস্য ঘেরা " ইস্টার দ্বীপ "

"ডাক্তার উকিল ও বিশ্বের অমীমাংসিত রহস্য (২)
রহস্য ঘেরা " ইস্টার দ্বীপ "
-----------------------

>>তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় <<                                                                                 
গত কাল আমাদের  চতুর্দশ তম আন্তর্জাতীক
'প্রত্নতাত্ত্বিক ও নৃতত্ত্ব গবেষণায় ভুপ্রকৃতি বিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞানের গুরুত্ব পুর্ণ অব্দান ও  প্রয়োগ' বিষয়ে  আলোচনা সন্মেলন' শেষ হয়েছে
এবারে সভার স্থল  হিসাবে     দক্ষিণ আমেরিকার চিলি র স্যান্টিয়াগো কে বেছে নেওয়া  হয়েছিলো কারণ এবারের গুরুত্ব পুর্ণ আলোচ্য বিষয় ছিলো এই দক্ষিণ আমেরিকার চিলির অন্তর্গত প্রশান্ত মহাসাগরের রহস্যে ঘেরা ইস্টার দ্বীপের(Mysterious Easter Island) রহস্য ভেদের উপর আলোকপাত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি তাঁদের মুল্যবান গবেষণা লব্ধ অভিমত জানালেন বহু অজানা বিষয় উন্মোচিতহোলো,কিন্তু চিলি থেকে ২৩০০মাইল দূরে প্রশান্ত মহাসাগরে নৈসগির্ক সৌন্দর্য্যে ভরা প্রায় ৬৪ বর্গ মাইলের আগ্নেয় দ্বীপে যেখানে ৮৮৭টি দানবীয় পাথরের মূর্তি দিয়ে ঘেরা, ওজন কয়েক শত টন পর্য্যন্ত তার সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি, যেমন ঠিক কে বা কারা?,কোনসময়? কিসের জন্য? কিসের সাহার্য্যে এগুলো তৈরী করেছে?
প্রত্নতাত্বিক গবেষণায় যত দূর জানা যায় আনুমানিক ৪০০ খৃষ্ট পুর্বে পলিনেশীয় লোক জনের বসতি এখানে ছিলো
১৭২২ খৃঃ৬ই এপ্রিল প্রথম ইউরোপীয় ডাচ নাগরিক জ্যাকব রগিভেন (Jacob Roggerveen) জন মানব হীনএই দ্বীপে পদার্পন করেন দ্বীপের নাম তখন ছিলো রাপা নুই (Rapa Nui) দিন টা ছিলো রবিবার ইস্টার সান ডে তাই তিনি নাম করণ করেন ইস্টার দ্বীপ ( Easter Island) আনুমানিক এই দ্বীপে অতীতে তিনহাজারের মতন অধিবাসীর বাস ছিলো,তিন ধরণের বৈশিষ্ট পুর্ণ গোত্রের মানুষের উল্লেখ পাওয়া যায়তিনি উল্লেখ করেন সমুদ্রের দিকে পিছন ফেরা তিনটি পাথরের মূর্তি যার গায়ের রঙ তিন ধরনের  যা তিনটি দল বা স ম্প্রদায় নির্দ্দেশ করে, একদল গাঢ় কৃষ্ণ বর্ণ,এক দল কিছুটা লালচে ধরনের যা অনেকের ধারনা রেড ইণ্ডিয়ানের ইঙ্গিত আর অন্য দল লাল চুল ওয়ালা শ্যামলা গায়ের বর্ণ
রাপা নামে তাহিতির একটি দ্বীপ আছে আর নুই শব্দের অর্থ
'বড়' তাই রাপানুই বলতে রাপার থেকে আয়তনে বড় বোঝায় এই প্রশান্ত মহাসাগরের এক পাশে বহু কাল থেকে জাগ্রত এক আগ্নেয়গিরি আর তার ত্রিকোণ আকৃতির এই আগ্নেয় দ্বীপ  যা দৈর্ঘে পনেরো মাইল প্রস্থে দশ মাইল ছোট্ট সভ্য জগত থেকে বিচ্ছিন্ন নিঃসঙ্গ মহা সমুদ্রে ভাসমান একটি বিন্দু এই দ্বীপের সব থেকে কাছের জনমানবহীন  দ্বীপের দুরত্ব প্রায় ১৪০০ মাইল
ইস্টার আইল্যাণ্ড এক অমীমাংসীত রহস্যাবৃত অঞ্চল
, এখানে ৮৮৭টি দৈত্যাকার পাথরের মূর্তি  যা মোয়াই নামে পরিচিত পাওয়া গেছে ১৭৭৪ সালে  অল্প সংখ্যক মুর্তি দাঁড় করানো অবস্থায় বেশী ভাগ  মাটিতেশোয়ানো অবস্থায়,কিছু অসমাপ্ত ,অর্ধ নির্মিত, কিছু মাটিতে আংশিক কিছু পুরোটাই পোঁতা অবস্থায় পাওয়া গেছেআশে পাশের সমুদ্রের জলের তলায় বেশ কিছু মুর্তি পাওয়া গেছেএই দ্বীপ কে এই মূর্তি গুলোই রহস্যময় করে তুলেছে আছে নানা হাজারো কিম্বদন্তী কল্প কাহিনী মূর্তি গুলি আগ্নেয় শিলা গ্রানাইট পাথরে খোদাই করে করা মূর্তি গুলোর আকৃতিদেখে অনুমান দুই শ্রেণীর মানুষ একদল শাসক অন্য দল ছিলো দাস যদি পলিনেশীয়রা দাস হয় তাদের দাস বানালো কারা? এখানে লম্বা কান আর ছোট কান দু রকমের মুর্তি  দুটি সম্প্রদায় ,শাসক আর দাস কে বোঝায় বলে ভাবা হয়
ইস্টার আইল্যাণ্ডের মাটি খুঁড়ে যে শবাধার পাওয়া গেছে  সে শবের ডিএন এ টেষ্ট করে জানা যায় এখানের বাসীন্দারা ছিলেন পলিনেশীয়ান
, আমেরিকান বা ইণ্ডিয়ান নয় অনেকের ধারনা এই মূর্তি পৃথিবীর কোনো মানুষের দ্বারা সৃষ্ট নয় ,মহাকাশের কোটি কোটি মাইল, আলোক বর্ষ দুরের কোনো গ্রহের বাসিন্দারা এখানে এসে সৃষ্টি করে গেছেন এই মহাকায় স্থাপত্য
বহুদিন ধরেই এই রহস্যাবৃত দ্বীপটিকে চাক্ষুষ দর্শণ করার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু সময় সুযোগ হয়ে ওঠেনি এবার যখন সুযোগ এসেছে তখন অব্শ্য ই একদিনের জন্য হোলেও ঘুরে আসবো বোলে স্থির কোরলাম 

বিশ্বের সব থেকে প্রত্যন্ত বিমান বন্দর  হাঙ্গারোয়া  যা রুপানুই তে অবস্থিত (
HangaRoa on RupaNui /Easter Island) চিলির স্যান্টিয়াগো বিমান বন্দর থেকে Mataveri International Air port এর উড়ানে এসেছি, বিমানে ৯ঘণ্টা সময় লাগলো এই৩৭৬০ কিমি পথ পাড়ি দিতে মাতাভেড়ী র দক্ষিণ পুর্ব  উপকুলথেকে শুরু কোরে  উত্তর পশ্চিম কুলে একমুখী বিমান অবতরণ ক্ষেত্র টি অবস্থিত,১০,৮৯০ ফিট দৈর্ঘ্য, যা র‍্যানকাঊ (Ranokau)পাহাড় কে  আর দ্বীপের অবশিষ্ট ভুমির থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে  এই দ্বীপ টি চিলির অধীনে এর ভু প্রকৃতি ,এটি আগ্নেয় দ্বীপ ,আকার বাঁকানো ত্রিভুজের মতনএর তিন কোণায় তিনটি আগ্নেয় জ্বালা মুখ এর উত্তর কোণে 'তেরেভাকা' দুই লক্ষ বছর আগে অগ্ন্যুৎপাত হয়ে ছিলো, আর তার ফলেই এই দ্বীপের ৯৫ শতাংশ ভুমির সৃষ্টিদক্ষিণ কোণে প্রাচীন তম আগ্নেয় গিরি 'পোকাটিকেআর দক্ষিণ পশ্চিমে 'রানাকাঊ' দ্বীপে প্রবল বেগে বায়ু বয় ,সমুদ্র চার পাশে তাই নাতিশিতোষ্ণ, জানা যায় এখানে প্রায় ৫০ ধরনের গাছ পালা আছে, পাম জাতীয় বৃক্ষ যাদের গড় উচ্চতা ১০ ফুটবড় গাছের নাম তোরোমিরো ঘাস আর গুল্ম জাতীয়  গাছে ভরা বহু পাথরের বড় বড় মুর্তি, প্রায় মূর্তিগুলি বিশেষ ভাবে নির্মিত বেদীর উপর বসানো যাকে বলা হয়  আহু এই দ্বীপের প্রতিটি অঞ্চলেই ১ থেকে ৫টি করে আহু রয়েছে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০র বেশী আহু রয়েছে কিন্তু বেশী ভাগ ই ছোটো ছোটো কোনো মূর্তি নেইআহুগুলি চৌকা কার চারদিক ব্যাসাল্ট পাথরএর চাঁই দিয়ে ঘেরাভিতরটা নুড়ি পাথর দিয়ে ভরাট করা এক এক দিকের দেওয়ালের ওজন প্রায় ১০ টন এক একটা আহুর গড় উচ্চতা ১৩ ফুট অনেক আহু৫০০ফুট অব্ধি চওড়া আহুর ওজন ৩০০থেকে ৯০০০ টনএই সব আহুর পিছনে আছে দেহ ভস্ব সংরক্ষণাগার,যেখানে আছে হাজারে হাজারে মানুষের দেহ ভস্ব,হাড় গোড় অনান্য অংশধারনা হয় এই আহু গুলোর রঙ প্রথম অবস্থায় সাদা ছিলো ও গুলোকে হলুদ লাল রঙে সাজানো হোতো মূর্তি গুলোকে বলে মোয়াই(Moai),এগুলোর পাথরের রঙ ছিলো হলুদ, কালো ক্রমে এগুলো ধুসর বর্ণে পরিনত হয়েছে ১১৩ টা আহুতে মুর্তি স্থাপিত আছে, বাকী গুলো দ্বীপের ইতঃস্তত ছড়ানো ছিটানো সম্ভবত আহুর উপরে সব মুর্তিগুলো রানোরারাকু  আগ্নেয়গিরির জ্বালা মুখের খনির পাথর দিয়ে প্রস্তুত এই পাথরকে 'টাফ" বলা হয়এগুলোর ভিতর ৫৩ টি মোয়াই, ব্যাসাল্ট,লাল স্কোরিয়া,সাদা স্কোরিয়া আর ট্রাফাইট জাতীয় পাথর দিয়ে তৈরী কিছু কিছু মুর্তির মাথায় অন্য পাথর রয়েছে মাথার এগুলোকে বলা হয় পুকা সব মোয়াই এর মাথায় পুকা নেই এজন্য লোকের ধারনা দল পতির মাথাতেই পুকা রাখা আছে 
বিজ্ঞানী জে
,ওয়ায়েন বেক ও তাঁর সহ কর্মীগন  রেডিও কার্বন পদ্ধতি তে নির্মান কাল নির্ণয় করার জন্য মোয়াই এর চোখে ব্যবহৃত প্রবাল আর আহু গুলোতে সাজানোর জন্য যে শৈবাল গুলি ব্যবহৃত হয়েছে তার পরীক্ষা করেছিলেন তার থেকে ধারনা হয় এই দ্বীপের আনাকোনা সৈকতে প্রথম আহু তৈরীর সময়কাল আনুমানিক ১১০০ খৃঃ আর শেষ ১৬০০খৃঃ, এও ধারনা করা হয় যেহেতু মোয়াইগুলি আহুতে স্থাপিত তাই এগুলিও ১৬০০ খৃঃ পরে নির্মিত হয়েছিলোতাঁর ধারণা ইস্টারদ্বীপের বাসিন্দারাই ঐ রানারারাকুর টাফ পাথর কে খোদাই করে এই মোয়াই গুলো বানিয়ে ছিলো মূর্তিগুলো আপাত দৃষ্টিতে এক রকম দেখতে মনে হোলেও গঠন প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্নআহুতেস্থাপিতসব চেয়ে বড় মোয়াই এর নাম পারো(Paro)এর উচ্চতা প্রায় ১০ মিটার ওজন ৭৫ টন মাথার পুকার ওজন ১২ টন,এর চেয়ে সামান্য ছোটো মোয়াই আছে টোঙ্গারিকিতে তার ওজন ৮৭ টনরানোরারাকুতে একটি অসমাপ্ত মোয়াই আছে সব চেয়ে ঊঁচু ২৩ মিটার আর ওজন ২৭০টন সাতটি বৃহদাকার ভাস্কর্য নেভাল অফ দ্য ওয়ার্ল্ড নামে পরিচিতএদের গড় উচ্চতা ১৪ ফুট গড় ওজন২০ টন, সবচেয়ে বড়টির উচ্চতা ৩২ ফুট ওজন৯০ টন
রাপানুই দ্বীপে প্রথম পলিনেশিয় দের আবির্ভাব কি ভাবে ঘটেছিলো ত নিয়েও নানা মত নানা ধারনা

অনেকের ধারনা পলিনেশিয়রা কাঠের তৈরী ছোটো ছোটো সরু নৌকা যাকে ক্যানো বলে তাতে চড়ে সাগরে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিতো
,এমনি কোনো দল প্রবল সমুদ্র স্রোতে, বা ঝড়ে ভেসে এই দ্বীপে এসে আটকে পড়েছিলো প্রায় ৪০০খৃঃপুর্বে এদের মধ্যেই দুটো সম্প্রদায় লম্বা কান
আর ছোট কান
, লম্বা কান শাসক শ্রেণী আর ছোটো কানের শ্রমিক শ্রেণী
শ্রমিক রাই পরিশ্রমী, তারা প্রথম এসে ছিলো তারাই এই পাথর খোদাই করে মোয়াই বানিয়েছে, বিশেষজ্ঞগনের এইরকম ই ধারণাএই দ্বীপে কিছু পাথরে খোদাই শিলালিপি ও চিত্রাঙ্কন পাওয়া গেছে শিলালিপি গুলি RongoRongo নামে পরিচিত এখনো এই লেখার পাঠোদ্ধার হয়নিচিত্র গুলির মধ্যে নভোশ্চরের পোষাক পড়া মুর্তির ছবির মতন আঁকা আছেএই শিলালিপি যখন কার লেখা তখন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অধিবাসীগণ লিখতে জানতো না,এশিয়া মহাদেশে প্রথম লেখার সুচনা
আমি  ইস্টার দ্বীপে দুদিন কাটিয়ে দক্ষিণ আমেরিকা ঘুরে কাল স ন্ধ্যায় ঝাড়্গ্রামে আমার বাংলো উন্মেষে ফিরেছি

আমার মনে হয় ইস্টার আইল্যাণ্ড প্রকৃত ই এক অমীমাংসীত রহস্যে ঘেরা দ্বীপ কারণ (১)একটা নির্জন আগ্নেয় দ্বীপে এতো বিশাল বিশাল একই ধরণের মনুষ্যাকৃতি মূর্তির কি প্রয়োজন ছিলো
? (২)এভাবে দ্বীপের চারপাশে সাজানোর উদ্দেশ্য কি কোনো কিছুর চিহ্নিত করণের বিশেষ করে ভুখণ্ড সনাক্ত করণের(Land Marking) জন্য? (৩)এই ছোট্ট দ্বীপে যেখানে জন বসতি তেমন থাকার পরিবেশ ই তেমন ছিলোনা এতো বিশাল কর্ম কাণ্ড কিভাবে সম্পন্ন হয়েছিলো? যেখানে পাথর খোদাই করা ওই বিশাল মুর্তি বহন স্থানান্তর বা উত্তোলন করার মতন যন্ত্রপাতি পরিকাঠামোই থাকা অসম্ভব   (৪) মুর্তি গুলোর সাদৃশ্য আর গঠন শৈলী থেকে ধারনা হয় বহু শত দক্ষ কারিগরের সন্মিলিত প্রয়াসের ফসল এই ৮৮৭ টি মোয়াই আর ৩০০টি আহু (৫) এই প্রত্যন্ত দুর্গম দ্বীপে এই মূর্তি গুলোর বিন্যাস কি বার্তার ইঙ্গিত বহন করে? (৫) এই দ্বীপ কি করে জন মানব হীন হয়ে দীর্ঘকাল জন সমক্ষের অগোচরে ছিলো ?১১০০খৃঃ থেকে ১৬০০ খৃঃ কারন মোয়াই গুলো যখন নির্মিত হয় তখন অনেক মানুষের বাস ছিলো অথচ ১৭৭২ খৃ পুর্বে কেঊ জানতে পারিনি  ১৭২ বছরের মধ্যে জন শূণ্য হয়ে যায় ? অথচ ১৬০০খৃঃ পর মূর্তি গুলো যদি আহুর উপর স্থাপিত হয়ে থাকে কারা করেছিলো কিভাবেই বা তারা নিশ্চহ্ন হয়ে গেছিলো?
 (৭) পাথরের অন্য কোনো শিল্প নিদর্শন যেমন প্রাসাদ
, ব্যবহার করার সামগ্রী, চাকা এই সব পাওয়া যায়নি, নৌকার ব্যবহৃত হাল  ইত্যাদি
(৮) বেশী ভাগ মূর্তি সমুদ্রের দিকে পিছন করে দাঁড় করানো কেন? (৯) অত লোক যে দ্বীপে বাস কোরতো সেখানে চাষ বাসের কোনো  উল্লেখ নেই কেনো? (১০) এক টা দ্বীপে ৩০০হাজার লোক বস বাস কোরলে তাদের জীবন ধারনের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর কিছু প্রামান্য তথ্য থাকা চাই
 




No comments:

Post a Comment