Tuesday, 21 April 2015

Kalpo bigyaner kahini কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী ১থেকে৫


কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী - ১ থেকে ৫

১) বিশ্বের বিস্ময় ডাক্তার উকিল

(প্রারম্ভঃআমি ১৯৭৪ সালে অক্টোবর মাসে সরকারি চাকুরির সুবাধে কিছুদিন পুরানো ঝাড়্গ্রামে এক বাংলো বাড়িতে অল্প কয়েকদিন ভাড়াটে হিসাবে দুই বন্ধুদের সাথে গিয়ে ছিলাম,বন্ধুরা ১মাস থেকে চলে যায় ঐ বাংলোর মালিক আমাকে এমনিতেই ওনার বাংলোতে প্রয়োজনে থাকার জন্য বলেন, আমাকে খুব স্নেহ করতেন,আমার পরিচয় পাবার পর চুচুড়াতে আমাদের বাড়িতে একদিন এসে ছিলেন। ওনার সাথে পরিচিত হবার পর  ওনাকে দেখেই এই লেখার সুচনা.১৯৬৫ সালে শ্রদ্ধেয় সত্যজিত রায়ের লেখা প্রথম প্রফেশর শঙ্কুর কাহিনী প্রকাশিত হয়, তখন থেকেই এই চরিত্রটি মনে গাঁথা ছিলো তার প্রভাব আরোপিত হয় আমার লেখার মধ্যে. ১৯৫৪-৫৫ সালে এদেশে ক ম্পিউটারের আগমন,১৯৬৫সালেComputer society of India 6th march শুরু হলেও ১৯৭৩ সালে IBM370 computer দিয়েই IIT Madras পড়াশুনার বিভাগ চালু করে।সুপার কম্পিউটারের প্রবেশ ও প্রসার  ঘটে ১৯৮০ র প রবর্ত্তী সময়।আমার কম্পিউটারের কাহিনীগুলি ঐ ১৯৮২-৮৩ সালের।পূর্বের লেখাগুলি,জুল ভার্ণ,এইচ জি ওয়েলস,আর্থার সি ক্লার্ক,বিভুতি ভুষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের'চাঁদেরপাহাড়'আর সুকুমার রায়ের জীব জন্তু বিষয়ক লেখার প্রভাব আছে।লেখাগুলি অনেক আগের তাই এখন প্রযুক্তি উন্নত হওয়ায় লেখাগুলির আকর্ষণ কম লাগতে পারে।যথা সময়ে প্রকাশ করতে না পারাটা আমার ব্যর্থতা।আমি কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী শুরু করলাম  পাঠকদের ভাল লাগলে পরবর্তী কাহিনী গুলি প্রকাশিত হবে নইলে এইটাই শুধু  প্রকাশিত হবে ।)

বিশ্বের বিস্ময় ডাক্তার উকিল গত কয়েক দিন ধরে ভাবছিলাম দিন কয়েকের জন্য কাছে কোথাও ঘুড়ে আসি,কথাটা মাথায় আস্তেই দীনু কাকার  কথা মনে হোলো। দীনু কাকার একটা  কটেজ আছে ঝাড়্গ্রামে । অনেকবার ওখানে যাবার জন্য বলেছেন,সুন্দর ব্যবস্থা, কেয়ারটেকারও আছে,যদুনাথ ,আমাকে চেনে।পুরানো ঝাড়্গ্রামে যাওয়ার পথে বাস রাস্তার ধারেই পাঁচিলঘেরা ছোট একতলা সাদা কটেজ।  দীনুকাকা আসার সময় আমায় বলেছিলেন"ঝাড়্গ্রাম যখন যাচ্ছ,একবার ডাক্তারউকিলেরবাংলোতে গিয়ে ওনার সাথে আলাপ করে খোঁজ নিয়ে এসো,ওনার বাংলোর নাম উন্মেষ"। দীনুকাকা একটা লম্বা শ্বাস ছেড়ে বললেন-জানিনা উনি এখনো বেঁচে আছেন কিনা?মনে হয় উনি সুস্থই থাকবেন, অবশ্য তাঁর অনেক বয়েস, এখন নব্বই পেরিয়ে গেছে। দীনুকাকা ডাক্তার উকিল সম্পর্কে বলতে শুরু করলেন,আমাকে বললেন,"তুমি আলাপ করলে দেখবে আশ্চর্য্য প্রতিভাবান মানুষ,জীবন্ত বিস্ময়।  এই বাস্তব পৃথিবীতে যে এই রকম মানুষ জন্মেছে এটা ভাবলে অবাক হতে হয়।দীনুকাকা খুব আবেগ প্রবন হয়ে উঠেছেন,বললেন 'আমি প্রথম পরিচয়েই বুঝেছিলাম উনি ভীষণ প্রতিভাবান ও সম্ভাবনাময় ব্যক্তিত্ব পরে যত দেখেছি,জেনেছি ততই মুগ্ধহয়েছি। ওনার সাথে প্রথম পরিচয় আজ থেকে প্রায় চল্লিশ বছর আগে।আমি তখন হ্যারিস এন্ড মার্টিন বুক সেলার্সএন্ড পাবলিকেশন প্রতিষ্ঠানে কাজ করি।এই প্রতিষ্ঠান উচ্চশিক্ষার প্রায় সমস্ত বিষয়ের বই প্রকাশনা করত,তাছাড়া বিশ্বের নানা ভাষার মূল্যবানবই এরা বিক্রী করত, খুব নামী প্রতিষ্ঠান।খুউব ব্যস্ত প্রতিষ্ঠান,ছাত্র-ছাত্রী,শিক্ষক,গবেষকদের ভীড় লেগেই থাকত।আমি অবশ্য কাউন্টারে বসতামনা, আমার কাজ ছিলো বইএর যোগান ঠিক রাখা।কাউন্টারে সেলস ম্যানেরা কোনো বিষয়ে অনুসন্ধান থাকলে, আমার কাছে জেনে খরিদ্দারকে সেই মতন জানাত।এক দিন বিকালের দিকে আমার কাছে কাউন্টার থেকেএকজন সেলস ম্যান এসে জানালো একজন ভদ্রলোক কতকগুলি প্রাচীন বইএর খোঁজ করছেন, যদি স্টকেনাথাকে তাহলে যোগার করেদেওয়া যাবে কিনা?কিম্বা কোথায় পাওয়াযাবে জানালে উনি সবিশেষ উপকৃত হবেন,এগুলি একান্ত জরুরী।বইএর তালিকা হাতে নিয়ে দেখি প্রায় সবগুলি প্রাচীন সংস্কৃতপুঁথী বিষয়ক,তার সাথে আবার জার্মাণ থেকে প্রকাশিত অত্যাধুনিক মূল্যবান চিকিতসা ও কারিগরি প্রযুক্তি বিজ্ঞান বিষয়ক বই।ঐ ভদ্রলোককে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতে বললাম। ভদ্রলোককে প্রথমে দেখে কেমন জানি একটা সম্ভ্রম আদায়করা ব্যাক্তিত্ব বলে মনে হোলো,দেখলে শ্রদ্ধাজাগে,গলারস্বর বেশ গুরু গম্ভীর।ভদ্রলোকের সাথে আলাপে জানলাম উনি পদার্থবিদ্যা,রসায়ন নিয়ে স্নাতক হওয়ার পর ডাক্তারি পড়ছিলেন এবং ডাক্তারির ফাইনাল পরীক্ষার মধ্যেই তাঁর বাবার মৃত্যু জীবনে এক আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়ে যায়।'  ভদ্রলোকের নামে দুটি পেশার কারন জিজ্ঞাসা করায়,দীনুকাকা জানালেন ভদ্রলোকের নাম উপেন্দ্র কিশোর লসকর সংক্ষেপে উকিল আর বিশ্বেরযেকোন বিশিষ্ট ডাক্তার তুল্যজ্ঞান,পর্যবেক্ষণ,বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা তাই এই নামে পরিচিতি।তিনি গবেষক বিজ্ঞানী,তাঁর গবেষণার বিষয়ওক্ষেত্র  বহু মুখী ।প্রাচীন ভেষজ চিকিতসা থেকে অত্যাধুনিক মহাকাশ গবেষণা সর্বক্ষেত্রেই অগ্রণী,তবে তিনি নিজের  কর্ম প্রতিভার জন্য বিন্দুমাত্র প্রচার বা প্রকাশ করতে কাউকে সুযোগ দেননি।তিনি প্রকাশিত হন,চাননি। এইজন্যই তিনি ঝাড়্গ্রামে একান্ত নিরিবিলিতে নিজস্ব পরিবেশের মধ্যে নিরলস গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।তিনি বহু দেশীয়  ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে বহু সমস্যার সমাধান করেছেন,কিন্তু তার নামযুক্ত হতে দেননি সেই সব মহান কাজের সঙ্গে। আমাকে দীনুকাকা বললেন-"তুমি তো বিজ্ঞান ভিত্তিক অনেক কল্পকাহিনী লেখ,ডাক্তার উকিলের সাথে আলাপ হলে দেখবে এমন অনেক তথ্য পাবে যা কাজে লাগিয়ে তুমি সারা জীবনে বহু আকর্ষণীয় লেখা লিখতে পারবে।" আমি দীনুকাকার কাছে ডাক্তার উকিলের সাথে দেখা করব  কথা দিয়ে চলে এলাম।  ক্রমশ-২   

২) বিশ্বের বিস্ময় ডাক্তার উকিল (অনুগ্রহ করেলেখাটা পড়ে মতামত দেবেন,কারন জানা দরকার পাঠকের এই ধরনের লেখার চাহিদা আছে কিনা? আর আমার লেখা সঠিক হচ্ছে কিনা?)
 ঝাড়্গ্রামে দীনুকাকার কটেজ 'অবসর' আমার খুউব মনের মতন জায়গা।রাস্তার ধারে পাঁচিল ঘেরা  সুন্দর ছিমছাম পরিবেশ ,কেয়ার টেকার যদুনাথ সব গুছিয়ে পরিপাটি করে রেখেছে।ঝাড়্গ্রাম পৌঁছাতে রাত হয়ে গেছিলো,কারন নভেম্বরের রাত ৭টাতে ফাঁকা।শাল বনে ঘেরা পুরানো ঝাড়্গ্রাম পৌঁছতে অনেক রাত মনে হচ্ছিল ।যদুনাথ সব রান্না করে রেখেছে তাই রাত না করে তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়লাম। সকালে চারপাশটা একটু ঘুরেফিরে দেখার জন্য বেরুলাম।পুরানো ঝাড়্গ্রামের দিকে কিছুটা এগুতে দেখলাম রাস্তার ডান দিকে একটা বালী কাঁকড় বিছানো রাস্তা দুপাশে শালবাগানের মধ্য দিয়ে ভিতর  কোন ঘর চোখে পড়েনা।বেশ কিছুটা যাওয়ার পর দেখলাম বাঁ পাশে কাঁটা তারের ঘন বেড়া দেওয়া বাগান।সব রকম ফল,ফুলের গাছ ভরা ঐবাগানের মাঝে একটা সাদা বাংলো মতন বাড়ি দেখা যাচ্ছে।ঐ বাগানের মূল ফটকের কাছে এসে দেখলাম মোটা মোটা দুটি থামের মাঝে একটা বড় লোহারগেট,বুঝলাম এটাই বাগানের মধ্যে বাংলোয় যাবার প্রবেশ পথ।গেটের উপর বড় বড় করে লেখা "উন্মেষ"।বুঝলাম এটাই     দীনু কাকার ডাক্তার উকিলের বাংলো।গেটের উপর একটা বিজ্ঞপ্তি বাংলা ও ইংরাজীতে লেখা'অনুগ্রহ পুর্বক এই বাদানে প্রবেশের পূর্বে গেটের ডানপাশের থামে যে কলিংবেলের সুইচটি আছে ওইটি টিপুন-প্রবেশ অনুমতি পাবার পরই গেট ঠেলে বাগানে প্রবেশ করিবেন অন্যথায় বিপদের সম্ভাবনা।
 আমি একটু চিন্তায় পড়লাম ভাবলাম বিকালের দিকে এসে আলাপ করে যাব-যেহেতু যদুনাথকে বলে আসা হয়নি। দীনু কাকার কটেজ ১০-১৫ মিনিটের হাঁটা পথ, ফিরেগেলাম অবসরে। দুপুরে খেতে বসে ডাক্তার উকিল সম্পর্কে জানতে চাওয়ায় যদুনাথ জানতে চাইল আমি ওই 'আজবদাদু'র বাড়ি যাব কিনা? আমি  জানতে চাইলাম ওনাকে আজবদাদু কেন বলছে?যদুনাথ বলল এমন আজব লোক এই দেশে আর একটিও আছে নাকি?ওনাকে সকাল সন্ধ্যায় নদীর ধারে কিছুক্ষণ পায়চারি করতে ছাড়া কখনও বাইরে দেখতে পাবেননা ।শুনেছি উনি বাড়িতে কিসব ভয়ঙ্কর জন্তু জানোয়ার পোষেণ।ডাক শুনলে পিলে চমকে যাবে,বাঘ না হাতি,কেউ জানেনা।সারা রাত বাগানের চারপাশে তারের বেড়াতে ইলেকট্রিক লাগানো থাকে,কারো সাধ্য নেই ভিতরে ঢোকে।একবার দুটো চোর বেড়া টপকাতে গিয়ে যা নাকাল হয়ে ছিলো কি বলব ?প্রাণেমারা যায়নি তবে তিন চার দিন ভয়ে সিঁটিয়ে ছিলো,গলায় কোনো আওয়াজ ছিলোনা।কর্ত্তাবাবুর(দীনুকাকা)কাছে শুনেছি ঐদাদু খুব পন্ডিত লোক।আমি যদুনাথকে বললাম বিকালে ভাবছি ওনার সাথে দেখা করে দীনুকাকার চিঠিটা দিয়ে খোঁজ নিয়ে আসব।যদুনাথ জানালো তা বিকালে যেতে   ফিরতে বেশী রাত যেন না করি কারন ওই পথটা ভীষণ অন্ধকার ঘন শালবন, নতুন লোক বিপদ হতে পারে।
 বিকাল ৪টা নাগাদ গেটের কাছে পৌঁছে প্রথমে একটু নার্ভাস মনে হোলো নিজেকে,তারপর মন ঠিক করে নিলাম-দীনুকাকা যখন পাঠিয়েছেন তেমন বুঝলে চিঠিটা দিয়ে শুধু খোঁজ নিয়ে চলে যাব।  কলিংবেল টা টিপতেই একটা গুরুগম্ভীর স্বর গেটের কাছ থেকে ভেসে এলো,"কোথাথেকে আসছেন?কারসাথে প্রয়োজন?"আমি চারপাশে তাকিয়েদেখতে চেষ্টা করলাম কার কন্ঠস্বর?ভদ্রলোক কোথায়?কাউকে দেখতে পেলাম না,কি বলব?কাকে বলব?ভাবছি,তখন ই আবার শুনতে পেলাম ,মনে হল আওয়াজটা একই জায়গা গেটের থামের মধ্য থেকে আসছে-"আমাকে দেখতে পাবেন না ঐখান থেকে,কিন্তু আমি আপনাকে দেখতে পাচ্ছি। আমি বাংলোর মধ্যে আছি-আপনি বলুন আমি শুনতে পাবো।"আমি নার্ভাস হয়েইছিলাম তাই একটু ধরা ধরা গলায় উত্তর দিলাম, "আমি ডাক্তার উকিল মহাশয়ের সাথে দেখা করতে চাই,কোলকাতা থেকে দীনবন্ধু সান্যাল মহাশয় আমাকে পাঠিয়েছেন একটা চিঠি দেবার জন্য।"এবার ভিতরে যাবার অনুমতি পেলাম'ভিতরে আসুন' ।
আমি লোহার গেটটা ভিতর দিকে ঠেলে ঢুকলাম,স্প্রীং লাগানোগেট আপনি বন্ধ হয়ে গেলো।ভিতরে সুন্দর নুড়ি বিছানো পথে বাংলোর কাছে গেলাম।সুন্দর কাঁচে ঘেরা বারান্দা ভিতরে ঢোকার জন্য কাঁচেরই ঠেলা দরজা ।দরজাঠেলে ভিতরে ঢুকেই দেখলাম, সুন্দর পরিষ্কার সাজানো বিরাট বারান্দার মাঝে সাদা গোল সম্পূর্ণ কাঁচের টেবিল,টেবিলের তিন পাশে তিনটে সুন্দর   একই রকম সম্পূর্ণ কাঁচের চেয়ার।টেবিলে রাখা কাটগ্লাসের ফুলদানীতে সুন্দর রকমারীফুল এমন সুন্দর রঙ আগে কখনো দেখিনি।টেবিলের পাশে দেওয়ালের দিকের চেয়ারে একজন বৈদিক ঋষি তুল্য মানুষ বসে আছেন।সাদা লম্বা দাড়ি কবিগুরুর মতন,মাথায় ধব ধবে সাদা চুল ঘাড় অবধি। ভদ্রলোক বসে আছেন তবুও বোঝাযায় বেশ লম্বা সুপুরুষ,টিকালো নাক।উজ্বল দুটি চোখ চশমার পুরুকাঁচের মধ্য দিয়েও প রিষ্কার বোঝা যাচ্ছে বেশ সপ্রতিভ,তেজস্বী।দেখলে বৈদিক ঋষি বলেই মনে হয়,বেশ সম্ভ্রম লাগে।আমি সামনে যেতেই বললেন, বসুন। গলার স্বর বেশ গাম্ভীর্যপূর্ণ।
আমি দীনুকাকার চিঠিটা এগিয়ে ওনার হাতে দিলাম।বুঝলাম ইনিই ডাক্তার উকিল।উনি সাদা ধুতি আর সাদা ফতুয়া পরে আছেন,পায়ে কাঠের খড়ম।বারান্দায় ঢুকেই বুঝেছিলাম ভেতরে শীতের বিকালের কোন প্রভাব নেই,কারণ  আমার গায়ে যে পাতলা সোয়রটার, তাতেই বেশ গরম লাগছে।প্রথমে ভেবে ছিলাম নার্ভাসবলে গরম লাগছে, পরে ডাক্তার উকিল কে দেখলাম পাতলা ফতুয়া পরে আছেন। ওনার কাজের লোকটিকেও একপলক দেখলাম ভিতরের দরজা দিয়ে এসে একবার আমাদের দেখে গেলো-তার গায়েও পাতলা জামা বুঝলাম ভিতরে সত্যই গরম। বারান্দায় কোনো আসবাব পত্র বিশেষ চোখে পড়লনা,কেবল ডাক্তারউকিল যেখানে বসে আছেন তার পাশে একটা শেলফে কতকগুলো স্টেবিলাইজারের বাক্সের মতন কোন যন্ত্র বসানো আছে,তাতে লাল,নীল,সবুজ আলো জ্বলছে,কতকগুলি নব, সুইচ রয়েছে।ভাবলাম উন্নত মানের মিউজিক সিস্টেম হবে।
                                                                                                                                                         চিঠিটা পড়া হয়ে গেলে ডাক্তার উকিল আমায় বললেন'আমি তোমায় তুমি বলেই বলছি,চিঠি থেকে যা বুঝলাম, অনেক ছো্‌ট , আমি তোমাকে তুমি বললে অসন্মানবোধ করবেনা।তুমি বিজ্ঞান ভিত্তিক কল্প্কাহিনী লেখ, তোমার লেখা মনে হয় আমার সংগ্রহে গোটাচারেক আছে।লেখাগুলি মন্দনয় তবে অতিকল্পনা প্রবনতা আছে।লেখাগুলি বাচ্চা,কিশোরদের কাছে রোমাঞ্চকর মনে হলেও বিজ্ঞানভিত্তিক যুক্তি নির্ভর হওয়াটা দরকার।আবার বেশী তথ্য নির্ভর হলে সেটা গল্পের আকর্ষণ হারিয়ে ফেলবে । দীনবন্ধু বলেছে তোমাকে সাহার্য্য করলে আগামী লেখাগুলি আরো চিত্তাকর্ষক হতে পারে।তা আমি তোমাকে নিশ্চই বিজ্ঞানের অগ্রগতি,তার সু প্রয়োগ আবার স্বার্থে অপ প্রয়োগ সংক্রান্ত কিছু বাস্তব ঘটনার উদাহরন দেখাতে পারব।এরপর তোমার কৃতিত্ব কেমন ভাবেসেটা পাঠকের কাছে পৌঁছেদেবে,তারা কতটা আগ্রহভরে তোমার লেখাটা নেবে।আমি যা কিছু জানাবো সবই আমার জীবনের ঘটনা,তার সব ঘটনা সাজিয়ে গুছিয়ে হয়ত তোমার কাছে তুলে দিতে পারবনা। প্রফেসর শঙ্কুর মতন আমার কোন লিখিত পঞ্জিকা বা খাতা নেই, আমি ওনাকে শ্রদ্ধাকরি নমস্য ব্যক্তি
 লেখা আছে ,কিছু মাইক্রোফটো,অডিওরেকর্ডিং,থার্মাল ইমেজকপি আছে। তবে একটা শর্ত কোন অবস্থাতেই  সঠিক তারিখ,সময়,স্থান,ব্যাক্তির নাম ধাম,যথাযথ উল্লেখ করতে পারবেনা।আর লেখাগুলি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কোথাও প্রকাশ করতে পারবেনা।কথা দিলে তবেই আমি বিবেচনা করে দেখব লেখা গুলি তোমাকে দেওয়া যাবে কিনা? " আমিতো তক্ষুনি রাজী ,বললাম "আপনি যা নির্দেশ দেবেন সেই মতই চলব। আমার অসীম ভাগ্য, আপনি যে আমার প্রতি এতো সহৃদয় হবেন ভাবতেই পারিনি।"ডাক্তার উকিল  তখন বললেন'আমার লেখাগুলো যে আমার জীবনে সত্যসত্যই ঘটেছে বা আমার সষ্টি যেসব যন্ত্রপাতি,ঔষধপত্রাদির কথা জানাবো ওগুলো যে সত্যি সত্যি আছে তারতো একটা চাক্ষুষ প্রমান পাওয়া দরকার, নইলে তোমার লেখায় আত্মবিশ্বাস আসবে কেন?ওগুলি নিছক কাল্পনিক রোমাঞ্চকাহিনী হয়ে যাবে।আমার এখানে যাকিছু দেখবে সবই আমার নিজস্ব উদ্ভাবনা,প্রামান্য নিদর্শণ দেখতে নিশ্চয় আগ্রহী?এর জন্য হাতে সময়নিয়ে আস্তে হবে।আমার এখানে রাতে থাকার কোনো অসুবিধা নেই, কিন্তু তোমার নিশ্চিন্ত ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে তাই আজ রাতে অবসরে ফিরে যাও,কাল দুপুরে চলে আসবে।"
 কথায় কথায় কখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যার অন্ধকার চারপাশে নেমে এসেছে বুঝতে পারিনি, কাঁচের ঘেরা  বারান্দাতে বসেও ,কারন আমি যখন এখানে এসে ঢুকে ছিলাম তখন বারান্দাতে ভেতরে যে রকম আলো ছিলো তার কোনো রকম তারতম্য ঘটেনি,সুধু হাত ঘড়িতে দেখলাম দু ঘন্টা পেরিয়ে গেছে।বাইরে বাগানের দিকে হাল্কা আলো-আঁধার।দুরে শালবনের দিকে গাঢ় অন্ধকার,যে পথটা সোজা বাইরে দিকেগেছে সেই পথটা গেট অবধি আলোকিত ,অথচ কোথাও কোন আলোর বাতি চোখে পড়ছেনা।কাঁচঘেরা বারান্দায় মনে হচ্ছেযেন দেওয়াল থেকে আলো বেরুচ্ছে অথচ দেওয়ালে কোন আলোর বাতি জ্বলছেনা।আবার আমাকে অবাক করে দিয়ে ডাক্তার উকিল আমায় প্রশ্ন করলেন 'কি অবাক হয়ে আলোর উতস খুঁজছ? না এখানে কোন প্রথাগত প্রচলিত বিজলী বাতি থেকে আলো জ্বলছেনা,এখানে আমার নিজস্ব অটোলুমিয়েন্স ব্যবস্থা যাতে চারপাশে আলোর উজ্বলতা যতোই বদলাকনা কেন,আমার ঘরের মধ্যে আর এই পথে আলোর উজ্জ্বলতার মাত্রা বা লাক্স লেভেল একই থাকে,তাই বাইরে আঁধার নামে, আমার ঘরে এলাকার মধ্য আঁধার ঢুকতে দিইনা-অবশ্য আমি আলোর উজ্জ্বলতা যেমন চাইব তেমন নিয়ন্ত্রন করতে পারি।কিন্তু প্রয়োজন না থাকলে স্বয়ংক্রিয় মাত্রা নিয়ন্ত্রন(ALC)ব্যবস্থা, ওটা একই মাত্রায় ধরে রাখে।'

ক্রমশ-৩ ( লেখাটি বড় হওয়ায় ৪কিস্তিতে সমাপ্য )
৩)বিশ্বের বিস্ময় ডাক্তার উকিল
আমি অবাক হয়ে ভাবলাম উনি আমার মনের কথাগুলো টের পেয়ে যাচ্ছেন কি করে?আমার মনে জাগা প্রশ্নের উত্তর ও পেলাম এমনি অবাক করে দিয়ে-"আমি মনের কথা বুঝতে পারি-তুমি যতই চুপচাপ থেকে মুখের ভাব বদলে রাখার চেষ্টা কর।এটা ইলেকট্রো টেলিপ্যাথি বুঝলে? সাধু,যোগী ঋষিগন পুরাকালে যোগবলে এই ক্ষমতা অর্জন করতেন। থটরিডিং-আমি অর্জন করেছি অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রনিক্সের প্রয়োগ কৌশলে।মানুষ যা কিছু চিন্তা করুকনা কেন ?তার মস্তিষ্ক থেকে একপ্রকার তরঙ্গ নির্গত হয়,এই চিন্তাটাও শব্দ সৃষ্টি করেনা কিন্তু ঐ তরঙ্গ /কম্পন  সৃষ্টি করে আর সেই কম্পন ধরা পরে আমার টেলিপ্যথোডিকোডারে।আমার চশমার ডাঁটিতে এই ব্যবস্থা লাগানো আছে।এটাকে ইচ্ছামতন শক্তিশালী করে এর দুরত্ব বা রেঞ্জ বাড়ানো কমানো যায়। আগেকারদিনে যোগী ঋষিরা অনেক বড় বৈজ্ঞানিক ছিলেন,তাঁরা যোগাসনে শরীরের নানাতন্ত্রকেএই রকম অতি শক্তিশালী কার্য্যক্ষম করে তুলতে পারতেন।
 আমরা একে অলৌকিক বা অতিপ্রাকৃতিকবলে ব্যাখ্যা করি। আজকে আমরা যাকিছুই  আবিষ্কার করিনা কেন-এগুলো অতীতে ছিলো, মাঝে বিলুপ্ত হয়েছ্‌ । কত জিনিষ আবার বিলুপ্ত হতে চলেছে-তার হিসাব রাখে কেউ?আমার মূল গবেষণামুলক কাজ শুরু হয়েছিলো-ভারতীয় ভেষজদ্রব্যের গুনাগুন আর তার প্রয়োগ নিয়ে।পরে এর সাথে রসায়ন, পদার্থবিদ্যার গবেষণা যুক্ত হয়।সর্বশেষ ইলেক্ট্রণিক্সের মাধ্যমে সবের মধ্য একটা নিগুঢ় সমন্বয় সাধন করতে সক্ষম হই, তাই আমার উদ্ভাবিত জিনিষ গুলোর মধ্যে এগুলি ওতপ্রোতঃভাবে মিলে মিশে আছে।কাল যখন আসবে তখন বিষয়টা বুঝিয়ে দেব।তোমার মনে এখন অনেক কৌতুহল ,জিজ্ঞাসা দানা বাঁধতে শুরু করেছে।আরো দানা বাঁধবে কালকে যখন চাক্ষুষ এইগুলির সাথে পরিচয় ঘটবে।তখন যতটা পারি বুঝিয়েদেব বাদবাকীটা কিছুটা আমার লেখা থেকে আর কিছুটা নিজস্ব অনুসন্ধান দিয়ে বুঝে নিতে হবে।আমি প রিপুর্ণভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে হাতে তুলে দেবনা,এতে যাকে দেওয়া হবে তার মস্তিষ্কের কাজ কমে যাবে,অলস পরমুখাপেক্ষী হয়ে পড়বে,স্বাধীন চিন্তাকরার ক্ষমতা হারাবেতাইআমি  অনেকটা হাতে সার্কিট, কম্পোনেনটস নিয়ে, প্রয়োজন মতন কার্য্যকারিতা বুঝে অদল বদল করে প্রয়োজনীয় জিনিস টা  নিজে বানিয়ে নেওয়ার মতন।" আমি বললাম "বেশ এটাই ভালো ।
আমি মুগ্ধ।আজ হাতে সময় কম,বাইরে অন্ধকার নেমেছে।দীনবন্ধু কাকার কেয়ার টেকার বেশী রাত করতে বারন করে দিয়েছে। পথে সাপ খোপ, নানা জন্তু জানোয়ার থাকতে পারে, তাছাড়া জায়গাটা আমার কাছে নতুন অচেনা,।" আমি টর্চ আনতে ভুলে গেছি,শালবনের পথটা বেশ অন্ধকার ,আজ চলি বলেএগিয়ে গিয়ে ডাক্তারউকিলের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম। আমি যখন বারান্দাথেকে বাইরে বেরুতে যাচ্ছি,উনি ডাকলেন 'অণির্বান- একটু দাঁড়াও' দেওয়ালের দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করলেন। দু মিনিটের মধ্যেই ফিরে এলেন হাতে একটা চশমাতে রোদ আটকানোর জন্য যে এটাচি লাগানো হয় ঐরকম একটা এটাচি।ঐ এটাচির  কাঁচ দুটো একটা মোটা স্টীলের পাত দিয়ে আটকানো।ডাক্তারউকিল ঐ টা আমাকে দিয়ে বললেন তোমার চোখে চশমা আছে তাই ফ্রেমটা আনলামনা এটা চশমার উপর এটাচির মতন লাগিয়ে নাও।আমি রাত্রি বেলা রোদ আটকানো এটাচি কেন লাগাব বুঝতে পারলাম না। ডাক্তারউকিল মনের কথা বোঝেন  হেসে বললেন -এটা চশমায় লাগিয়া নাও টর্চলাগবেনা,সাপখোপ,পোকামাড়, জন্তু জানোয়ার তাড়ানোর লাঠি,অস্ত্র লাগবেনা, কেউ তোমার ৩০ গজের মধ্যে আসবেনা।
আমি এটাচিটা চশমার উপর লাগিয়ে নিলাম।ভারি আশ্চর্য্য ব্যপার বাইরে বেড়িয়ে দেখি কোথায় অন্ধকার?আমি পরিষ্কার দিন দুপুরে যেমন চারপাশ দেখতে পাই তেমন সব পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি।আমি আস্তে আস্তে 'উন্মেষ' থেকে বেড়িয়ে শাল বনের পথ ধরলাম।একটা মজার জিনিষ দেখলাম রাস্তার দুপাশে যেপোকামাকড় ছিলো সব আমি এগুনোর সাথেসাথে উর্দ্ধশ্বাসে পালাচ্ছে।আমি ২০ মিনিটের মধ্যেই অবসরে ফিরে এলাম।ঘরে আলো জ্বলছে,আমার মনে হোলো দিনের বেলা অযথা আলোজ্বলছে কোথাও অন্ধকার নেই।ঘরে এসে এটাচিটা খুলে রাখলাম কালকে ডাক্তার উকিল যাকে আমি জেঠু বলে ডাকতে শুরু করে দিয়েছি তাকে ফিরিয়ে দেব।                                                ক্রমশ-৪  আগামী কিস্তিতেই সমাপ্য (04/03/2015)




৪)বিশ্বের বিস্ময় ডাক্তার উকিল
পরদিন দুপুর ২টার মধ্যেই হাজির হলাম উন্মেষে। উকিল জেঠু আমার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আমি পৌঁছতেই বললেন 'আশাকরি কাল স্বছন্দেই যেতে পেরেছ?আমি তোমার জন্য সেই ১টা থেকে অপেক্ষা করে আছি কারণ আমি দুপুরের খাওয়াটা ১২টা৩০ মধ্যে সেরে নিই,এরপর আধ ঘন্টা ব্জ্রাসনে বিশ্রাম।আমার খাওয়ার মেনুটা অবশ্য তোমাদের রুচি হবেনা,কারণ আমি সব  সব্জীটা কাঁচা খাই। প্রাকৃতিক চিকিতসা বিজ্ঞানে দার্শণিক সক্রেটিসের বাণী'Diet is health,diet is Medicine'মানে পথ্য ই স্বাস্থ্য পথ্যই ঔষধ, খুউব মেনে চলা হয়।ভারতীয় মুনীঋষি গন এটাই করতেন,প্রাকৃতিক পথেজীবন যাপন করতে কাঁচা ফল মুল শাক সব্জী খেয়ে থাকাই বিধি,কারণ রান্না করা মানেইতো ডি-ভাইটালাইজড ডিনেচারড ফুড। মানুষের পাকস্থলী এই কাঁচা ফলসব্জী খাবার উপযুক্ত-মানুষ মাংসাসী প্রাণী নয়,মানুষের পাকস্থলী রান্নাঘর নিজেই রান্না করেনেয়- তাকে রান্না করা খাদ্য দেওয়ার অর্থ তাকে নিস্ক্রিয় করে রাখা। এই অভ্যাস আস্তে আস্তে রপ্ত করতে হয়,যে কোন পুরানো অভ্যাস বদলানো বেশ কষ্টকর।এত বয়সও আয়ুর্বেদীয় ঔষধ সঞ্জীবনী ট্যাব্লেট আছে এটা রক্তে  ও কোষের আম্লিক মাত্রাকে নিয়ন্ত্রন ও রক্ষা করে, রক্তে ক্ষারত্ব কমে গেলে শরীর রোগাক্রান্ত হওয়ার প্রবনতা বাড়ে,এছাড়া সঞ্জীবন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রয়োজনানুসারে বাড়িয়েদেয়।
আমি প্রশ্ন করলাম-' আপনি যখন বাইরে অন্যত্র কোথাও থাকেন এই নিয়ম মানেন কি করে? উত্তরে তিনি বলেন"আমার বিকল্প ব্যবস্থা নিজস্ব 'ইন্সটাফুড পিল' বা তাতক্ষণিক পরিপুর্ণ আহারের জন্য আমার ভেষজ বটিকা'পুষ্টি' আমার সাথেই থাকে,এর একটা বটিকা ২৪ঘন্টা শরীরকে পূর্ণকর্মক্ষম রাখার জন্য যে শক্তি-পুষ্টি জোগানো দরকার তা যোগান দেয়।এর সব থেকে সুবিধা এটি খেতে সময় লাগবে বড়জোর ১থেকে৩মিনিট।যদি চুষে খাওয়া হয় তবে একটা ভুরিভোজের যাযা জিনিষ সাধারণ ভাবে খাওয়া হয় যেমন,ভাজাভুজি সুক্ত থেকে ডাল,তরকারি,চাটনি,পায়েস সবের স্বাদ একেক করে পাওয়া যাবে- সর্ব শেষে মুখ শুদ্ধিপান পর্য্যন্ত অথচ এর কোনটাই ঐ বটিকার মধ্যে নেই। এরকোন কৃত্রিম স্বাদ গন্ধ মেশানো হয়না।কেবলমাত্র সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম ভাবে প্রতিটি ব্যঞ্জণের উপকরণের মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে এবং হোমিওপ্যাথি ঔষধের নীতি অনুসারে যত সুক্ষ্ম করা হয়াছে তাতে পুষ্টি ও শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
যাক এসব বিষয়ে আমার লেখা থেকেই সব জানতে পারবে।এখন আমার প রীক্ষা গার ও সংগ্রহশালায় যাওয়া যাক। বারান্দার একপাশে যে দরজা আছে তা বোঝার উপায়নেই,স্প্রীং দেওয়া দরজা ঠেলে ভেতরে যাওয়া যায়, আবার নিজে থেকেই ফিরে এসে দেওয়ালে এমনভাবে বসেযায় লাগে থাকে দেওয়াল থেকে আলাদা করেবোঝা যায়না। ভিতরে ঢুকে দেখলাম বড় হলঘর, সুন্দর সাজানো সারা দেওয়ালে অসংখ্য খোপ খোপ তাকের সারি। প্রতিটি খোপেই জিনিষ ভর্তি।একপাশে সারি দিয়ে সাজানো কয়েকশত অডিও ক্যাসেটের মতন ক্যাসেট।প্রতিটি ক্যাসেটের গায় নাম্বার ও সাংকেতিকলেখা একটি ক্রমানুসারে সাজানো রয়েছে। জেঠু জানালেন এগুলিই তার বই ,পুঁথী,নানা তথ্য সম্বলিত পুস্তিকার সংগ্রহ।এই মাইক্রোচিপ যা তার নিজস্ব সৃষ্টি,এই চিপ গুলিতে নিজস্ব ভাষায় সঞ্চিত করা আছে সব তথ্য।মাইক্রোরিডিং ডিকোডার যন্ত্রে এগুলি লাগালে মনিটরে লেখা আর ছবি হুবহু দেখাযাবে, মুল বইতে যেমন টি আছে।আবার রিডিং সুইচ টিপলে প্রথমে মুল যেভাষায় বইটা লেখা সেই ভাষায় পাঠ শুনতে পাওয়া যাবে পরে বাংলায় অনুবাদ ভাষ্য শুনতে পাওয়া যাবে ।এটা যেকোন ভাষায় ইচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে প্রিন্ট বা কপি করে নেওয়া যায়,এক একটা ক্যাসেটে ১০ লক্ষ ফুল স্কেপ কাগজের লেখা বা ছবি আছে।সংগ্রহে  বর্ণপরিচয় থেকেশুরু করে নানা বিখ্যাত লেখকের রচনা  সমগ্র ,বিশ্ববরেণ্য শিল্পীদের আঁকা চিত্রাবলী, পৃথিবীর সব দেশের নাম করা সব সঙ্গীত শিল্পীদের গান,নাচ, বাজনা সব কিছুই সঞ্চিত আছে।"
 আমি আমার লেখা বই এর ডিসপ্লে, দেখলাম।তথ্যসুচী বর্ণানুক্রমিক সুচীপত্র সবই আছে,সরাসরি যে বই বা যে বিষয়টা দেখতে চাই দেখার ব্যবস্থা আছে।কোন খোপে কোন ক্যাসেটে কি আছে তাও সুইচ টিপে মনিটারে দেখাযায়।আমার লেখা এযুগেও ডাইনোসরাসের মলাট থেকে শেষ পাতা পর পর স্ক্রীণে ফুটে উঠল সেই সাথে নিখুঁত গুরু গম্ভীর উচ্চারণে ছেলে এবং মেয়ে কন্ঠে আমি বিস্মিত। আমি আশ্চর্য হওয়াতে জেঠু বললেন এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই,এখন সারা বিশ্বে মাইক্রোফ্লিমে সব নামী দামী বই এর একটা ফোটোকপি নকল তুলে রাখা হয়,যাতে পরে প্রোজেকশন করে দেখা যায়।তিনি জানালেন এই যন্ত্রের ক্ষমতা ওগুলোর থেকে অনেক বেশী আর প্রয়োগ ক্ষেত্র বিশাল।এই যন্ত্রের মধ্যে এই বই এর সাথে সাদৃশ্যআছে তেমন সব বই এর তথ্য,তুলনামুলক আলোচনা, সব দেশের,সব ভাষার পাওয়া যাবে আর কোন অনুরুপ বই তথ্য না থাকলেও জানিয়ে দেবে।এছাড়া অনুবাদ, মিশ্রণ পরিবর্তণ সবই সম্ভব। এরপর ডাক্তার উকিল জেঠুর সংগ্রহশালায় হাজারো বিস্ময়কর উদ্ভাবনের পরিচয় পেলাম যার বর্ণনা বা আলোচনা এই স্বল্প পরিসরে উল্লেখ করাও সম্ভবপর নয়।এইসব বিস্নয়কর যন্ত্রপাতি ও আবিস্কারের সাথে সাথে জড়িয়ে আছে নানা রোমাঞ্চকর ঘটনা-যেগুলি পরবর্ত্তী কালে জেঠুর লেখা থেকে পরে পরে জেনাছি।যথা সময়ে পাথকের দরবারে পৌঁছে দেবার ইচ্ছা রয়েছে।আমি দিন চারেক ঝাড়্গ্রামে ছিলাম অধিকাংশ সময়ই আমি কাটিয়েছি ডাক্তার উকিল জেঠুর কর্মশালায়।আমার আগ্রহ দেখে উনি ঝাড়্গ্রাম থেকে আমার আসার সময় ওনার সমূহ লিপিবদ্ধ ক রে রাখা তত্ত্ব,ও তথ্যের অনুলিপির বান্ডিল্টা উপহার দেন,সেই সাথে শর্তের কথাটি আবার স্মরণ করিয়ে দেন যেন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কোন লেখা প্রকাশিত না হয়,আর প্রকৃত নাম পরিচয় কখনোই উল্লেখ করা চলবেনা।
আমি কারন জানতে চাওয়ায় উনি বলেছিলেন এই সময়ের মধ্যে উনি ঝারগ্রামে কাজ শেষ করে অন্য অজ্ঞাত নুতন কোথাও গবেষণার জন্য চলে যাবেন, উনি ঝাড়্গ্রাম থাকা কালে এই লেখা প্রকাশিত হলে অসুবিধা আছে। আমি পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ডাক্তার জেঠু তার 'উন্মেষ' সরকারকে দান করে কোথায় চলে গেছেন কেউ জানেনা, গাছপালা,বাংলো আর পাঁচটা সাধারণ বাড়ির মতন ,সাধারণ, আসবাবপত্র কোন বিশেষত্ব নেই এই অবস্থাতেই সরকার দখল নিয়েছে।আমি জেঠুর দেওয়া সমস্ত পান্ডুলিপি খুঁটিয়ে পড়েছিএবং সাজিয়ে কাহিনী আকারে লিখতে শুরু করেছি কিন্তু সঠিক স্থান, কাল,পাত্রের উল্লেখ করা যাবেনা তাই ঘটনা গুলি আগের পরের হলেও সব গুলি স্বতন্ত্র, কোন সমস্যা নেই।আমি সব ঘটনা গুলিই পর্য্যায়ক্রমে পাঠকের দরবারে চাহিদা থাকলে পৌঁছে দেব সেই প্রয়াস নিয়েছি।


৩) ডাক্তার উকিল ও মৎস কন্যা

'ডাক্তার উকিল ও মৎস কন্যা ' তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বেরবিস্ময় ডাক্তার উকিল থাকতেন ঝাড়্গ্রামে তার নিজস্ব বাংলো উন্মেষে যা তারই বিস্ময়কর সৃষ্টিতে পরিপুর্ণ।এইসব আবিষ্কার গুলো পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে। মানব কল্যাণে এগুলির অবদানীয় অতুলনীয়। ডাক্তার উকিল  ছিলেন আচার আচরণে সাজ পোষাকে বৈদিক ঋষির মতন।আমার সাথে তাঁর পরিচয় প্রায় চল্লিশ বছর আগে।তাঁর বেশ কিছু আবিষ্কার যা অলৌকিক বলে মনে হয়ে ছিলো তার সাথে পরিচিত হয়েছিলাম।তখনই ডাক্তার উকিল তাঁর জীবনে কিছু রহস্য ময় ঘটনা যার রহস্য তিনি নিজেই সমাধান করে ছিলেন তার লিখিত বিবরণ আমাকে দিয়েছিলেন তার থেকেই কয়েকটি আমি ধারা বাহিক প্রকাশ করার চেষ্টা করছি।এই ঘটনাটিও ঐ ডাক্তার উকিলের দেওয়া পাণ্ডুলিপি থেকে-তাঁর ই লিখিত বর্ণনা অনুসারে প্রকাশ করলাম।প্রকৃত স্থান,কাল , পাত্র ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা যাবেনা তাই এগুলি কাল্পনিক।আমি ডাক্তার উকিল কে কথা দিয়েছিলাম যে পাণ্ডুলিপি পাওয়ার ১০ বছরের মধ্যে কোন লেখা প্রকাশ করতে পারবোনা,কিন্তু নানা অসুবিধা থাকায়  আজ ৪০ বছর পর লেখা গুলো প্রকাশ করছি। ডাক্তার উকিল  আসলে উপেন্দ্র কিশোর লস্করের   সংক্ষিপ্ত উকিল আর উনি ডাক্তারি পড়েছিলেন তাই ডাক্তার নামের প্রথমে যুক্ত হয়েছে। ডাক্তার উকিল  জীবিত আছেন না মৃত জানিনা কারণ আমার সাথে যখন ওনার পরিচয় ঘটে তখন ই ওনার বয়স ছিলো আশির উর্দ্ধে,কিন্তু শক্ত সবল যোগী পুরুষ ছিলেন,তারপর তিনি কোথায় চলে গেছেন কেউ জানেনা।আজ বেঁচে থাকলে বয়স ১২০ বছরের বেশী।তিনি যোগী সংযমী মানুষ,সঠিক বৈজ্ঞানিক তাই সবই সম্ভব,এখনো বেঁচে সুস্থ থাকাও সম্ভব।উনি বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব। তার জীবনে অনেক জটিল সমস্যার সমাধানের মধ্যে এই মতস কন্যা অন্যতম আকর্ষণীয় ঘটনা।তাঁর পাণ্ডুলিপি থেকে যেভাবে ঘটনাটির বিবরণ পেয়েছি তাঁর ভাষায় লিখলাম..........

আজ আবার কাগজে মৎস কন্যার দেখা পাওয়ার ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে,এবার একজন জার্মাণ বৈজ্ঞাণিক প্রফেসর স্যামুয়েল হান্স জানিয়েছেন,তিনি একটি অতি ক্ষুদ্র ১০ ইঞ্চি মৎস কন্যা ভূমধ্যসাগরের মধ্যে একটি ছোট দ্বীপ থেকে সংগ্রহ করে তাঁর পরীক্ষাগারে  নিয়ে এসেছেন। এই দ্বীপেই দু বছর আগে বড় মৎস কন্যা জল আর ডাঙার সংযোগ স্থলে  জাহাজ থেকে  দেখা গেছিলো ,কিন্তু মুহুর্তের মধ্যে জলে ডুবে যাওয়ায় ছবি তোলা যায়নি।বছর ছয়েক আগে ওই অঞ্চলে সমুদ্রে মৎস কন্যা দেখা পাওয়ার খবর প্রকাশিত হয়ে ছিলো।একটি অস্পষ্ট ছবিও ছাপা হয়েছিলো। ইতি পূর্বে বার কয়েক মৎস কন্যার খবর কাগজে প্রকাশিত হলেও কোন ক্ষেত্রেই কোন প্রামান্য তথ্য পাওয়া যায়নি-নিছকই কল্প কাহিনীর মতন ।আজ অবধি এই বিষয় টি অমীমাংসিত রহস্যময় হিসাবেই রয়ে গেছে।কিছু  সামুদ্রিক প্রাণী যেগুলি অস্বাভাবিক বা বিকৃতভাবে জন্মথেকে বড় হয়ে ধরা পড়েছে ,জলের  বাইরে ওগুলো এক মুহুর্ত বাঁচেনি,ওগুলো কোনটাই মৎস কন্যা নয়,ওগুলো অস্বাভাবিক আকৃতি বিশিষ্ট  জলজ প্রাণী, মাছ, শুশুক জাতীয় প্রাণী প্রমানিত হয়েছে। মানুষ ও অনান্য জীব জন্তুর ক্ষেত্রেও এরকম বিচিত্র আকৃতির সন্তান/শাবক জন্মায় অনেক সময় এরকম অস্বাভাবিক প্রাণীদের নিয়ে মেলায় উপার্জণের জন্য ব্যবস্থা হয়।এবার বৈশিষ্ট হোলো প্রফেসর স্যামুয়েল হান্স এর দাবী।তিনি আরো দাবী করেছেন, বছর দুই আগে তিনি এই মৎস কন্যাটি সংগ্রহ করেছিলেন তারপর তার নিজস্ব গবেষণাগারে   বিশেষ পরিবেশ সৃষ্টি করে  একোরিয়ামে দু বছর ধরে এটিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং আকারে পায় ৩ ইঞ্চি বড় হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাসে বৈজ্ঞাণিক মহলের সামনে এবং সাংবাদিক সন্মেলন করে সবাইকে দেখাবেন, তাঁর সংগ্রহের এই বিরল প্রাণীটি । কাগজে  তিনি সারা বিশ্বের  আগ্রহী বৈজ্ঞাণিক, সাংবাদিক,বিশিষ্ট মানুষদের আগামী ৭ই নভেম্বর থেকে ১৭ই নভেম্বর অবধি বেলা ৯টা থেকে বিকাল ৪টা অবধি তাঁর গবেষণাগারে উপস্থিত হয়ে প্রাণীটি দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।মাঝে ১০ই নভেম্বর একটি আলোচনা-সভা প্রশ্নত্তর এর ব্যবস্থা করেছেন তাঁরই আলোচনা কক্ষে।এই আলোচনা সভায় সারা বিশ্বে তিনি একশত জন ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানাবেন, বৈজ্ঞাণিক, সাংবাদিক,বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, ও বুদ্ধিজীবি সমালোচক হিসাবে  খ্যাত ব্যক্তি বর্গ  হিসাবে গন্য  মানুষদের।বিশ্বের নানা দেশ থেকে প্রতিনিধিরা আসবেন এজন্য প্রফেসর হ্যান্স সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে সমস্ত দেশকে অবগত করেছেন, প্রতিনিধিদের নাম,পরিচয়,খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি বিবরণ সহ  তালিকা পাঠানোর জন্য।
দিল্লীর প্রশাসণিক ও কারিগরি বিজ্ঞান গবেষণা মন্ত্রক আমার বিশেষ ভাবে পরিচিত থাকায়  কারণ আমি নির্বাচিত সব্জী বিশেষ ভাবে উৎপন্ন করা যা কোন রাসায়নিকসার, কীটনাশক ছাড়াই উৎপন্ন,কাঁচা অবস্থায় আহার করতে অভ্যস্ত। আমি জানিয়ে দিয়েছি-আমার জন্য কোন আহারের বন্দোবস্ত না করতে,আমার নিজের সঙ্গেই নিজস্ব সৃষ্ট খাবার পুষ্টি বটিকা থাকবে। একটা বটিকা ২৪ ঘন্টার পরিপুর্ণ আহার।চুষে খেলে পুরো নিমন্ত্রণ অনুষ্ঠানের খাবার মেনু,শাক, ভাজা , ডাল,শুক্তো থেকে পায়েস মুখ শুদ্ধির সবের আস্বাদ একে একে পাওয়া যাবে,তবে কেবল নিরামিষ আহার। খেতে সময় লাগবে বড়জোর ৩ মিনিট।সারা দিনের জলের চাহিদা পুরণের জন্য জীবনামৃত - দু ফোঁটা ২৪ ঘন্টার চাহিদা মেটাবে।আমার,থাকা, খাওয়া, শোওয়ার কোন কিছুর জন্য ই কোন ব্যবস্থা করার প্রয়োজন নাই,নিজেই স্বয়ং সম্পূর্ণ,যে কোন আবহাওয়ায় নিজেকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক সুস্থ রাখার ক্ষমতা আমার আছে। আমার ছোট্ট হাত ব্যাগটাই আমার সমস্ত কিছুর ভাণ্ডার-এর মধ্যেই আমার গবেষণার যন্ত্র,আত্মরক্ষার সরঞ্জাম সবই আছে।কেন্দ্রীয় সরকারের প্রসাশনিক দপ্তর আমার পরিচয় একজন বিজ্ঞান সাধক, প্রকৃতি প্রেমিক এবং বাস্তুতান্ত্রিকতার প্রচারক বলে উল্লেখ করে আমাকে প্রতিনিধি হিসাবে সুপারিশ করে প্রফেসর হ্যান্সকে জানাতে, সাতদিনের মধ্যে আমার আমন্ত্রণ এসে গেলো।

আমি যথাদিন যথা সময়ে অর্থাত ৭ই নভেম্বর প্রফেসর হ্যান্স এর আবাসন, জার্মাণীর ব্ল্যাক ফরেস্ট এ ' DIVINE RESORT' এ উপস্থিত হলাম। বিরাট এলাকা আমাদের এখানে প্রায় একশ বিঘা বা ৩৩একর জায়গা ঘিরে তার বাসস্থান,গবেষণাগার, সভা আলোচনা কক্ষ,প্রতি রক্ষা ব্যাবস্থা, নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা্‌অথিতি নিবাস সবই আছে।চারিদিকে উঁচু পাঁচিল তার উপর লোহার কাঁটা তারের বেষ্টনী।ভেতরে বাগান খেলার মাঠ,সুন্দর জলাশয় সবই আছে।আধুনিক পাঁচতারা হোটেল ও হার মেনে যাবে। ঐ চৌহদ্দিতে ঢুকতে গেলে আমন্ত্রণ পত্রের অনুলিপি,ব্যক্তি পরিচিতি ফটো সহ এবং কতদিন থাকার ব্যবস্থা চাই তা লিখিত ভাবে ঢোকার ফটকের পাশে যে প্রতিরক্ষার জন্য কার্য্যালয় আছে সেখানে জমা দিতে হচ্ছে। ঐ বিবরণ ঐকার্য্যালয়ে প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা নীরিক্ষার পর ভিতরে যে মন্ত্রণালয় আছে সেখানে পাঠানো হয়, ঐ মন্ত্রণালয় সমস্ত কিছু খুঁটিয়ে পর্য্যবেক্ষণ ও তথ্য গুলির সত্যতা নিরুপন করে অনুমতিপত্র পাঠালে তবেই প্রফেসর হ্যান্সএর ঐ ' DIVINE RESORT' এর চত্বরে ঢোকাযায়। আমি অনুমতি পাবার পর ভেতরে গেলাম।

এবার একটি সুন্দর চারপাশ স্বচ্ছ কাঁচে ঘেরা সুরঙ্গপথে মূল বাস ভবন যেখানে প্রাথমিক আপ্যায়নের ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে উপস্থিত হলাম। ওখানে পৌঁছতেই দেখি সুন্দর সাজানো গোছানো বসার হল। মাঝে একটা সম্পুর্ণ কাঁচে ঢাকা কক্ষ। সেই কক্ষের মধ্যে জনা চারেক সুপুরুষ ও মহিলা। তাঁদের পরনে বেশ অভিজাত পোষাক।সুন্দর দর্শণীয় চেয়ারে বসে আছেন,তাঁদের সামনে অর্ধগোলাকার কাঁচের টেবিল তাতে চারটি টেবিল মাইক্রোফোন চার জনের সামনে রয়েছে।টেবিলে কিছু ম্যাগাজিন,লিফ্লেট জাতীয় পত্র-পত্রিকা আর একটি মনিটর। আমি ঐ হলে পৌঁছতেই আমাকে বসার জন্য অনুরোধ ঐ কাঁচের কক্ষের মধ্য থেকে ভেসে এলো।দেওয়ালের চারপাশে বসার চেয়ার গুলির সামনে ঐ রকম মাইক্রোফোন ছোট টেবিলে আর চেয়ারের পিছনে ছোট লাউড স্পীকার লাগানো। আমি হলে ঢুকে দেখি আমার আগে চোদ্দজন ব্যক্তি এসে বসে আছেন।তার মধ্যে দুজন ভদ্রমহিলাও আছেন।ঘড়িতে দেখি তখন সকাল ৮টা৩০মি।এর পর গুরু গম্ভীর গলায় যে ভাষণ লাউড স্পীকারের মাধ্যমে ভেসে এলো তার বঙ্গানুবাদ করলে দাঁড়ায় "সুপ্রভাত মাননীয় অতিথি বৃন্দ,প্রফেসর হ্যান্সএর পক্ষ থেকে সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ এই আমন্ত্রণ গ্রহন করার জন্য।"এরপর  হ্যান্স যা বলেন সংক্ষেপে আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন ভূমধ্যসাগরের অভ্যন্তরে একটি অখ্যাত দ্বীপ জন  ডেয়ার ল্যাণ্ডের উপকুলে যেখানে সমুদ্রের জল বালীর তটের উপর দিয়ে বয়ে যায়, সেখানে আকস্মিকভাবে বছর দুই আগে একটি মৎস কন্যাকে জাহাজ থেকে দেখতে পাওয়ার খবর প্রকাশিত হয়, কিন্তু কোন প্রামান্য তথ্য এর অনুকুলে কেউ দিতে পারেননি।খবরটা কাগজে দেখার পর প্রফেসর হ্যান্স খুউব উৎসাহিত ও ব্যস্ত হয়ে ওঠেন ঐ মৎস কন্যার সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য ।

তিনি নিজে একটা ছোট মোটর বোট সঙ্গে নিয়ে জাহাজে যাত্রা করেন।জাহাজটির সাথে চুক্তি থাকে তিনি ঐ দ্বীপে যাওয়ার দিন পাঁচেক বাদে পুনরায় জাহাজটি ঐ দ্বীপটির কাছ দিয়ে ফেরার সময় তাঁকে তুলে নেবে।  যাবার সময় দ্বীপ থেকে দশ কিলোমিটার তাঁকে মোটর বোট সহ সমুদ্রে নামিয়ে দেবে।প্রফেসর একাই দ্বীপে যাবেন-গোপনে অনুসন্ধান করাই তাঁর উদ্দেশ্য,তাই কাউকে কিছু নাবলে একাই যেতে চান।ফেরার সময় জাহাজ দ্বীপের কাছাকাছি এলে উনি নিজেই বোটে চেপে চলে আসবেন এটা তাঁর দায়িত্ব-দেখানা হলে জাহাজ চলে যাবে তাদের কোন দায় থাকবেনা।যেহেতু ঐ জাহাজটি একটি ছোট সংস্থার তাই তারা রাজী হয় এবং প্রফেসারের অনুরোধ মতন ঐ দ্বীপের কাছাকাছি তাঁকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।প্রফেসর স্যামুয়েল হ্যান্স মোটর বোটে তার প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র,দশ দিনের মতন খাবার,পানীয়জল,আত্ম রক্ষার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র,থাকার জন্য তাঁবু নিয়ে ঐ দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে দ্বীপে উপস্থিত হন।এরপর প্রফেসর ওই দ্বীপে  সমুদ্রের পাড়ের কাছাকাছি বালির চরে একটা গর্ত করে তার মধ্যে লুকিয়ে থাকার মতন একটা আস্তানা বানিয়ে নেন।খুউব শক্তিশালী অথচ ছোট টেলীস্কোপ লাগিয়ে সমুদ্রের দিকে নজর রাখতে শুরু করেন। পিছনে লম্বালম্বা গাছের সারি। নানা রকম বানর,পাখীর বাসা।জঙ্গলের ভিতর থেকে হিংস্র পশুর ডাক ভেসে আসে। এখনে কোন জন মানব নেই বোঝাই যায়।আকাশ থেকে তোলা দ্বীপের ছবিতে দেখাযায় যে দ্বীপটির তিন দিকেই ঘন জঙ্গল,একদম সমুদ্রের জল থেকে শুরু দক্ষিণ দিকে সামান্য কিছুটা, মাইল তিনেক ধূ ধূ বালির পাড় রয়েছে।চওড়ায় বড় জোর পৌনে এক মাইল হবে।এই বালির চরের দিকেই মাঝামাঝি জায়গায় প্রফেসর গোপন তাঁবু বানিয়ে থাকতে শুরু করেন। প্রথম দুদিন তেমন কোন কিছুই নজরে এলোনা তৃতীয়দিন খুব ভোরে সবে সূর্য্য উঠবে উঠবে হঠাৎ সমুদ্রের জলের মধ্যে একটা অদ্ভুত প্রাণী মুহুর্তের মধ্যে ভেসে বেড়িয়ে গেলো।জলের মধ্যে আবছা দেখা গেলো, মনেহোলো চার পাঁচ ফুটের মাছ জাতীয় তবে অর্ধেকটা খুউব পরিস্কার গোলাপী আভা যুক্ত মুখ,পাখনাগুলো দেখা যায়নি।তবে পিছনের গাছ গুলো থেকে পাখীরা সব কিচির মিচির শুরু করে,বানররা চেঁচাতে থাকে।বুঝলাম জলে ঐ অদ্ভুত প্রাণীটা দেখে ভয়ে ডাকছে সবাই।এরপর অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকি,সেদিন বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত্রি নামে, আমি না ঘুমিয়ে অধীর উৎকন্ঠার মধ্যে চোখে টেলিস্কোপ লাগিয়ে জলের দিকে চেয়ে থাকি।ঐ দিন ছিলো পূর্ণিমা চাঁদের আলোয় চারপাশ স্পষ্ট।সাদা বালিতে চাঁদের আলো পড়েছে অপুর্ব শোভা, এক মনে চেয়ে আছি। হঠাৎ  মাঝ রাতের পর পাখীগুলো আবার ডাকছে শুনতে পেলাম, তখন টেলিস্কোপ সমুদ্রের তীরে,যেখান থেকে বালির চরা দেখা যাচ্ছে,তাকিয়ে দেখলাম -একটা বড় মাছের মতন প্রাণী অর্দ্ধেকটা জলে আর অর্দ্ধেকটা বালির চড়ায় দেখা যাচ্ছে।ভালো করে খুঁটিয়ে দেখলাম যে অংশ টি জলের দিকে সেই অংশ টা বড় মাছের আঁশেরমতন রুপালী আলো ছিটকে বেরুচ্ছে।ডাঙ্গার দিকের অংশ টিতে কোন আঁশ নেই রঙটা চাঁদের আলোয় ঠিক বোঝা যাচ্ছেনা তবে স্থলচর প্রাণীর মতন চামড়া রঙটা গোলাপী সাদা-অনেকটা সাদা শুয়োরের মতন।মুখটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছেনা।গোলাকার বলের মতন,মাথার থেকে অনেক সরু সরু শুঁড়ের মতন লম্বা লম্বা রয়েছে চিংড়ি মাছের শুঁড়ের মতন দেখতে তবে সংখ্যায় অসংখ বিছিয়ে রয়েছে।আরো ভালো ভাবে লক্ষ্য করতে দেখি-দু তিনটে ঐ রকম দেখতে প্রাণী আকারে গলদা চিংড়ির মতন ইঞ্চি ছয়েক হবে ঐ বড় প্রাণীটার মুণ্ডুটা থেকেফুট খানেক নীচে বুকের সাথে লেপ্টে রয়েছে।বেড়াল কুকুর ছানা যেমন দুধ খায় তেমনি দুধ খাচ্ছে বলে মনে হোলো।ঐ গুলো যে বড় প্রাণীটার শরীরের অংশ নয় বুঝলাম যখন ঐ ছোটো প্রাণী গুলো বড় প্রাণীটিকে ছেড়ে চারপাশে অল্প জলের মধ্যে সাঁতরে ঘুরছে। আমি সাবধানে এগুনোর জন্য প্রস্তুত হলাম, গর্ত্ত থেকে বেরিয়ে এক হাতে ক্যামেরা অন্য হাতে একটা মাছ ধরার মতন চারপাশ সরু জাল দিয়ে ঘেরা এক দিক খোলা বাক্স নিয়ে এগুতে শুরু করলাম।বড় একটা মাছ ধরার খ্যাপলা জাল কাঁধে নিলাম।  জেলেদের কাছে এই জাল ফেলা শিখে নিয়েছিলাম ।দশ পনেরো ফুট থেকে অনায়সে ফেলতে পারি। আমি ঐ বড় প্রাণীটা না বুঝতে পারে তাই আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে এগুতে লাগলাম।ঐ প্রাণীটার থেকে ফুট ছয়েক দূরে দাঁড়িয়ে ক্ষেপলা জালটা ফেলার জন্য ঠিক করতে মিনিট পাঁচেক সময় নিয়ে যেই মাথার উপর ঘুরিয়ে ঐ প্রাণীটার দিকে ছুঁড়লাম, প্রাণীটা ঠিক টের পেয়ে গেলো জালটা তার উপর ভালো মতন পড়ার আগেই মুহুর্ত্তে সমুদ্রের জলে মিলিয়ে গেলো, আমি প্রচণ্ড হতাশ হলাম।জানি একবার এইরকম আক্রান্ত হয়েছে ঐ প্রাণী আর শীঘ্র এদিকে আসবেনা, যদি প্রাণীটার মগজ বলে কিছু থাকে আর সেটা উন্নত হয় জলজ প্রাণীর থেকে।আস্তে আস্তে সাবধানে  জালটা তুলে গুছিয়ে নেবার চেষ্টা করতে দেখি জালের মধ্যে একটা ছোট বাচ্চা ধরা পড়েছে।আমার যে কি ভীষণ আনন্দ হোলো কি বলব ?কিন্তু জলের উপর টেনে আনলে বাঁচবে না  ,কি করব বুঝতে পারছিলাম না তাই জালটা পুরো জল থেকে না তুলে ঐ তার জালের চৌকো বাক্সটার মধ্যে অতি সাবধানে  জালের মধ্যেকার প্রাণটাকে জলে বাক্সটার অর্ধেক ডোবা অবস্থায় ভরলাম । এবার বাক্সটা চাপা দিলাম।জাল সরিয়ে নিলাম কিন্তু বাক্সটা জলে আর ডাঙার মধ্যে অর্ধেক ডোবা অবস্থায় রাখলাম। ক্রমশঃ  'ডাক্তার উকিল ও মৎস কন্যা ' তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
( পূর্ব ঘটনা  সংক্ষিপ্ত ঃ কাগজে মৎস কন্যার দেখা পাওয়ার ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে,এবার একজন জার্মাণ বৈজ্ঞাণিক  প্রফেসর স্যামুয়েল হান্স জানিয়েছেন,তিনি একটি অতি ক্ষুদ্র ১০ ইঞ্চি মৎস কন্যা ভূমধ্যসাগরের মধ্যে একটি ছোট দ্বীপ থেকে সংগ্রহ করে তাঁর পরীক্ষাগারে  নিয়ে এসেছেন।  কাগজে  তিনি সারা বিশ্বের  আগ্রহী বৈজ্ঞাণিক, সাংবাদিক,বিশিষ্ট মানুষদের আগামী ৭ই নভেম্বর থেকে ১৭ই নভেম্বর অবধি বেলা ৯টা থেকে বিকাল ৪টা অবধি তাঁর গবেষণাগারে উপস্থিত হয়ে প্রাণীটি দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যথাদিন যথা সময়ে অর্থাত ৭ই নভেম্বর প্রফেসর হ্যান্স এর আবাসন, জার্মাণীর ব্ল্যাক ফরেস্ট এ  ' DIVINE RESORT' এ দিল্লীর প্রশাসণিক ও কারিগরি বিজ্ঞান গবেষণা মন্ত্রক নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে ডাক্তার উকিল উপস্থিত ছিলেন। সেখানে হ্যান্স যা বলেন  সমুদ্রের জলের মধ্যে একটা অদ্ভুত প্রাণীর একটা ছোট বাচ্চা তাঁর হাতে ধরা পড়েছ ) প্রফেসর বলেই চললেন, আমি একটা ছ ফুট লম্বা।চার ফুট চওরা আর তিন ফুট উচ্চতার বিশেষ ভাবে প্রস্তুত একোরিয়াম সাথে নিয়ে এসেছিলাম,ওটাতে সমুদ্রের জল ভরে বাইরে থেকে ব্লোয়ারের সাহার্য্যে জলে স্রোত তৈরী করে, আর যাতে একোরিয়ামের মধ্যেকার আবহাওয়া ,উত্তাপ সব কিছু ওই দ্বীপের মতন হয়, সেই রকম করার জন্য ইলেকট্রণিক কণ্ডীশণার যন্ত্র লাগানো ছিলো। সবই ব্যাটারী চালিত।একোরিয়ামটির মধ্যেকার জলের ধরন ,আবহাওয়া,সবকিছু একদম বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখার ব্যবস্থা ছিলো  যাতে ঐ প্রাণী যে অন্য আবহাওয়া পরিবেশে রয়েছে তার কোন প্রভাব না পরে। বুঝলাম এই প্রাণীটি স্তন্যপায়ী বড়জোর ছোট ছোট জলজ উদ্ভিদ, প্রাণী হতেপারে।প্রাণী টি এতোই ছোট যে ওটা আদৌ মৎস কন্যা কিনা বোঝা যাচ্ছিল না।একটা হালকা আকাশী রঙের কাপড় দিয়ে একোরিয়ামটা ঢাকার ব্যবস্থা ছিলো।এবার ঐ প্রাণীটা একোরিয়ামে ভরে কাপড়ে ঢেকে অপেক্ষা করতে লাগলাম জাহাজটা  ফেরার জন্য। অবশেষে দুদিন বাদে জাহাজের দেখা পেতে ওটাতে করে একোরিয়াম সমেত ফিরে এলাম নিজের আস্তানায় গবেষনাগারে।দীর্ঘ দু'বছর অসীম ধৈর্য্য সহকারে প্রতিপালন করে বড় করে তুলেছি, এখন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এই প্রাণীটি মৎস কন্যা । মাননীয় অতিথি গন,আপনারা সকলেই বুঝতেই পারছেন এই বিরল সম্পদটি রক্ষা করার জন্যআমাকে কি ধৈর্য্য আর সতর্কতার সঙ্গে প্রতিটি ক্ষণ কাটাতে হয়েছে। সতর্কতা নিতে হয়েছে প্রচণ্ড, কারণ যদি কোন কারণে গবেষণাগারে বিশেষ করে ঐ একোরিয়ামে পরিবেশ পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়, বদলে যায়, কোন রকম পরিবর্তন ঘটে তাহলে বাঁচানো যাবেনা মৎস কন্যাকে মুহুর্তে বিনষ্ট হয়েযাবে সকলপ্রয়াস। এই জন্য কতকগুলি বিশেষ সতর্কতার পদক্ষেপ নিতে হয়েছে, যেমন এক সাথে পাঁচজনের বেশী অতিথি ঐ পরীক্ষাগারে প্রবেশ করতে পারবেন না।একটি ব্যাচে ৫ জন প্রবেশ করবেন আর আধ ঘণ্টা দেখার সময় পাবেন।একোরিয়াম থেকে চার ফুট দুরত্ব থেকে দেখতে হবে, কারণ অতিথিগনের গায়ের তাপ ,নিশ্বাস প্রশ্বাস যে পরিবেশ প্রভাব ফেলবে সেটাও ক্ষতিকর, এছাড়া মৎস কন্যা র মধ্যে কোন রকম উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে যদি অতিথিদের উপস্থিতি টেরপায়।এ জন্য বেশীক্ষণ দেখার সুযোগ পাবেন না,তাছাড়া একটা ব্যাচের পর এক ঘণ্টা বাদ দিয়ে দ্বিতীয় ব্যাচ ঢুকবে।মাননীয় অতিথি গনের নিকট আমার একান্ত অনুরোধ আপনারা ঐ গবেষণাগারের ঢোকার আগে আপনাদের সাথে যদি কোন রকম বৈদ্যুতিক বা বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি থাকে,কোন রকম রাসয়ানিক দ্রব্য থাকে অনুগ্রহ করে সেগুলি গবেষনাগারের প্রবেশ দ্বারের ডানপাশে গচ্ছিত রাখার ঘরে জমা দিয়ে কুপন নিয়ে নেবেন।একদম ফাঁকা খালি হাত পায়ে প্রবেশ করবেন, কোন রকম বাড়তি  জিনিস সঙ্গে রাখবেন না। গবেষনাগারে  প্রবেশ করার আগে আপনাদের সকলের এক্সরে পরীক্ষা,মেটাল ডিটেক্টর আর এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন পরীক্ষা করা হবে।এগুলি সবই ঐ বিরল প্রাণীটির রক্ষণার্থে তাই অপরাধ নেবেননা আমি দুঃখিত।এবার আপনারা  ঐ মহার্ঘ্য দুর্ল্ভ রুপকথার প্রাণীটিকে স্বচক্ষে দেখার জন্য প্রস্তুত হন।আগে এসেছেন আগে যাবেন, এই ভাবে পর পর পাঁচজন করে ব্যাচ হিসাব করে যাবেন। আপনাদের সহায়তা করার জন্য এখানে বহু কর্মী আছেন,এরা সকলেই আমার রক্ষী বাহিনীর লোক। কারো অসুবিধা বা কিছু জিজ্ঞাস্য থাকলে সহায়তা করার জন্য যে কার্য্যালয় আছে সেখানে যোগাযোগ করবেন। ধন্যবাদ আপনাদের দর্শণ সুখের হউক । অধ্যাপক স্যামুয়েল হ্যান্স এই কথাগুলি বলে চলে গেলেন। এরপর দেখি দুজন উর্দ্দিপরা লোক আমাদের প্রত্যেকের হাতে একটা লিফলেট আর একটা টোকেন নম্বর দেওয়া কার্ড দিল যাতে প্রত্যেকের কত নং ব্যাচ-ক' টার সময় গবেষণাগারে প্রবেশ সময় লেখা আছে। লিফলেটে লেখা আছে প্রত্যেক অতিথি ,দর্শনার্থীদের কি করণীয়( গবেষনাগারে প্রবেশের আগে কোথায় যেতে হবে,সেখানে কি করণীয়,সব ভালো করে বোঝানো আছে)। আমার ব্যাচ নং চার, সময় ৩টা ৩০ মি। যথা সময়ে আমি অন্য চারজন অতিথির সাথে উঠে গবেষনাগারে যাবার জন্য এগুলাম। আমার সাথে যে ছোট্ট লাগেজ ব্যাগটা ছিলো সেটা আমি মালপত্র রাখার ঘরে গচ্ছিত করে টোকেন নিয়ে এগিয়ে গেলাম গবেষনাগারের দরজার দিকে।আমাকে নিরাপত্তারক্ষীরা যখন পরীক্ষা করে দেখছিলেন তখন মেটাল ডিটেক্টারে আমার একটা ছোট্ট বাক্স নিরাপত্তারক্ষীরা আটকে জানতে চাইলো ওটা কি? আমি জানালাম ওটা আমার শ্রবন যন্ত্র, ওটা ছাড়া আমি কানে শুনতে পাইনা,ওটা পরীক্ষা করে দেখতে  পারেন।নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথমে আপত্তি জানালেও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নিলেন এটাতো সাথে থাকতেই পারে, এটাতো অপরিহার্য্য তাই আমাকে তারা ঢোকার অনুমতি দিলেন। গবেষনাগারের দরজায় সশস্ত্র প্রহরী ,নিরাপত্তারক্ষীরা যে অনুমতি পত্র দিয়েছে সেটা দেখে আমাকে ঢোকার অনুমতি দিলে গবেষনাগারের  ঘরে ঢুকলাম। এটা মুল গবেষনাগার নয়, তার একটা অংশ, আলাদা করে ঘিরে বানানো.১৪'X১২' এর মতো জায়গা ঘরের ঢোকার দরজার বিপরীত দেওয়ালের কাছে একটা বড় টেবিলের উপর কাঁচের একোরিয়াম,ঘরে হালকা আলোয় সব দেখা যাচ্ছে,কিন্তু আলোটার তীব্রতা নেই-তাই দূর থেকে ভালোমত দেখা যাচ্ছে না।একোরিয়ামের সামনে চারফুট  মতন দুরত্ব বজায় রেখে গার্ড দেওয়া আছে বেড়া দিয়ে।বেড়ার এপাশ থেকে একোরিয়ামের মধ্যে একটা মাছের মতন প্রাণী ঘুরে বেড়াচ্ছে দেখা যাচ্ছে।খুউব খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যাচ্ছে এই প্রাণীটি আমাদের দেখা কোন প্রাণী নয় এর অর্দ্ধেকটা মাছের মতন আঁশে ঢাকা আর অর্দ্ধেকটা মানুষের মতন। তবে হাত পা মানুষের মতন নয়- ওটা লম্বা পাখনার মতন,নৌকার হাল যেমন হয়।নাক, মুখ, চোখ হুবহু মানুষের মতন নয়,তবে অনেকটাই ওই আদলের,মাথায় অগুনতি সরু সরু নালিকা, যেগুলি  চুল মনে হতেই পারে।ছবি তোলা বারন,কিন্তু আমি যেটা হিয়ারিং এড বলে নিয়ে এসেছি ওটা আসলে একটা বিশেষ ভাবে প্রস্তুত  বৈদ্যুতিন যন্ত্র, যাতে ইলেক্ট্রো ইনফ্রা ফোটো আর থার্মাল সেন্সেটিভ ডিভাইস যুক্ত থাকায় নিখুত ভাবে বহু দুরথেকে সব কিছুর ছবি তা স্থির চিত্র বা মুভি দুটোই করা সম্ভব।এই ছবি যেকোন উন্নত ক্যামেরার তোলা ছবির থেকেও স্পষ্ট ও নিখুত।চোখে চশমার ডাঁটি টা বিশেষ ভাবে প্রস্তুত এর মধ্যে সমস্ত রকম ডিটেকটর, ও রেকর্ডার আছে মাইক্রোচিপ লেভেলে রেকর্ড হয়ে যায় যে সমস্ত ইলেক্ট্রণিক,ইলেক্ট্রিক্যাল বা ইলেক্টোমেকানিক্যাল ডিভাইস গুলো এই পরীক্ষা গারে রয়েছে তার কার্য্য পদ্ধতি,সিগ্নালিং,কোনো ইলেক্ট্রো-অপ্টিক্যাল তরঙ্গ আছে কিনা?তড়িৎ  চুম্বকীয় বা মাইক্রো ওয়েভ ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা?চশমার ফ্রেমের একদিকে আছে থার্মাল হিডেন ক্যামেরাওটা ইনফ্রারেডেও ছবি সাউন্ড তুলতে পারে।আমি ঐ ঘরের সমস্ত কিছুর তথ্য নথীভুক্ত করে নিয়ে চলে এলাম।গবেষনা ঘরে ঢোকবার সময় দরজার পাশে রক্ষীর কাছে রাখা খাতায় প্রবেশের সময় লিখে স্বাক্ষর করতে হয় আবার বেরুনোর সময় আবার ঐ রকম  সময় দিয়ে স্বাক্ষর করতে হয়। যদি মৎস কন্যা র কোন ক্ষতি হয় কোন সময়ে হয়েছে? তখন দর্শক কারা ছিলেন চিহ্নিত করার জন্য এই ব্যবস্থা।আমার হ্যান্স এর এই সমস্ত ব্যবস্থাপনা টায় একটা সন্দেহ সৃষ্টি করেছে,- মৎস কন্যা টি সঠিক প্রাকৃতিক প্রাণী না সৃষ্টি করা কোন প্রাণী!কেন প্রফেসর এতো সতর্কতা অবলম্বন করেছেন?সত্যই কি মৎস কন্যা র নিরাপত্তার জন্য নাকি কোন সত্য তথ্যকে গোপন রাখতে? আমি   ' DIVINE RESORT' এ থাকব না একথা আগেই ঐ খানকার কার্য্যালয়ে নথিভুক্ত করিয়ে রেখেছিলাম, তাই আমি গবেষনাগার থেকে বেরিয়ে মুল কার্য্যালয়কে অবগত করিয়ে বেরিয়ে চলে এলাম সোজা আমার হোটেলের বুক করে রাখা সুইটে।আমার সন্দেহ হয়ে ছিলো, প্রফেসরের আস্তানায় নিরাপত্তার্ররঅভাব হবে স্বাধীন ভাবে কোন কাজ করা সম্ভব হবেনা।আমার সন্দেহ আরো দৃঢ় হয় ঐ খানে অতিথি আবাসে যে ঘর গুলো নির্দিষ্ট ছিলো প্রতিটি ঘরেব দুজন  করে থাকার ব্যাবস্থা।ঐ ঘর গুলোতে হিডেন ক্যামেরা লাগানো আছে,ক্লোজড সার্কিটেটিভিতে নজরদারীর ব্যবস্থা আমার গোপন অনুসন্ধান যন্ত্রে ধরা পড়েছে। আমি হোটেলে ফিরে নিজের ঘরে এসে ডিটেক্টর, রেকর্ডারগুলি নিয়ে ডিকোডারে মেশিনে লাগিয়ে পরীক্ষা করতে এক অত্যাশ্চর্য্য রহস্যময় বিষয় পরিস্কার হয়ে উঠল।একোরিয়ামে যে প্রাণীটি ঘুরে বেড়াচ্ছে ওটি একটি কৃত্রিম রোবট বিশেষ।এটি তৈরী করা হয়েছে কৃত্রিম পলিমার দিয়ে মাছের ন্যায় দেখতে, অভ্যন্তরে জটিল যন্ত্রপাতি যা বিশেষ কম্পাঙ্কের ইলেক্ট্রোম্যাগ্নেটিক  তরঙ্গ দ্বারা কন্ট্রোল করা চালানো যায়।একোরিয়ামের মাথায় যে কন্ট্রোলার লাগানো আছে সেখানেই প্রোগ্রাম করা যন্ত্র রয়েছে  সেটার সাহার্য্যে ওই মৎস কন্যার মত দেখতে রোবটটাকে চালানো ও নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছে।পাছে এই সত্যটা প্রকাশ পায় তাই এতো নিয়ন্ত্রণ কঠোর নিরাপত্তার ঘেরা জাল।আগামী ১০ই নভেম্বর যখন আলোচনা সভায়  নানা দেশের বিজ্ঞজনেরা উপস্থিত থাকবেন সেখানে প্রফেসর স্যামুয়েল হ্যান্সের জালিয়াতি ফাঁস করে দেব তথ্য প্রমান  সহ।প্রফেসর চ্যালেঞ্জ জানালে ভালো, সবার সামনে আসল ঘটনা প্রকাশ পাবে।কিন্তু প্রফেসর এটা মেনে নেবেন না হিংস্র হয়ে প্রতিশোধ নেবার জন্য আক্রমন করবেনই।তাই আমার নিজেরও নিরাপত্তা প্রয়োজন। আমি ভারতীয় হাই কমিশনসকেবিষয়টিগোপনে জানালাম এবং অনুরোধ করলাম নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করার জন্য।হাই কমিশনস আশ্বাস দিলে আমি হোটেোলে ফিরে এলাম। ১০ তারিখ সকালে আমাকে হাই কমিশনস থেকে জানাল,চারজন সশস্ত্র গার্ড ঐ দিন কমিশনস অফিস থেকে আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকবেন,তাঁরা লক্ষ্য রাখবেন আমার উপর কোন রকম আক্রমন হয় কিনা? যদি সেই রকম পরিস্থিতি হয় তাঁরাই মুহুর্ত্তে ব্যবস্থা নেবেন, বহু পুলিশ সাধারন বেশে উপস্থিত থাকবেন।কোন রকম বিপদ ঘটবেনা। আমি যথা সময়ে প্রফেসর স্যামুয়েল হ্যান্সের আলোচনা সভায় উপস্থিত হলাম।এদিন ও পরিচয় পত্র আমন্ত্রণপত্র দেখিয়েই ঢুকতে হয়েছে, এদিন সঙ্গে করে নিয়ে যাবার জন্য চেকিং তেমন  কড়াকড়ি ছিলোনা, কারণ আজ গবেষনাগার যাওয়া যাবেনা বন্ধ থাকবে.১২টা নাগাদ আলোচনা সভা শুরু হোলো।আলোচনা গৃহে বহুলোক উপস্থিত,বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে বহু প্রতিনিধি এসেছেন।তাদের বসার স্থান আগে থেকেই নির্দিষ্ট। আমন্ত্রিতের নাম কোন দেশের প্রতিনিধি ,চেয়ারের পিছনে লাগানো ছিলো তাই খুঁজে পেতে কোন অসুবিধাই নেই,তবুও অনেক সাহার্য্যকারী কর্মী রয়েছেন তারা সাহার্য্য করছেন। আমার দুপাশে দুজন করে হাই কমিশনসের প্রতিনিধির জায়গা তাঁরাও এসেছেন।প্রথমে প্রফেসর স্যামুয়েল হ্যান্স সেই প্রথম দিনের বক্তৃতাটি দিয়েই শুরু করলেন, কিভাবে উনি মৎসকন্যার বাচ্চা পেয়ে নিয়ে এসেছেন,প্রতিপালন করেছেন ইত্যাদি।এখনও পর্য্যবেক্ষণ নিরীক্ষণ কার্য্য চলছে যদি আর বছর খানেক বাঁচিয়ে রাখা যায় তা হলে এই মৎস কন্যাটিকে বিশদভাবে সর্বসাধারণের গবেষনার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।বর্তমানে এটা সম্ভব হচ্ছেনা কারণ মৎস কন্যাটিকে বাঁচিয়ে রাখাই প্রধান চিন্তা। ওর পুর্ণ বিকাশ ঘটতে আরো সময় লাগবে,এখনো পুরোপুরি সব কিছু বিকশিত হয়নি ওর বর্ধণকাল চলছে।এখন এই গবেষনাগারের বাইরে এটাকে বাঁচানো সম্ভবপর নয়।আলোচনা বেশ জমে উঠেছে নানা জন নানা কৌতুহলী প্রশ্ন করছেন প্রফেসর হ্যান্স গর্বিত ভাবে উত্তর দিয়ে  যাচ্ছেন।বড় মৎস কন্যাটির আর দেখা পাওয়া যাচ্ছেনা কেন? কি কারণ?একটাই কি মৎসকন্যাছিলো? মৎসকন্যার যখন বাচ্চা পাওয়া গেছে তখন নিশ্চয় আরো মৎসকন্যা আছে,তাদের দেখা যায়না কেন?ঐ দ্বীপের পাশেই যখন দেখা যায় তাদের তাহলে ওখানে বিশদ ভাবে গবেষনার ব্যাবস্থা করা   হচ্ছেনা কেনো?এইসব প্রশ্নত্তরে যখন আলোচনা মুখরিত, আলোচনা তখন ঘন্টা দু য়েক অতিক্রান্ত  হয়েছে  একটা চায়ের বিরতি ১৫ মিনিট দিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু হতেই আমি সভায় বোমাটি ফাটালাম। আমি বললাম প্রফেসর হ্যান্স আপনি এতক্ষন যে তথ্য গুলি পেশ করলেন এগুলি সবই মনগড়া কাল্পনিক।আপনার মৎসকন্যাটি আদৌকোনো প্রাণী নয়,এটা একটি কৃত্রিম যান্ত্রিক খেলনা রোবট।আমার কথাটি সভায় শোনামাত্র প্রফেসর হ্যান্স অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন,চিৎকার করে বলেন মিস্টার উকিল আপনি কার সমন্ধে কি যাতা বলছেন? আমি আপনার বিরুদ্ধে মানহানীর মামলা করবো আপনাকে পুলিশে দেব।আপনার কথার সত্যতা আপনি প্রমান করতে পারবেন?আমি অবশ্যই পারবো জানাতে প্রফেসর হ্যান্স খানিকটা বিব্রত বোধ করেন,একটু হতভম্ব হয়ে বলেন আপনি কতটুকু জানেন মৎসকন্যা সম্পর্কে?আপনি কতটুকু দেখেছেন?দেখেছেন তো চার ফুট দূর থেকে একটা একোরিয়মের মধ্যে, তাতেই এতো কিছু বুঝে গেলেন?আপনি কিসের সাহার্য্যে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে ওটা জীবন্ত প্রাণী নয়  ওটা রোবট?আমি বললাম আমার কাছে যে প্রামান্য তথ্য আছে জন সমাজে  সে গুলি প্রকাশ করব। আমার সংগৃহীত তথ্য ও তত্ত্ব বিশ্লেষণ গুলো  মৎসকন্যার ছবি ফটো প্রিন্ট সমেত একটি পুস্তিকাকারে সবার মধ্যে বিলি করে দিলাম,ঐ পুস্তিকাতেআমি কিভাবে তথ্য ও তত্ত্ব  সংগ্রহ করেছি তার ও বিশদ বিবরণ উল্লেখ আছে। হঠাৎ এই পুস্তিকা হাতে পেয়ে প্রফেসর অগ্নিশর্মা হয়ে বলেন "যতসব ইডিয়ট সিকিউরিটি তারা কি করে এই যন্ত্র সহ গবেষনাগারে এই চোর ভণ্ড লোকটিকে ঢুকতে দিলো, অবিলম্বে এই লোকটিকে আটক করো- সিকিউরিটি অবিলম্বে লোকটিকে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা কর।প্রফেসরের হুঙ্কার শুনে জনা দশেক সিকিউরিটি গার্ড  আমার দিকে ধেয়ে আসছিলো কিন্তু হাই কমিশনসের প্রতিনিধিরা উঠে দাঁড়িয়ে পাল্টা হুঙ্কার দিলেন খবরদার কেউ ওনার কাছে আসবেন না,আমরা স্থানীয় প্রশাসনিক প্রধানদের জানিয়েই এসেছি-পুলিশ দপ্তর থেকে বিদেশী হাইকমিশনস অফিসেও বিষয় টি অবগত আছেন।আমরাও প্রস্তুত আছি,যদি ওনার প্রতি কোনরুপ অশোভন আচরণ করার চেষ্টা করা হয় আমরা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব, এই আলোচনা সভায় পুলিশ,সেনা বাহিনী প্রবেশ করবে।এই কথা শুনে প্রফেসর স্যমুয়েল হ্যান্স ও তাঁর রক্ষী বাহিনী থমকে গেলো।আমি বললাম আমি আরো প্রমান আপনাদের সামনে দিতে প্রস্তুত।আমি গবেষনাগারের একোরিয়ামটি জন সমক্ষে এনে প্রমান করে দেব যে,মৎসকন্যা, এটা দূর থেকে চালিত রোবট।আমার কথা শেষ হবার আগেই দেখি উর্দ্ধশ্বাসে সভাকক্ষ ছেড়ে প্রফেসর হ্যান্স ভিতরে গবেষনাগারের দিকে দৌড় লাগালেন। সকলে হতভম্ব।প্রফেসর মুল প্রবেশ দ্বার দিয়ে  ' DIVINE RESORT' বাংলো তে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দেবার জন্য নির্দেশ দিলেন নিরাপত্তা কর্মীদের।মুল আবাসনের গেট বন্ধ হয়ে গেলো। প্রফেসর হ্যান্স ভিতরে গবেষনাগারের দিকে তড়িৎ গতিতে চলে গেলেন। এরপর একটা বিকট জোর বিস্ফোরণের আওয়াজ।উপস্থিত সকল আমন্ত্রিত ব্যক্তিরা ভয়ে সন্ত্রস্ত  সবাই আলোচনা কক্ষ ছেড়ে বাইরে বেড়িয়ে এসেছেন।নিরাপত্তারক্ষীরা,অফিস কর্মীরা, বাইরে থাকা পুলিশরা সবাই এসে ঘিরে ফেলেছে গবেষনাগারের ভবনটা।এরপর পুলিশ থেকে খবর দিয়ে আরো বড় পুলিশ বাহিনী,দমকলের লোকজন গাড়ী এসে হাজির।গেট ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে দেখা গেলো গবেষনাগারের মৎসকন্যার কক্ষটি সম্পুর্ণ ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। দাউ দাউ করে জ্বলছে পরীক্ষাগার জুড়ে।প্রফেসর হ্যান্স এর ছিন্ন ভিন্ন দেহটা পড়ে রয়েছে গবেষনাগারের  একোরিয়ামটার কাছে। একোরিয়ামটির কোন অস্তিত্ব নেই চারপাশে কাঁচের গুড়া লণ্ড ভণ্ড হয়ে আছে।মৎসকন্যার ওকোন অস্তিত্ব নেই চারপাশে চুর্ণ বিচুর্ণ ধ্বংসাবশেষ,আগুন জ্বলছে, বোঝার উপায় নেই কোনটা মৎসকন্যার রোবট।প্রফেসর হ্যান্স এর হাতে একটা রিমোট কন্ট্রোলারের মতোন যন্ত্র যা দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিলো।দমকল এসে আগুন নেভানোর পর ফরেনসিক দপ্তর এসে বহু কিছু নমুনা নিয়ে যায় পরীক্ষার জন্য। সমস্ত আমন্ত্রিত ব্যাক্তিরা ধিক্কার দিতে দিতে ফিরে চলে গেলেন।সকলেই তখন ছিলেন প্রফেসরের এই জালিয়াতির নিন্দা সমালোচনায় মুখর। আমার ফেরার জন্য বিমানের টিকিট কাটাই ছিলো, এই দিনের ই রাতের বিমানে- কোলকাতার উদ্দেশ্য রওনা হলাম।সারা পথে প্রফেসর  স্যমুয়েল হ্যান্সের এই জালিয়াতির আর তার সুন্দর পরিকল্পনার কথা ভাবতে ভাবতে ফিরে এলাম।পর দিনের সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে সারা বিশ্বে এই খবর পৌঁছে গেলো কিন্তু আমার কাছে ছাড়া ঐ রোবট মৎসকন্যার ছবি কারো কাছে না থাকায় তার কোনো ছবি প্রকাশিত হয়নি।প্রফেসর হ্যান্সের নিখুঁত পরিকল্পনার তারিফ করতেই হবে।আমার হিডেন ডিটেক্টর,রেকর্ডার,এবং ওয়েভ জেনারেটর কোনটাই মেটাল ডিটেক্টর বা এক্স-রশ্মি দিয়ে ধরা পড়েনা কারন আমার সমস্ত যন্ত্রপাতি সরঞ্জাম এমন রাসায়নিকের প্রলেপ দেওয়া আবরণে ঢাকা থাকে বাহ্যিক সব রকম তরঙ্গ, রশ্মি প্রাথমিক ভাবে শোষিত হয় তারপর অপর তল দিয়ে পুনরায় নির্গত হয়ে যায় ফলে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনা।স্বচ্ছ কাঁচ যেমন আলোর ক্ষত্রে আচরণ করে ,এক্ষেত্রে ভেতরের বস্তু ধরা পড়েনা।


২) ডাক্তার উকিল ও মগজ চালান

'বিশ্বের বিস্ময় ডাক্তার উকিল  '   লেখাটা অনেক বন্ধুর ভালো লাগায়,  আমি কল্পবিজ্ঞানের দ্বিতীয়  কাহিনী শুরু করলাম , পাঠকদের ভাল লাগলে পরবর্তী কাহিনী গুলি  প্রকাশিত হবে‌। মতামত জানাবেন।   লেখাগুলি অনেক আগের তাই এখন প্রযুক্তি উন্নত হওয়ায় লেখাগুলির আকর্ষণ কম লাগতে পারে।যথা সময়ে প্রকাশ করতে না পারাটা আমার ব্যর্থতা  ।                                                                              
ডাক্তার উকিল ও মগজ চালান    তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় আমি প্রথম বার যখন ঝাড় গ্রামে ডাক্তার উকিল জেঠুর উন্মেষ এ গেছিলাম, তখন ই ডাক্তার জেঠু আমাকে এই বিষয়টার একটা প্রাথমিক বর্ণনা দিয়ে বলেছিলেন আগামী দিনে এই পৃথিবীতে দেখবে হাজারটা রবীন্দ্রনাথ,হাজারটা আইন স্টাইন সৃষ্টি করা সম্ভবপর হচ্ছে-হয়ত রবীন্দ্রনাথ বা আইন  স্টাইনের মতন হুবহু নয় কিন্তু তখন পৃথিবীতে একই রকম প্রতিভাধরের একাধিক রেপ্লিকা দেখতে পাবে। আমি অবাক হয়ে বলেছিলাম ঠিক বুঝতে পারছিনা,আপনি যদি একটু বুঝিয়ে বলেন। তখন ডাক্তার জেঠু মৃদু হেসে বলেছিলেন-ঠিকই বলেছ,জিনিষটা শুনলে ঠিক বোঝা যাবেনা তবে চাক্ষুষ দেখতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। উনি বললেন,পৃথিবীর নানা প্রান্তে গবেষণা চলছে,কোথাও কোথাও গোপনে অনেক দূর এগিয়েছে, তবে বিষয়টি এখন ও তেমন আলোড়িত হয়নি। ডাক্তার জেঠু বললেন,আমি রাশিয়ার একটি স্কুলে দুটি ছাত্রের মধ্যে কথাবার্তা শুনে বেশ স্তম্ভিত হয়ে গেছিলাম-ওদের ধারনা হয়ে ছিলো যে আমি রাশিয়ান ভাষা  বুঝিনা কিম্বা ওরা আমাকে তেমন আমল দিতে চায়নি,ভেবেছে বিজ্ঞানের এই গোপন জটিল বিষয় আমার বোধগম্য  হবে না।আজকের দিনে যেমন হার্ডডিস্ক বা কমপ্যাক্ট ডিস্কে তথ্য কপি করে রাখা হয়- একই জিনিষের বহু কপি তৈরি করা যায় নিমেষে ঠিক তেমনি মানুষের মস্তিষ্কে থাকা সম্পূর্ণ তথ্য ,মস্তিষ্কের গঠন এর হুবহু  নকল তৈরী সম্ভব।  যেহেতু মানুষের মস্তিষ্ক ঐ বৈদ্যুতিন (ইলেকট্রণিক)  যন্ত্রের মতনই এক প্রক্রিয়ায় কাজ ক রে থাকে।

ওখানে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে পাঠানো তথ্য বা সংকেত শিরা ধমনী বাহিত হয়ে মস্তিষ্কের প্রকোষ্ঠে যায়-ওখানে ওই তথ্য বিশ্লেষণ করে তেমন তেমন অনুভূতি সৃষ্টি হয়-শরীরের বিভিন্ন অংশে সেই সব বিশ্লেষিত তথ্যের সংকেত চলে যায়।যদি মানুষের মস্তিষ্ক ঠিক ঠিক ভাবে কাজ করে, তথ্যগুলো  সংকেত কিভাবে গ্রহণ করে,বিশ্লেষণ করে্‌ বোঝা যায়,তা হলে ওই মস্তিষ্কের সঞ্চিত তথ্য সমুহের নকল করা সম্ভবপর হবেই।ছাত্র দুজন এও আলোচনা করছিলো মানুষ চিন্তা ভাবনা করলে মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কম্পন , বিদ্যুৎ তরঙ্গ সৃষ্টি হয়, তাই চিন্তা করলে মাথা ঘামে,মাথা ভার ভার মনে হয়।এই বিদ্যুৎ তরঙ্গ যে কম্পন সৃষ্টি করে সেই কম্পন কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের মতন মানুষের মস্তিষ্কে মগজে লিপিবদ্ধ হয়।মানুষের মস্তিষ্কেও দু রকম স্মৃতি ভান্ডার আছে, একটা তাতক্ষণিক সাময়িক,অপরটি স্থায়ী। ছাত্র দুজন কৃত্রিম জেলীর রুপান্তর ঘটিয়ে  তার মধ্যে বৈদ্যুতিন (ইলেকট্রণিক)  সংকেত গ্রহণ ও  বিশ্লেষণ করার প্রচেষ্টা চালাছে।তাদের কথা থেকে এটাও বুঝতে পারলাম যে তাদের একটা নিজস্ব গোপন পরীক্ষাগারে-গবেষণা  করে, গিনিপিগের উপর  পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছে।ছাত্র দুজন হাতে একটা ফাইল নিয়ে আলোচনা করছিলো-আমি দূর থেকেই আড়চোখে লক্ষ করছিলাম, ঐ ফাইলে কয়েক টা ফটোগ্রাফ আছে,যেখানে সারি সারি গিনিপিগ পরীক্ষাগারে টেবিলে মোমের ট্রের উপর শোয়ানো। মস্তিষ্কে সারা দেহে বহু তারের   সংযোগ ।বড়,বড় বাক্সের মতন যন্ত্র, তাতে বহুমিটার, এল,ই,ডি, বাজার লাগানো আছে-বোঝা যাচ্ছে গিনিপিগ গুলোর মস্তিষ্ক সহ সারা দেহের অনুভুতি,বাহ্যিক প্রভাবের পরীক্ষা গবেষণা  চলছে। আমি এরপর ছেলে দুটিকে দূর থেকে অনুসরণ করে তাদের গবেষণাগারের অনুসন্ধান পেলাম। গাছপালা ঘেরা একটা পরিত্যক্ত বাগানের মধ্যে একটি পুরানো জনশূন্য বাড়ির মধ্যেই গড়ে উঠেছে গবেষণাগার। ৮-১০ জন তরুন যুবক ডাক্তারবাবু অপারেশনের সময় যেমন এপ্রোন পরে থাকেন সেই রকম এপ্রোন পরে গবেষণাগারে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে একান্ত গবেষণায় মগ্ন ।কারো কারো কানে বড় হেডফোন লাগানো-সামনে রেকর্ডিং স্টুডিওর মত যন্ত্রপাতি,হাজারো সুইচ,লাইট মিটার। ঐ যুবক দুজন আসতে সকলে তাদের ঘিরে ফেললো।যুবক দুজন সবাইকে  যে নির্দেশ দিলো সেটা এই রকম , শহরে মোবাইল ভ্যান নিয়ে চারপাশে নিরাপত্তা বাহিনী যখন টহল দিচ্ছে, তাদের কোন একটি যন্ত্রে এই অঞ্চলে টহল দেওয়ার সময় একটি অতি উচ্চ কম্পাঙ্কের তরঙ্গের উপস্থিতি ধরা পড়েছে।তারা সন্দেহ করছে কোন গোপন জঙ্গী বাহিনী এখানে গোপনে  কার্য্য কলাপ চালাচ্ছে,তাদের উচ্চ কম্পাঙ্কের বেতার সংযোগ ব্যাবস্থা ,যোগাযোগ রাখছে-এখন ও সঠিক স্থান ও উতস বার করতে পারিনি।সর্তক হওয়া প্রয়োজন, নইলে গবেষণার বিষয় জানাজানি হয়ে যাবে। সকলে জানতে চাইলো এখন তাহলে কি করণীয় ?ঐ যুবকের মধ্যে একজন বলল- আমাদের থিংক রিডার, পালস ডিকোডার যন্ত্রটি একমাত্র উচ্চ কম্পাঙ্ক সৃষ্টি করে -অবিলম্বে ওই যন্ত্রদুটিকে তরঙ্গ নিরোধক আবরণ তৈরী করে ,তরঙ্গের বিকিরণ ও বিস্তার আটকাতে হবে।এটা কি করে সম্ভব? জানতে চাইলে অপর যুবকটি জানালো একটি ধাতব আবরণের মধ্যে সমগ্র যন্ত্রটি রেখে বাইরে একটি বর্তুলাকার তড়িত চুম্বকের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা দরকার। এই ক্ষেত্রের মধ্যেই ঐ বিকিরিত তরঙ্গ বাধাপ্রাপ্ত হবে।
এক ঘন্টার মধ্যে এরকম ব্যবস্থা তারা করে ফেললো।আমি একটা ঝোপ ঝাড়ে ঢাকা গাছের উপর উঠে লুকিয়ে সব লক্ষ কর ছিলাম। যুবকেরা নিজেদের কাজ নিয়ে এতটাই মগ্ন ছিলো আমার উপস্থিতি তারা বুঝতে পারিনি-তাছাড়া এমনটা হতে পারে তারা ভাবতেও পারিনি।আমি আমার গোপন মাইক্রো ইনফ্রারেড ক্যামেরা ,রেকর্ডিং যন্ত্র ও শক্তিশালী বেতার শব্দ ও সংকেত প্রেরণের যন্ত্রটা যেটা একটা ছোট দেশলাইএর বাক্সের চেয়েও ছোট, ঐ ঘরটির কাছে রেখে চলে এলাম আমার হোটেলে নিজের ঘরে । ঐযন্ত্রটির মধ্যেই সমস্ত কিছু রেকর্ড হয়ে থাকর ব্যবস্থা আছে। আমি ঠিক করলাম সন্ধ্যার পর গিয়ে গোপনে যন্ত্রটি নিয়ে আসবো, আর ঘরে বসে দেখে নেব গবেষণার হাল তক পরিস্থিতি। সিধান্ত মোতাবেক সন্ধ্যাবেলা গোপনে ঐ গবেষণাগারের কাছ থেকে নিয়ে এলাম আমার যন্ত্রটা। আমার যন্ত্রটা এনে আমার নিজস্ব বিশ্লেষক যন্ত্রে লাগাতেই যে তথ্য  চিত্রসহকারে সামনে ফুটে উঠল তাতে আমি বিস্ময়ে হতবাক। জোড়া গিনিপিগ টেবিলে শোয়ানো আছে। দুটি করে গিনিপিগের পরস্পর  মস্তিষ্কের মধ্যে বহু তার যুক্ত।একটি গিনিপিগের মস্তিষ্ক থেকে অদ্ভুত অজস্র সংকেত প্রেরিত হচ্ছে অন্য গিনিপিগের মস্তিষ্কে,আর অদ্ভুত ভাবে সেই মস্তিষ্কটির যে পরিবর্তন ঘটছে বোঝা যাচ্ছে। এরপর ঘন্টা তিনেক পর দুটি করে গিনিপিগ নিয়ে গবেষকগন পরীক্ষাকরে দেখছেন-দুটো গিনিপিগের মধ্যে আশ্চর্য্যমিল।ঠিক একটা অন্যটার হুবহু নকল,চলাফেরা কোন  কিছু দেখে তার প্রতিক্রিয়া সব এক, দুটোর মধ্যে।বুঝলাম দুটো গিনিপিগের মস্তিষ্ক একই ভাবে কাজ করছে, দুটো হুবহু এক হয়ে গেছে।
এরপর আরো বিস্ময়কর ভাবে পরদিন একইভাবে তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছি মস্তিষ্ক সংযোজনের আগে দুটো গিনিপিগের আচরণ একরকম থাকেনা।কোন টা অতি চঞ্চল অপরটি শান্ত।একটা খাবার জন্য পাগল ,অপরটা অতো লোভী নয়।একটা লম্বা লম্বা লাফ দেয়, অন্যটা সেই তুলনায় কম লাফায়।  কিন্তু মগজ চালানের পর দুটোই হুবহু এক আচরণ করে।গবেষকগন মস্তিষ্ক পরস্পর  সংযোজনের আগে একটি যন্ত্রে গিনিপিগ গুলোর নানা পর্যবেক্ষণ তথ্য পরীক্ষাকরে সমস্ত তথ্য রেকর্ডভুক্ত করে রাখছে। মগজ চালানের পর আবার দুটোর   পরীক্ষাকরে সমস্ত তথ্য রেকর্ডভুক্ত করে রাখছে।

 গবেষকগনের কথাবার্ত্তা আলোচনা শুনে বুঝেছি তারা প্রবলভাবে উতসাহিত খুশী ,এই পরীক্ষায়  তারা। এরপর উন্নত জীব এমনকি মানুষের মস্তিষ্ক নকল করতে সক্ষম। শীঘ্রই এটা সম্ভবপর হবে। তখন একই চিন্তা ভাবনা আচার আচরণ সম্পন্ন বহু মানুষ সৃষ্টি সম্ভব,তৈরী হবে একাধিক নিঊটন,আইনস্টাইন,    রবীন্দ্রনাথ , শিল্পী, সাহিত্যিক,অভিনেতা, খেলোয়ার।দুর্ভাগ্য বশঃত আমার সংগৃহীত সব তথ্য দেশে ফেরার পর যখন আমি আমার মুল তথ্য সংগ্রাহক যন্ত্রে নথী ভুক্ত করে রাখতে যাই, সেই সময় বাড়িতে ব্জ্রপাত জনিত কারণে (ঐ সময় ব্জ্রনিরোধক যন্ত্রটি ক্ষতি গ্রস্থ ছিলো, আমার না জানা থাকায়) এই তথ্য সংগ্রহ ও চালান ব্যবস্থাটা ক্ষতি গ্রস্থ হয়।অন্য তথ্য যেগুলি আগে থেকে সাবধানে সঞ্চিত  ছিলো সেগুলি অক্ষত থাকে।কিন্তু এই তথ্য গুলি আমি বিশদে বিশ্লেষণ করতে পারিনি অপেক্ষায় আছি কবে ওই বিস্ময়কর আবিষ্কারের কথা সারা বিশ্ব -সমাজ জানতে পারবে। (ডাক্তার উকিল জেঠুর ডায়েরী থেকে প্রাপ্ত)

৪) বিস্ময়কর সৃষ্টি ক্ষুদ্রতম পৃথিবী


বিস্ময়কর স্মৃষ্টি ক্ষুদ্রতম পৃথিবী " তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় আমি যখন ঝাড়্গ্রামে ডাক্তার উকিলের সাধনা ক্ষেত্র উন্মেষে তাঁর সাথে দেখা করে ছিলাম,ওনার বহু বিস্ময়কর আবিষ্কারের নিদর্শণ আমি স্বচক্ষে দেখেছিলাম। ওনার ঘেরা আঙ্গিনার মধ্যে যে দুটি বড় গবেষণাগার ছিলো তার প্রমাণ আমি পেয়েছিলাম,কিন্তু বর্তমানে ঐ দুটি হল খালি পড়ে আছে। সার সার কাঁচের মতন স্বচ্ছ অথচ ধাতুর থেকেও শক্ত পদার্থে বানানো বহু খাঁচা।একটি গবেষণাগারে বেশী ভাগ  খাঁচা গুলি খুব ছোট ,১বর্গফুটের বেশী নয়।এমন প্রায় দুশোর অধিক খাঁচা পর পর সাজানো গবেষণাগারের তিন দিকের ঠিক দেওয়ালের পাশে,ঠিক লাইব্রেরীতে খোপ খোপ বই রাখার যে আলমারী বা শেলফ হয় তেমনি।দু,চারটি  বড় খাঁচা ঢোকার দেওয়ালে, কিন্তু সব খাঁচাই ফাঁকা,বোঝা যায় বেশ কয়েক বছর পরিত্যক্তবস্থায় পড়ে আছে। এই গবেষণাগার টির পাশেই অপর গবেষণাগারটিও যেটা অনেক বড় প্রায় ২০ কুড়ি বিঘা জমির উপর সেটাও ফাঁকা  ।মোটা মোটা স্টীলের ঘন ফ্রেম দিয়ে ঢাকা চারপাশ, এমনকি মাথার উপরের চালটিও ঐ রকম শক্ত পুরু ধাতব ফ্রেম দিয়ে ঢাকা ,চারপাশ পুরু কাঁচের মতন  স্বচ্ছ কিছু দিয়ে ঘেরা ভেতর থেকে।এই ঘরটি অত্যন্ত পুরু লোহারফ্রেমে ঢাকা। ভিতরে ঘরটি ১০-১২টি পার্টিশন দিয়ে আলাদা আলাদা করা।পার্টিশন গুলি শক্ত পুরু ধাতব চাদর দিয়ে করা।এই কক্ষটিও অনেক দিনের পরিত্যক্ত বেশ বোঝা যাচ্ছে।এক দিকের দেওয়ালে যেদিক দিয়ে আমরা ভেতরে ঢুকলাম সেদিকে  ঢোকার জায়গাটা ছেড়ে সারা দেওয়ালে চারটি বড় খাঁচা সারা দেওয়াল জুড়ে।

ডাক্তার উকিল জেঠুকে জিজ্ঞাসা করায় উনি বলেন ঐগবেষণাগারেই ছিলো তাঁর সবচেয়ে মুল্যবান সব সৃষ্টি,নিজের সামান্য ভুল আর অসাবধানতার ফলে আজ ঐ বিরল মহান সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে ফাঁকা খাঁচায় পরিনত হয়েছে।তাই কি ছিলো আমাকে চাক্ষুষ দেখাতে পারবেন না আর সৃষ্টি করার মতন সময় বা সামর্থ্য  নেই তাই তিনিএই ধ্বংসের জন্য প্রচণ্ড মর্মাহত। এর পর ডাক্তার জেঠু বলেন,এর পরই আমি আর গবেষণা বন্ধ করে দিয়েছি,নিজের অন্তিম ক্ষণের জন্য অপেক্ষা করছি ,বয়সতো  কম হোলোনা এই অশীতিপর বৃদ্ধের আরকি নতুন করে কিছু করার ইচ্ছা থাকে,এতো বড় আঘাত পাওয়ার পর?ডাক্তার উকিল জেঠু আমাকে বললেন,আমি তোমাকে  চাক্ষুষ দেখাতে না পারলেও এই গবেষণাগারে কি কি ছিলো তুমি অন্য একজন গবেষকের লেখা ডায়েরী থেকে জানতে পারবে। দুটি খণ্ডে উনি দুটি গবেষণাগারের বর্ণনা লিখেছিলেন।হতভাগ্য ঐ বিজ্ঞান সাধক গবেষক ডঃ পিটার স্মীথ আমার এখানে দিন পাঁচেকের জন্য এসেছিলেন,আমার খুব অন্তরঙ্গ স্নেহ ভাজন ছিলো।এখানে এসে ডায়েরীতে সব বিবরণ যে লিখে রাখত জানতাম না।আমার এখানে থাকাকালীন কলিকাতা বসু বিজ্ঞান মন্দিরে একটা সেমিনারে যাবার আমন্ত্রণ পায়,কথা ছিলো ওখান থেকে নিজের দেশ জার্মাণীতে ফিরে যাবে।এখান থেকে যাবার সময়  স্মীথ তার  সমস্ত কিছু  লাগেজ ব্যাগে ভরে নিয়ে  ছিলো।কিন্তু ঘরের ড্রেসীং টেবিলের ড্রয়ারের মধ্যে রাখা ডায়েরীটা সঙ্গে নিতে ভুলে যায় ।হতভাগ্য স্মীথ দেশে ফেরার সময় বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায়।ডায়েরীটা আমার কাছে থেকে যায়।এই ডায়েরীতে আমার এখানেরই সব কিছুর বর্ণনা ছিলো, অন্য কোন কিছু গুরুত্বপুর্ণ লেখা ছিলোনা,তাই ওটা আর ওর উত্তরাধিকারীর কাছে পাঠানোর তাগিদ ছিলোনা,আমি চাইনি এখানের কিছু তখন প্রকাশিত হোক।তোমাকে ঐ ডায়েরী দুটো দিলাম, দেখ যদি ওর লেখা বুঝে তুমি পরবর্তীকালে অনান্য লেখার সাথে এটাও প্রকাশ করতে পারো।

ডাক্তার উকিল জেঠুকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির সময় বহু বছর আগেই পেরিয়ে গেছে।আজ ঝাড়্গ্রামে ডাক্তার উকিল জেঠুর কর্মকাণ্ডের কোন নিদর্শণ ,অবশেষ আর নেই।হয়ত বহু বছর আগেই ডাক্তার উকিল জেঠুও এই পৃথিবী ত্যাগ করেছেন।আমার কাছে তাঁর ই দেওয়া উপহার স্বরুপ অমূল্য স্মৃতির ডায়েরীর কিছুপাতা।এমনই উপহার হিসাবে পাওয়া ডঃপিটার স্মিথের লেখা ডায়েরীর পাতা থেকে যেমন অনুবাদ করতে সক্ষম হয়েছি তার উল্লেখ করলাম।"আজ তিন দিন হোলো আমি ইণ্ডিয়াতে এসে ঝাড়্গ্রামে মিস্টার উকিলের বাংলোতে উঠেছি।আমি জানতাম মিস্টার উকিল যাঁকে বৈজ্ঞানিক গবেষক মহলে ডক্টর উকিল বলে জানে।উপেন্দ্র কিশোর লস্কর সংক্ষেপে উকিল বলেই সর্বত্র পরিচিত আর ডাক্তারি পড়াটা তিনি সম্পুর্ণ করে ছিলেন বলেই ডক্টর ,ফাইনাল পরীক্ষাটা দুর্ভাগ্য বশত দেওয়া হয়নি ওটা দিলে আর সব পরীক্ষার মতন প্রথমই হতেন।এই পরীক্ষা না দেওয়াটাই তাঁকে পেশায় ডাক্তার হওয়ার  থেকে বৈজ্ঞানিক মহান গবেষকে পরিনত করেছে। তাঁর বিস্ময়কর আবিষ্কারের বহু পরিচয় আমার ঘটেছে।তার বাংলো উন্মেষে ছড়িয়ে আছে তার উদ্ভাবনী ক্ষমতার নিদর্শণ।আজ যে অকল্পনীয় প্রতিভার পরিচয় পেলাম এটা বিশ্বে কোন বৈজ্ঞানিক কল্পনাতেও আনতে পারবেন না। এর বিন্দুমাত্র সৃষ্টির খবর দুনিয়াকে জানলে এক বিস্ফোরক সংবাদ হবে।সারা বিশ্বের লোক হাজির হবে এই উন্মেষে।

আমি মিস্টার উকিল কে কথা দিয়েছি যে এই সৃষ্টির খবর আমি কখনও কাউকে জানাবোনা। এই কথা দেওয়ার পরই আমি তাঁর এই বিস্ময়কর মহান আবিষ্কারের নিদর্শণ দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।আমি যা দেখেছি, জেনেছি, কিভাবে দেখা পেলাম আমার এই ডায়েরিতে লিখে রাখছি, এটা সম্পূর্ণ পৃথক অত্যন্ত গোপনীয়।আমি মিস্টার উকিল কে তার বাংলোর বাইরে প্রচীর ঘেরা  বাগানের মধ্যে যে দুটি বড় বড় ছাউনি দেওয়া ঘর আছে, সেখানে কি আছে ?জানার আগ্রহ প্রকাশ করলে  মিস্টার উকিল আমায় বলেন  যে ওখানে তাঁর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ বিস্ময়কর আবিষ্কারের নিদর্শণ রয়েছে,কিন্তু ওই নিদর্শণ সকলকে দেখানো যাবেনা,ঐ আবিষ্কারের কথা প্রকাশ করা যাবেনা। আমার একান্ত অনুরোধে মিস্টার উকিল তখন ই ঐ আবিষ্কারের নিদর্শণ আমাকে দেখাতে সন্মত হন, আমি যখন কথা দিলাম যে মিস্টার উকিল যবে বলবেন তবেই এই মহান কীর্ত্তির কথা প্রকাশ করা হবে,তার আগে আর কেউ জানবেনা,এটা গোপন থাকবে।

আজ সকাল ৯টা নাগাদ আমাকে ডেকে নিয়ে মিস্টার উকিল ঐ ঘেরা ঘর দুটির দিকে নিয়ে চললেন।নুড়ি বিছানো রাস্তা দিয়ে কিছুটা হেঁটে যাবার পর প্রথম ঘর যেটাকে উনি প্রথম গবেষণাগার বলে জানালেন সেখানে উপস্থিত হলাম।বড় বড় অনেক গুলি তালা লাগানো মজবুত ধাতুর(কোন বিশেষ ধাতু সংকর হবে অত্যন্ত কঠিন শক্তিশালী )গেট খুললেন।এরপর ঐ রকম ধাতুর পাত দিয়ে ঘেরা বড় ঘরটা দেখতে পেলাম। ওই ধাতুর ঘরের সামনে উপস্থিত হয়ে মিস্টার উকিল তাঁর কাঁধে ঝোলানো  ঝোলা থেকে একটাছোট রিমোট কন্ট্রোলার যন্ত্র বার করে সুইচ টিপতেই ধাতুর দেওয়ালের মাঝখানে একটা অংশে ধাতুর চাদর সরে গেলো।বোঝা গেলো এটা ঢোকার দরজা। ঐ দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম,কিন্তু সামনে আরো একটা স্বচ্ছ কাঁচের মতোন পদার্থে প্রস্তুত মোটা ভারী দরজা রয়েছে ওটাও রিমোট কন্ট্রোলারে খুলতে হোলো।

এবার একটা হলের মধ্যে ঢুকলাম আমি আর মিস্টার উকিল।আমরা হলে ঢোকার পরই পিছনের সমস্ত দরজা,গেট আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেলো।হলের মধ্যে ঢুকে বোঝাই যাচ্ছেনা এটা একটা চারপাশ ঘেরা কক্ষ।মনে হচ্ছে খোলামেলা ঘর, চারপাশ দিয়ে আলো বাতাস ঢুকছে।ঘরের মধ্যে কাঁচের চৌকোবর্গাকার ,আয়তাকার,১বর্গফুটের মতন আয়তন,বহু বাক্স অনেকটা ঠিক মাছের একোরিয়ামের মতন, দেওয়ালের দিকে লাইন করে আবার উপরে উপরে সাজানো,যেদিক দিয়ে  ঢুকলাম ঐ দিক ছাড়া  সেদিকে  ঢোকার জায়গাটা ছেড়ে সারা দেওয়ালে একটাই বড় খাঁচা সারা দেওয়াল জুড়ে। অপর তিন দিকের দেওয়ালের দিকে সাজানো এই বাক্স গুলো প্রথমে ঢুকে বুঝতে পারছিলাম না,ওই খাঁচা গুলোর মধ্যে কি রাখা আছে?মিস্টার উকিল কে জিজ্ঞাসা করতে উনি জানালেন-ধৈর্য্য ধর,সবই দেখতে ও বুঝতে পারবে।এবার আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি জিজ্ঞেস করলেন 'বনসাই' জানো?আমি উত্তর দিলাম " কেনো জানবো না?গাছপালার সমস্ত স্বাভাবিক আকার প্রকৃতি গুন বজায় রেখে তার হুবহু ক্ষুদ্র সংস্করণ বা  বামনাকার দেওয়া।অনেক বড় বড় গাছ যেমন বট,অশ্বত্থ,তেঁতুল,শিমুল,পলাশ,পাকুড় এই রকম বড় বড়গাছকে ছোট করে টবে বানানো।বড় গাছের মতন এসমস্ত গাছেও ফুল ফল ধরে,বটের ঝুরি নামে স্বাভাবিক অবস্থার সাথে কোনো ফারাক থাকে না শুধু আকারে বহু গুন ছোটো হয়।" মিস্টার উকিল বললেন ঠিক  বলেছ,আমার এই গবেষণগারে আমি বিশ্বের বর্তমান,আদিম,বিলুপ্ত সব কিছু, প্রাণী,উদ্ভিদের বনসাই তৈরী করে রেখেছি।সেই প্রাগৈতিহাসিক ডাইনোসরাস থেকে শুরু করে এখনকার জলজ অতিকায় নীল তিমি,এনাকোণ্ডা থেকে উদ্ভিদের ও সব দেখতে পাবে যেমন প্রাগৈতিহাসিক যুগে তাল জাতীয় গাছ যার পাতা নিরামিশাষী ডাইনোসরাসরা খেত।,এর থেকে শুরু করে বর্তমানে আফ্রিকার বাওবাও গাছ অবধি।আমার চোখ বিস্ফারিত হয়ে উঠল,বিশ্বাস ই করা সম্ভবপর হচ্ছিলনা, এটাও সম্ভব?তার পর ঘুরে ঘুরে দেখলাম। অবিশ্বাস্য ঐ কাঁচের একোরিয়ামের মধ্যে ডাইনোসরাসের মতন প্রজাতি,প্লীসিওরাস,ইকথিরোসাস,মেগালোস্রাস আর ইগুয়ানোডন,ব্রন্টোসরাস, স্টেগোসরাস, টেরোডাক্টাইল ,সব জীবন্ত কিন্তু অতি খর্বকায়,চলে ফিরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।আদিম মানুষ ছোট গাছের কোটরে,পাহারের মতো জায়গায় ছোট্ট গুহায়।ডোডো পাখী ও আছে।  ছোট্ট ছোট্ট শত খানেক খাঁচা ফাঁকা ওখানে এখনও  কিছু প্রজাতির প্রাণী বা উদ্ভিদের ধংসপ্রাপ্ত দেহাবশেষ পাওয়া যায়নি যে গুলির ক্লোন করে ছোট করে রাখা হবে ভবিষ্যতে।আমার সামনে প্রাগৈতিহাসিক যুগটা দৃশ্যমান হয়ে উঠল। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের লস্ট ওয়ার্ল্ড মনে পড়ে গেলো।মিস্টার উকিল জানালেন ঐ খাঁচাগুলির মধ্যে যে প্রাণী বা উদ্ভিদ রাখা হয়েছে সেই খাঁচার আবহাওয়া অই প্রাণী যখন পৃথিবীতে   বর্তমান ছিলো তখ্ন কার আবহাওয়া পরিবেশ বজায় রাখা হয়েছে। আমি স্বচক্ষে দেখেও বিশ্বাস করে উঠতে পারছিলামনা -একটা বিস্ময়াচ্ছন্ন ভাব আমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।প্রত্যেক টা একোরিয়ামের কাছে গিয়ে ভেতরের প্রাণী,উদ্ভিদ্গুলির আচার,আচরণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছি যা বইতে পড়েছি জেনেছি সবের সাথে হুবহু মিলে যাচ্ছে।ক্ষুদে টেরোডিকট্যালের পাখার ঝাপটা দেখলেই বোঝা যায় আসল এই বৃহত জীবটার পাখার ঝাপটা কতটা ভয়ঙ্কর ছিলো।প্লীসিওরাস লম্বা গলা নিরামিশাষী।ইগুয়ানোডন দেখতে ভয়ঙ্কর কিন্তু নিরামিশাষী। টিরানোসরাস ভয়ঙ্কর আক্রমনাত্মক।প্রাগৈতিহাসিক সব থেকে প্রাচীন মাংসাশী বাদুর শ্রেণীর প্রাণী'ডাইমকোউন'।খড়্গ দল বাঘ (Sabre-Toothed Tiger)এর, ম্যামথ এর বনসাই রুপ দেখলাম।বড় খাঁচায় সব একত্রে যেমন বাস্তব পৃথিবীতে ছিলো, আর ছোট্ট ছোট্ট  খাঁচায় তাদের বাচ্চাদের রাখা আছে আলাদা আলাদা করে।

৫) কম্পিউটারের স্মৃতি ভ্রংশ

ডাক্তার উকিল ও কম্পিউটারের স্মৃতি ভ্রংশ রহস্য  ঃ তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়               আমি আজ যে ঘটনাটি প্রকাশ করতে চলেছি এটা'ডাক্তার উকিল ও কম্পিউটারের স্মৃতিভ্রংশ রহস্য' হিসাবেই বর্ণনা করব।এই লেখার প্রকাশিত তত্ত্ব ও তথ্য যেহেতু ডাক্তার উকিল মহাশয়ের কাছ থেকে প্রাপ্ত তত্ত্ব ও তথ্য পঞ্জিকা থেকে নেওয়া , তাই এই লেখাটা ওনার নিজস্ব রচনার ভঙ্গিতেই প্রকাশ করলাম।ডাক্তার উকিলের দেওয়া শর্তানুযায়ী,সময়,স্থান,কাল পাত্র কোনটাই সঠিক নয়,মুল রচনার সাথে মিল নেই, কেবল মাত্র ঘটনা আর তার মুল তত্ত্ব ও ব্যাখাটি অবিকল রাখা হয়েছে।আনুমানিক  চল্লিশ বছরআগে ১৯৭৪ সালে ঝাড়্গ্রামে ডাক্তার উকিলের সাথে পরিচিত হই,তখন ই তার কাছ  থেকে পাওয়া  তথ্য পঞ্জিকা গুলি পাই। আমি লেখা শুরু করেছিলাম ১৯৮০ সালে কিন্তু আমার সরকারী কাজের চাপে আর পারিবারিক নানা ঘটনায় লেখাটা সম্পূর্ণ করতে পারিনি।অসম্পূর্ণ লেখা আর ডাক্তার জেঠুর দেওয়া লিখিত তথ্যের পাণ্ডুলিপিটি চাকুরীর স্থানান্তরিত হওয়ার সময় হারিয়ে যায়। ২০১০ সালে অক্টোবার মাসে চাকুরীর থেকে অবসর নেওয়ার পর পাণ্ডুলিপিটির অনুসন্ধান শুরু করি।সাম্প্রতিক ঐ অসম্পূর্ণ লেখা যার অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে,মূলপাণ্ডুলিপিটির অনেক টা অংশ হারিয়ে গেছে। তাই লেখাগুলির কিছু অংশ মূল লেখার থেকে আলাদা হয়ে মিশে গেছে আমার নিজস্ব রচনা,আমি স্মৃতি থেকে যেটুকু মনে করতে সক্ষম হয়েছি,অনেক ক্ষেত্রে হয়ত তাই আধুনিক কিছু তথ্য, জিনিস পত্রের নাম এসে গেছে,যে গুলো মূল রচনায় অন্য নামে অন্য ভাবে ব্যাখ্যা করা ছিলো।এই চল্লিশ বছরের ব্যবধানে বহু নতুন নতুন আবিষ্কার,যন্ত্রপাতি,সরঞ্জাম বাজারে এসেছে,ডাক্তার উকিলের সাথে আলাপের সময় কেউ এগুলি কল্পনাও করতে পারতনা।তখন ছিলো অজ্ঞাত,আজকে কিছু কিছু জিনিস ঘটনা বিস্ময়কর না মনে হতে পারে কিন্তু তখন ছিলো অকল্পনীয়।ডাক্তার উকিলের পাণ্ডুলিপি থেকে যেভাবে পেয়ে ছিলাম লেখাগুলো সেই ভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। লেখাটি  একটু নীরস তাত্ত্বিক মনে হতে পারে, এজন্য আমি দুঃখিত)

আমি আজকের ডাকে কলেজের সহ পাঠী পি,এল।দোশীর কাছ থেকে এই চিঠিটা পেলাম। দোশী ইলেক্ট্রণিক্স নিয়ে পড়াশুনা করেছে,খুউব ইন্টালিজেন্ট   অল্প দিনের মধ্যেই ও ভারত সরকারের ইলেক্ট্রণিক্স বিভাগে বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারিক হয়ে দিল্লীতেই আছে। ও প্রায় ই নানা বিষয়ে আমার পরামর্শ নিয়ে থাকে।ওরসাথে মোটামুটি পত্র মাধ্যমে যোগাযোগটাও আছে। আমি দুবার বিশেষ প্রয়োজনে দিল্লীতে গেছিলাম তখন ওর সাথে দেখা হয়েছিলো।ও আমাকে চাক্ষুষ দেখে প্রথমে  একটু চমকে গেছিলো কারন ও জানত আমি প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞান চর্চা নিয়ে গবেষণা করছি,কিন্তু আমি যে নিজের আচার আচরন ও বৈদিক ঋষিদের মতন নিয়ম নিষ্ঠা মেনে ঐ রকম পোষাক ব্যবহার করছি,ঐ রকম আচরণে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি এটা ওর জানা ছিলোনা।চিঠিতে দোশী যা লিখেছে তার মুল বক্তব্য অবিলম্বে আমাকে একবার দিল্লী যেতে হবে,ওখানে এক ভীষণ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে-শহরে সমস্ত কম্পিউটার আপনা আপনি অচল হয়ে পড়ছে,বিশেষ করে নামী নামী কোম্পানীর তৈরী যেগুলো। কোন কারন বোঝা যাচ্ছেনা আকস্মিক ভাবে মুল প্রসেসর গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।সমস্ত কোম্পানী থেকে এর অনুসন্ধান করেও কোন সুত্র বার করতে পারিনি,তাই আমার সাহায্য একান্ত ভাবে দরকার।অবিলম্বে এই সমস্যা থেকে উদ্ধার করতেই হবে।বিশেষ অনুরোধ করে আমাকে যাবার জন্য লিখেছে। আজ দোশীর সাথে দেখা করলাম।আমায় দেখে ভীষণ খুশী,ওর একান্ত বিশ্বাস যে আমি সমস্যার সমাধান করে ফেলবো। আমি দোশীকে সমস্যার একটা বিশদ বিবরণ দিতে বললাম।দোশী যা বললো  তাতে জানা যায় আজ মাস খানেক যাবৎ এই শহরে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কাছেভয়ঙ্কর সমস্যার উদ্ভব হয়েছে।অফিসে,কারখানায়,দোকানে , বাড়িতে যেখানে যেখানে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়,প্রায় সর্বত্র কম্পিউটার গুলি চলতে চলতে হঠাত মনিটরে সিগন্যাল চলে যাচ্ছে,আর ঠিক হচ্ছেনা।।সমস্ত নামী কোম্পানী থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানিয়েছে তারা কোন কারণ বুঝতে পারছেনা,কি জন্য মুল প্রসেসর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।কোম্পানীর বিশেষজ্ঞগন, যেখানে কম্পিউটারগুলি ব্যবহার করা হয়েছে সে সমস্ত জায়গাগুলিও পরীক্ষা আমি জানতে চাইলাম শহরে সমস্ত কম্পিউটার ই কি বিকল হয়ে আছে?দোশী জানালো স্কুলের কম্পিউটার গুলি মোটামুটি ঠিক আছে,আর কতকগুলি সরকারী অফিসের কম্পিউটার ঠিক আছে।আর আশ্চর্য্যের বিষয় লোকাল এসেমব্লেড কিছু কম্পিউটার ঠিকঠাক চলছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম লোকাল এসেমব্লেড কম্পিউটারগুলি কি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে ওগুলির কোন বিশেষত্ব আছে কিনা?উত্তরে মিঃদোশী জানালেন হ্যাঁ তাও দেখা হয়েছে,তেমন কোন বিশেষত্ব কিছুই নেই-বাজারে যে সমস্ত মাদার বোর্ড,প্রসেসর ও অনান্য এক্সেসরিজ কিনতে পাওয়া যায় সেগুলি দিয়েই তৈরী। এবার আমি জানতে চাইলাম যে সব কম্পিউটার গুলিতে কি ইন্টারনেট সংযোগ আছ?কোন বিশেষ সময়ে বা কোন বিশেষ প্রোগ্রাম চালানোর সময় কি এমন কাণ্ড ঘটছে?উত্তরে যা জানা গেলো-দুটি খটকা মনে দেখা দিলো-প্রথম টা হোলো কম্পিউটারগুলি হয় সকালের দিকে নয়ত রাতের দিকে কাজ করার সময় এমন ঘটনা ঘটেছে, দ্বিতীয় খটকা সব ক ম্পিউটারের ক্ষেত্রে মনিটর আর মুল  CPUটা পরীক্ষা করা হয়েছে।ইনপুট সিগন্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে, ইনপুট ডিভাইসগুলো থেকে। পাওয়ার ইনপুট ডিভাইস গুলো কেঊ পরীক্ষা করেনি।আমি মিঃ দোশীকে বললাম খারাপ হয়ে যাওয়া কম্পিউটারের পুরো সেটআপ আর লোকাল এসেমব্লেড কম্পিউটারের পুরো সেটআপ যেটা ভালো আছে আমি পরীক্ষা করে দেখতে চাই। মিঃ দোশী আমায় নিরিবিলিতে যাতে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পারি সেই ব্যবস্থা করে দিলেন।আমি প্রথমে  ঠিক করে ছিলাম মেন পাওয়ার লাইন,পাওয়ার ইনপুটটা চেক করে দেখব যে কোন অস্বাভাবিকত্ব আছে কিনা?যদি থাকে তাহলে লোকাল এসেমব্লেড কম্পিউটারগুলির উপর এর প্রভাব কি ? পরীক্ষায় একটা অদ্ভুত জিনিস পাওয়া গেলো।সকাল ৪টা থেকে ৯টা এবং সন্ধ্যা৭টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল মেন লাইনে খুউব অল্প সময়ের জন্য একটা কম্পন ধরা পড়ছে,যেটা খুউব অস্বাভাবিক আচরণএই কম্পনটা খারাপ হয়ে যাওয়া কম্পিউটারের UPS এর ইনপুট এবং আউটপুটে থাকছে,কিন্তু যে কম্পিউটারগুলি লোকাল এসেমব্লেড তার ক্ষেত্রে   UPS এর ইনপুট থাকলেও  আউটপুটে কোন অস্বাভাবিক কম্পন থাকছেনা।ব্যাস পাওয়া গেলো কম্পিউটার খারাপ হওয়ার মুলে কি কারন স্থল উৎস।

কিন্তু  কিভাবে কম্পনটা মেন ইলেক্ট্রিক্যাল পাওয়ার লাইনে আসছে? কোথা থেকে কিভাবে আসছে?এর পিছনে কোন ষড়যন্ত্র নেইতো?থাকলে তার কারন কি?আমি দোশী কে আমার পর্য্যবেক্ষণের ফলটা জানালাম।আর বললাম।এই কম্পনের উৎস বার করতে তার দপ্তরের পুর্ণ সহায়তা দরকার। পরীক্ষা  নিরীক্ষার জন্য কতকগুলি বিশেষ পরীক্ষার যন্ত্র দরকার।মিঃ দোশী আমার চাহিদা মতন সব যন্ত্রপাতি পাঠিয়ে দিলো।খুউব ভালো করে দিন রাত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে   পরীক্ষা করে দেখলাম।দেখতে পেলাম একটি অতি উচ্চ কম্পন থেকে অতি নিন্ম কম্পন(তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ) পর্য্যায় ক্রমে খুব অল্প সময়ের জন্য সকালের দিকে আর রাত্রের দিকে দুবার মেন ইলেকট্রিক্যাল লাইনে ধরা পড়ছে।এই কম্পন  সাধারণ স্পাইক,সার্জ প্রোটেকটারে আটকানো শক্ত বিশেষ ধরনের প্রোটেক্টটর দরকার।এর জন্য যে LCR প্রয়োজন তা বাজারে চলতি পাওয়া যাবেনা।এবার পরীক্ষা করলাম এসেমব্লেড কম্পিউটারগুলির মেন লাইন ইনপুট সকেটটা। সাধারণ ভাবে দেখলে অনান্য সকেটের মতন কিন্তু একটু লম্বায় বড়,মোটা শক্ত পোক্ত দেখতে।সকেট টা খুলে নিয়ে পরীক্ষা করতেই দেখা গেলো ঐ সকেটের মধ্যেই রয়েছে অতি ক্ষুদ্র বিশেষ LCR সাথে সুক্ষ্মএক্টিভ সার্কিট যা লাইনের ওই বিশেষ কম্পনকে আটকে দেয়।এবার আমার মনে একটা প্রশ্ন দেখা দিলো-এই  এসেমব্লেড কম্পিউটারে হঠাৎ এইLCR লাগানো সকেট কেন ব্যবহার করা হয়েছে?আরো চারটে  এসেমব্লেড কম্পিউটার যেগুলি খারাপ হয়নি পরীক্ষা করে দেখা গেলো-সব গুলি একটি ই সংস্থার তৈরী এবং ঐ কোম্পানী যে UPSকম্পিউটারের সাথে দেয় তার পাওয়ার আউটপুট সকেটেও বিশেষ এইLCR লাগানো যা এমনি দেখলে বোঝা যাবেনা।এই সংস্থাটি জানতো ইলেকট্রিকের মেন লাইনে ঐ অস্বাভাবিক তড়িত চুম্বকীয় তরঙ্গের উপস্থিতির কথা,কিন্তু কেন আর কি ভাবে জানলো? আমি  মিঃ দোশীকে এই কোম্পানীর বিগত তিন মাস ধরে কেমন কম্পিউটার বিক্রয় হচ্ছে তা জানাতে বললাম আর ছয়মাস আগের এদের কোন কম্পিউটার পরীক্ষা করতে চাইলাম । মিঃ দোশী আমার চাহিদা মতোন তথ্য জোগার করে দিলেন।দেখা যাচ্ছে,বিগত দুমাসে যেখানে ১০(দশ)টি কম্পিউটার বিক্রী  করেছে সেখানে এক মাসে বিক্রী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬২ তে এর মধ্যে বিগত ১৫ দিনেই ১৫২ টি।বুঝতে অসুবিধা হোলোনা যে এইসংস্থার কম্পিউটার যে বিপর্যয় এড়াতে সক্ষম এটা প্রচারিত হয়েছে।ছয় মাস আগের কম্পিউটারে পরীক্ষা করে দেখা গেলো  এইLCRপ্রতিরোধ ব্যবস্থা লাগানো হয়নি-এইLCRকম্পিউটারে পরবর্ত্তী কালে  লাগানো হয়েছে। এবং বিজ্ঞাপনে লেখা হচ্ছে এই  কম্পিউটার  সাম্প্রতিককম্পিউটার  বিপর্যয়তে কোন ক্ষতি হবেনা গ্যারান্টিযুক্ত। মিঃ দোশীকে বললাম এইসংস্থার কারখানার উপর বিশেষ গোপনে নজর রাখতে। আমার সন্দেহ  এই সংস্থাটি তাদের এসেমব্লেড কম্পিউটার বিক্রির জন্য নিশ্চয় এই দুরভিসন্ধিমুলক চক্রান্তের  আশ্রয় নিয়েছে। এইসংস্থাই কোন বিশেষ উপায়ে মেন ইলেকট্রিক পাওয়ার সাপ্লাই লাইনে পরিবর্তনশীল শক্তি শালী তড়িৎ চুম্বক তরঙ্গ কে মিশ্রিত করে ক্ষণিকের জন্য প্রতিদিন দুবার পাঠাচ্ছে-সময়টা সাধারণ কার্য্যকাল ১০টা থেকে ৬টা বাদ রেখে, কারণ এই সময়ে তড়িত লাইনে নানা রকম কাজ হয়,বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাই ঝুঁকি এড়াতে সকাল আর রাত্রি বেছে নেওয়া হয়েছে, আর এই জন্যই স্কুলের কম্পিউটার,অনেক অফিসের কম্পিউটার,এই বিপর্যয়ে আক্রান্ত হয়নি।আমার অন্য কাজের বিশেষ তাড়া থাকায় তিন দিন থেকেই ফিরে এলাম কোলকাতায়-সেখান থেকে ঝাড়্গ্রামের উন্মেষে।মিঃ দোশী কে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছিলাম কি করতে হবে।আমি ফিরে আসার সাত দিনের মধ্যে অশেষ ধন্যবাদ,কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মিঃ দোশীর পাঠানো  পত্র পেলাম, তাতে উনি জানিয়েছেন ঐ কোম্পানী ধরা পড়েছে তাদের হাই লো অটো ভেরিয়েবল ফ্রিকোয়েন্সী তড়িত চুম্বকীয় তরঙ্গ জেনারেটর,মডুলেটরযন্ত্রে যার সাহায্যে ইলেক ট্রিকের মুল ফ্রীকোয়েন্সীর সাথে এই মডুলেটেড ফ্রীকোয়েন্সীর তরঙ্গটা মেশানো হোতো আটক করা হয়েছে। ওইসংস্থার মালিক ভূষণ লাল কেজিওয়ালা সব স্বীকার করেছে।এখন আর কোন সমস্যা নেই-সব স্বাভাবিক হয়েছে। কম্পিউটারের স্মৃতিভ্রংশ আর ঘটছেনা। (প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে সামরিক বিভাগ,প্রশাসন ,বিভিন্ন এলাকায় সিগন্যাল জ্যামার ব্যবহার  করে নিরাপত্তার জন্য,এগুলিতে  মূলত রেডিও ফ্রীকোয়েন্সী, তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করা হয় )

No comments:

Post a Comment